মুসলিমদের দুর্বলতা আর উদাসিনতার সুযোগে হিন্দুত্ববাদীদের দুঃসাহস বেড়েই চলেছে। তারা জানে যতই অপরাধ করুক আইন আদালত তাদের পক্ষেই থাকে। ফলে তাদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না আবাল বৃদ্ধা বনিতা কেউই; সকল বয়সের মুসলিমরাই তাদের পৈশাচিক আচরণের শিকার হচ্ছেন।
এবার উত্তরপ্রদেশে এক হিন্দু যুবক দুই মুসলিম নাবালিকা কিশোরীকে বাড়ির পাশ থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এক মেয়ের নাম শিফা তার বয়স ৫ বছর। আরেক মেয়ের নাম সানিয়া তার বয়স ৯ বছর। ২৫ বছর বয়সী হিন্দুত্ববাদী কপিল কাশ্যপ প্রথমে তাদের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে বড় মেয়েটিকে ধর্ষণ করে খুন করে। আর ছোট মেয়েটিকে ধর্ষণ করে মারা গেছে মনে করে আখ ক্ষেতে ফেলে যায়।
এ মর্মান্তিক ঘটনাটি গত ১৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের মোদিনগর এলাকায় ঘটেছে।
জানা যায়, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেয়ে-শিশুরা তাদের বাড়ির বাইরে খেলছিল। তখন উগ্রবাদী হিন্দু কপিল কাশ্যপ এসে তাদেরকে পাশের দোকান থেকে মিষ্টি কিনে দেওয়ার কথা বলে সাইকেলে তুলে নেয়। দোকানে না গিয়ে সে তাদের নিয়ে একটি জঙ্গলে চলে যায়। সেখানেই বড় মেয়েটিকে ধর্ষণ করে খুন করে। অপর একজনকেও ধর্ষণের পর খুন করতে যাচ্ছিল, যখন নাবালিকাটি তার খপ্পর থেকে পালাতে গিয়ে অজ্ঞান হযে পড়ে।
এদিকে, মেয়েরা গভীর রাত হয়ে যাওয়ার পরও বাড়ি না আসায় তাদের খুঁজতে থাকে তাঁদের পরিবার। অনেক খোঁজাখুজি করেও তাদের না পেয়ে মুসলিম পরিবারটি হয়রান হয়ে যায়। আশেপাশেও বিষয়টি জানাজানি হয়।
অবশেষে সকলের খোঁজাখুজির পর গভীর রাতে ছয় বছর বয়সী শিফা মেয়েটিকে অজ্ঞান অবস্থায় আখ ক্ষেতে পাওয়া যায়। পরে তার জ্ঞান ফেরার পর সে পুরো ঘটনা পরিবারকে জানায় কিভাবে তাদের অপহরণ করা হল।
তার বিবরণ অনুযায়ী বড় মেয়ে সানিয়ার মরদেহ পরদিন শুক্রবার জঙ্গলের পাশের একটি খামার থেকে উদ্ধার করা হয়। এবং হিন্দুত্ববাদী কপিল কাশ্যপকে আটক করা হয়। প্রথমে সে অপরাধ স্বীকার করতে অস্বীকার করে। পরে সে স্বীকার করে যে, ৯ বছর বয়সী সানিয়াকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। এমন নির্মম ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া ছোট মেয়েটি এখনো স্বাভাবিক হতে পারছে না। সে এখনো শক ও ট্রমায় রয়েছে বলে জানা গেছে।
কাশ্যপকে যদিও আটক করা হয়েছে, কিন্তু দেখা যাবে কয়েকদিন পরেই হিন্দু হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। অপহরণ, ধর্ষণ ও খুনের কোন বিচারই হবে না। যেমনটা হয়নি ৮ বছর বয়সী শিশু আসিফার ক্ষেত্রে। তাকে বাবা-ছেলে আর মন্দিরের পুরোহিত মিলে অপহরণ করে, কয়েকদিন পর্যন্ত পালাক্রমে ধর্ষণ করে মাথা থেতলিয়ে খুন করেছিল। তাদেরকেও আটক করা হয়েছিল, কিন্তু কিছুদিন পরেই তাদের ছেড়ে দিয়েছে হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন।
এমনিভাবে সঠিক বিচার হয়নি বিলকিস বানুর গণধর্ষণকারী হিন্দুদের। গত ১৫ই আগস্ট গুজরাটের হিন্দুত্ববাদী সরকার প্রশাসন বিলকিস বানুর ধর্ষণকারীদের ক্ষমা ঘোষণা করেছে; অথচ তাদের অপরাধ প্রমাণিত ছিল। তবুও মুসলিম নারীকে ধর্ষণ করায় সেই সমস্ত ধর্ষকদেরকে ফুলের তোড়া দিয়ে সম্মান জানিয়েছে, মিষ্টি বিতরণ করেছে জঘন্য নরপিশাচ হিন্দুত্ববাদীরা। হয়ত কপিল কাশ্যবের ক্ষেত্রেও এমনটাই হবে। আর ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হতে থাকবে মুসলিমরা।
ফলে অন্যান্য হিন্দুদের মধ্যেও এমন ঘৃণ্য কাজ করার দুঃসাহস হচ্ছে। যদি সঠিক বিচার হতো, তাহলে এমন কাজ করার কথা মনেও ভাবতো না তারা। কিন্তু হিন্দুত্ববাদীরা এবং তাদের দোসরেরা কখনোই মুসলিমদের উপর হামলা-হত্যা কিংবা মুসলিম নারীদের অপহরণ বা গণধর্ষণের মতো ঘটনার বিচার করেনি বা করবে না- এটা স্পষ্ট। তবুও যদি মুসলিমরা এখনো সেই কথিত স্যেকুলার আইন-আদালতের উপরই ভরসা করে বসে থাকে, তাহলে সেটা হবে বিপদ দেখে গর্তে মুখ লুকিয়ে ‘বিপদ চলে গেছে’ ভাবার মতো বোকামি।
তাই মানব রচিত সিস্টেমের ভরসায় বসে না থেকে মুসলিমদেরকে নিজেদের নারী-কন্যা-শিশুদের জান-মাল-ইজ্জত-আব্রুর হেফাজতের লক্ষে নববী মানহাজ ও আদর্শে ফিরে আসতে এবং অনাগত ভবিষ্যতের অনিবার্য সংঘাত মকাবেলার প্রস্তুতি নিতে বলেছেন ইসলামি চিন্তাবীদ ও হক্কানি উলামায়ে কেরাম।
তথ্যসূত্র:
——–
1. UP: Minor Muslim girls aged 5 and 9 raped by 25-year-old, one murdered, another rescued
– https://tinyurl.com/523fjwzc
2. NewsClick : Bilkis Bano Case: 11 Convicts set Free by Gujarat Government Under its Remission Policy
– https://tinyurl.com/2p84kp5u
উইঘুর তো পুরোটাই নির্যাতনের কারাগার। তাদের ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া উচিত।