যিয়ারতের জন্য উন্মুক্ত হলো আমিরুল মু’মিনিন মোল্লা ওমরের কবর

আলী হাসনাত

1
1517

সাম্প্রতিক ইতিহাসের এক কিংবদন্তি মুসলিম নেতা হচ্ছেন ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের প্রয়াত আমিরুল মু’মিনিন মোল্লা মুহাম্মাদ ওমর মুজাহিদ রহিমাহুল্লাহ। ২০১৩ সালে রাব্বুল আলামীন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা’আলার ডাকে সাড়া দিয়ে নশ্বর পৃথিবীকে বিদায় জানান মহান এই আমির।

মৃত্যুর পর আফগানিস্তানের যাবুল প্রদেশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় তালিবান ও আফগানিস্তান জিহাদের জনক এই বীর মুজাহিদকে। নিরাপত্তা জনিত কারণে দীর্ঘ নয় বছর যাবৎ সর্বসাধারণের অগোচরে রাখা হয় তাঁর কবরটি।

আমিরুল মু’মিনিন মোল্লা ওমর রহিমাহুল্লাহ্’র কবর।

গত ৬ নভেম্বর এই মহান নেতার মাকবার সর্বসাধারণের যিয়ারতের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। ইমারাতে ইসলামিয়ার উচ্চপদস্থ নেতৃবৃন্দ ও মুজাহিদ কমান্ডারদের উপস্থিতিতে মাকবারটি উন্মুক্ত করা হয়।

আল-ইমারাহ এবং বাখতার নিউজ সূত্রে জানা যায়, সেদিন যাবুল প্রদেশের সাইয়োরি জেলার অন্তর্গত উমারযো গ্রামে আমিরুল মু’মিনীনের সমাধিস্থলে একত্রিত হন ইমারার উচ্চপদস্থ নেতৃবৃন্দ। তাঁদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোল্লা মুহাম্মাদ হাসান আখুন্দ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী মৌলভি মুহাম্মাদ ইয়াকুব মুজাহিদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খলিফা সিরাজউদ্দীন হাক্কানী এবং যাবুল প্রদেশের গভর্নর সুলাইমান আগা (হাফিযাহুমুল্লাহ)। তাঁদের সাথে আরো উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামের একাংশ এবং আমিরুল মু’মিনীন এর পরিবারের সদস্যবৃন্দ।

কবর যিয়ারতের সময় কান্নারত আমিরুল মু’মিনিনের ছেলে মোল্লা ইয়াকুব। তিনি বর্তমানে ইমারাতে ইসলামিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।

এসময় কুরআনুল কারীম থেকে তিলাওয়াত করা হয় এবং আমিরুল মু’মিনিনের ইসালে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ ও আলেমগণ দুআ করেন। তাঁরা জানান, শীঘ্রই সমাধিস্থলকে জনসাধারণের যিয়ারতের জন্য উপযোগী করে তোলা হবে। সেই সাথে যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে ইনশাআল্লাহ।

উল্লেখ্য যে, ২০০১ সালে আফগানিস্তানে ক্রুসেডার আমেরিকা আগ্রাসন শুরু করলে, মোল্লা মুহাম্মাদ ওমর মুজাহিদ (রহ) উমারযো গ্রামে অবস্থিত মোল্লা আব্দুল জাব্বার এর বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। বাড়িটির মাত্র দুই কিলোমিটার দূরেই ছিল আমেরিকান সেনাদের একটি বিশাল ঘাঁটি। অকুতোভয় এই নেতা জীবনের শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত এ বাড়িতেই অবস্থান করেন। এ বাড়িটিই ছিল তাঁর যাবতীয় জিহাদী কার্যক্রম পরিচালনা করার কমান্ড সেন্টার।

আমিরুল মু’মিনীন মোল্লা ওমর রহিমাহুল্লাহ তালিবান আন্দোলন শুরু করেছিলেন খালিস হৃদয়ে মহান আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করে। এতে না তিনি কোন হিকমাহ’র দোহাই দিয়েছেন, না কোন কুফরি তন্ত্র-মন্ত্রের সাথে আপোস করেছেন।

মুসলিম উম্মাহর জাগরণী অগ্রদূত এই বীর মুজাহিদের মৃত্যুর দীর্ঘ প্রায় এক দশক পর যখন তালিবান নেতৃবৃন্দ তাঁর সমাধি যিয়ারত করছেন, তখন তাঁর স্বপ্ন পরিপূর্ণ বাস্তবায়িত হয়েছে – আফগানিস্তান আজ স্বাধীন; সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শরীয়াহ শাসন; আফগানিস্তানের ঘরে ঘরে উড়ছে কালিমার পতাকা। আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন!

১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধআল-ফিরদাউস নিউজ বুলেটিন || নভেম্বর ১ম সপ্তাহ, ২০২২ঈসায়ী
পরবর্তী নিবন্ধচতুর্মুখী সংকটে আরাকানী মুসলিমগণ; হতাহত, গ্রেপ্তার বাড়ছে