পূর্ণ শরিয়াহ্ আইন জারি করলেন ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের সুপ্রিম লিডার আখুন্দজাদা (হাফি.)

ত্বহা আলী আদনান

9
2791

সম্প্রতি ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের আমিরুল মু’মিনীন শাইখুল হাদিস মৌলভি হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদাহ ও দেশটির প্রধান বিচারকগণ একটি গুরত্বপূর্ণ সভায় মিলিত হয়েছেন। যেখান থেকে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে যে, এখন থেকে আফগানিস্তানে পরিপূর্ণ শরিয়াহ্ আইন বাস্তবায়ন করা হবে। কেননা এটি আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার পক্ষ থেকে একটি ফরজ বিধান।

ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র মুহতারাম জাবিহুল্লাহ্ মুজাহিদ (হাফি.) গত ১৪ নভেম্বর সোমবার গভীর রাতে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে এই সিদ্ধান্তটি প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন।

ঘোষণায় বলা হয়েছে যে, সম্মানিত আমিরুল মু’মিনিন, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বিচারকদের গুরত্বপূর্ণ এক সভা শেষে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। যার ফলে এখন থেকে ইসলামি শরিয়াহ্ আইনের দিকগুলো ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানে সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করা হবে। যার মধ্যে রয়েছে প্রকাশ্যে কিসাস, রজম ও হদের মতো গুরত্বপূর্ণ বিধানগুলো।

এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার সময় আমিরুল মু’মিনিন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন যে, শরিয়াহ্ আইনের এই আদেশ প্রথমে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার বিধান এবং পরে আমার পক্ষ থেকে বাস্তবায়নের আদেশ। তাই এটি বাস্তবায়ন করা উপর ফরজ।

তাই চোর, অপহরনকারী, হত্যাকারী এবং রাষ্ট্রদ্রোহের মত ইসলাম-বিরোধী প্রতিটি মামলা গুরুত্বের সাথে পর্যবেক্ষণ করুন। যেসব মামলায় হদ, কিসাস ও রজমের শাস্তি প্রদানের শর্তগুলো পূর্ণ হবে, সেসব ক্ষেত্রে আপনাদেরকে অবশ্যই শরিয়াহ্ মোতাবেক হদ ও কিসাসের রায় প্রদান করতে হবে। আর এটিই শরিয়াহ্’র তাকাযা, যা পালন করতে আপনি বাধ্য।

আমিরুল মু’মিনীন এর এরূপ নির্দেশ মু’মিনদের অন্তরকে প্রশান্ত করেছে আলহামদুলিল্লাহ্‌। এই লক্ষ্যেই তো আফগানের হাজার হাজার মুসলিম গত ৪০ বছর ধরে জিহাদের ময়দানে অটল থেকে নিজেদের জীবন আল্লাহ্‌র রাস্তায় বিলেয়ে দিয়েছে অকাতরে।

পাশাপাশি এই ঘোষণা চিন্তার বলিরেখা ফেলে দিয়েছে ইসলাম-বিরোধী শক্তিগুলোর কপালে। জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ইমারাহকে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, (তথাকথিত) মানবাধিকার এবং নারী অধিকার বাস্তবায়ন না করা পর্যন্ত তাদেরকে কোনোভাবেই স্বীকৃতি দেয়া হবে না।

বিপরীতে আমিরুল মু’মিনীনও পরিষ্কারভাবেই জানিয়েছেন যে, যাইহোক না কেন, শরীয়াহ অনুযায়ী বিচারকার্য পরিচালনা, নারী অধিকার কিংবা সরকার পরিচালনা – কোনো কিছুই পশ্চিমা ফ্রেমওয়ার্কের আদলে বা শরীয়তের নিষিদ্ধ পন্থায় করা হবে না। কেননা জাতিসংঘ কর্তৃক সংজ্ঞায়িত অনেক মানবাধিকার, সরকার পরিচালনার ধরন, নারী অধিকার ও আইনি শাস্তি ইত্যাদি সরাসরি শরিয়তের সাথে সাংঘর্ষিক। তাই ইমারাতে ইসলামিয়া কখনই তাদের দেওয়া সীমারেখায় থেকে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে না। আমাদের লক্ষ্য ও আইন স্পষ্ট।

উল্লেখ্য যে, আফগানিস্তানে ইমারাতে ইসলামিয়া প্রশাসন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশটিতে ইসলামি শরিয়াহ্ আইন প্রয়োগ করা শুরু হয়। তবে রাজনৈতিক কারণে কিছু কিছু ক্ষেত্রে হুদুদ ও কিসাসের শাস্তি প্রয়োগে ধীর পন্থা অবলম্বন করে। এবিষয়ে তালিবান কর্মকর্তারা জানান যে, আমরা পরিস্থিতির কারণে শরিয়াহ্ আইনের শাস্তিগুলো বাস্তবায়ন করতে ধীর পন্থা অবলম্বন করেছি, তবে এই সময়টাতে আমরা নিজেদেরকে আইনি শর্তগুলো বাস্তবায়নের শর্তগুলো পূরণে প্রস্তুত করেছি। যা আমীরুল মুমিনিন এর স্পষ্ট বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়েছে।

9 মন্তব্যসমূহ

  1. Assalamu Alaikum
    ভাই ইমারতের ইসলামিয়ার কোন ChripWire.net এই সাইটে কোন একাউন্ট
    থাকলে দিবেন!মডারেটোর ভাইগণ!!!
    আর আমি ঐসাইটের এপস ইউজ করছি অরবোট ছাড়া করব নাকি অরবোটের অধিনে করব???

  2. কথিত আইএস আইএস এর গালে চপেটাঘাত,
    এরপরেও যদি তারা ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান এর কোন নিরপত্তা বিঘ্নিত কাজ করতে উদ্ধত হয়,তবে এর মোক্ষম জবাব তাদের দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ।
    আর দাওলার ভাইদের প্রতি অনুরোধ থাকলো অন্ধভক্তিতা ও শয়তানের মত অহংকার গোড়ামি ছেড়ে ঘরে (আল-কায়দায়) ফিরে আসুন

Leave a Reply to junaed প্রতিউত্তর বাতিল করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধআফগানিস্তানে মুসলিম শিশুহত্যার সংখ্যা নিয়ে লুকোচুরি এবং পশ্চিমা মিডিয়ার ‘ক্ষতিপূরণ’ স্তুতিপাঠ
পরবর্তী নিবন্ধভিডিও সংবাদ || সিরিয়া থেকে নতুন ভিডিও প্রকাশ করলো আনসার আল-ইসলাম