রোহিঙ্গা মুসলিমদের পদচারণায় কোলাহল আর উল্লাসে মুখরিত ছিল গোটা আরাকান প্রদেশ। দুনিয়ার সবার মতো সম্মানের সাথে বেঁচে থাকার অধিকার তাদেরও ছিলো। ছি্লো গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ আর বিস্তির্ণ ফসলি জমির মাঠ। কিন্তু হিংস্র বৌদ্ধদের চালানো নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে নিজ দেশ আরাকান ত্যাগ করতে বাধ্য হয় রোহিঙ্গারা।
জাতিগত নিপিড়ন চলা সত্বেও আপন ভূমি আরাকান ছেড়ে অন্যত্র যেতে চায়নি অনেক রোহিঙ্গা মুসলিম। সেখানে নিজ ভূমিতে রয়ে গিয়েছিল তাদের অনেকেই। বর্তমানে তাদের সাথে পশুর মতো আচরন করছে সন্ত্রাসী মিয়ানমার জান্তা বাহিনী আর বৌদ্ধ সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি; কেড়ে নিয়েছে তাদের সকল মানবিক অধিকার। এমনকি নিজ এলাকার বাহিরে হাটাচলার ওপরও রয়েছে বিধিনিষেধ। ঘুম, খুন ও নারীদের ধর্ষণ তো রয়েছেই।
আরাকানে ইতিহাসের বর্বরোচিত নির্যাতন চলা সত্বেও মিয়ানমারের সরকারের রাষ্ট্রীয় নিপিড়ন বন্ধে কোন উদ্যোগ নেয়নি আন্তর্জাতিক বিশ্ব বা জাতিসংঘ। যুগ যুগ ধরেই মিয়ানমারে মুসলিমরা নিপিড়নের শিকার হয়ে আসছে। যার মধ্যে ২০১৭ সালে লাখ লাখ মানুষ নিজ দেশ ছেড়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদ্ভাস্তু হয়েছে।
রোহিঙ্গারা আরাকান ছেড়ে পালানোর পাঁচ বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু আরাকানে ফিরে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি তাদের। এখন পর্যন্ত তারা নিজ দেশ উদ্বারে কোন উপায় বের করতে পারেনি, এবং এ ব্যাপারে কেউ তাদেরকে সাহায্যও করেনি! দালাল জাতিসংঘ তাদেরকে আরাকানে ফিরিয়ে নেয়ার গল্প শুনিয়ে পাঁচ বছর অতিবাহিত করেছে। কিন্তু বাস্তব কোন পদক্ষেপ নেয়নি! অথচ রাশিয়া উইক্রেনে আগ্রাসন শুরু করার সাথে সাতেই জাতিসংঘ সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছে। কিন্তু আরাকান, কাশ্মীর, ফিলিস্তিন ও পূর্ব-তুর্কিস্তানের ক্ষেত্রে বরাবরই সংস্থাটি ধোঁকাপূর্ণ আচরণ করে যাচ্ছে।
এ অবস্থায় কেউই যখন রোহিঙ্গাদের উদ্বারে এগিয়ে আসছেনা, তখন নিরাপদ জীবনের সন্ধানে আরাকান ছেড়ে পালানোকেই বেঁচে নিচ্ছেন রোহিঙ্গারা। তবে এ পথও তাদের জন্য মসৃণ নয়। একদিকে ঝুঁকিপূর্ণ সাগরপথ অন্যদিকে পালানোর সময় বেশিরভাগ মুসলিম বন্দী হচ্ছেন বর্বর মিয়নমার জান্তার হাতে। গত ২০ ডিসেম্বর ১১২ রোহিঙ্গা মুসলিমকে গ্রেফতার করে মিয়ানমার। এ পর্যন্ত কয়েক হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমকে গ্রেফতার করেছে সন্ত্রাসী মিয়ানমার জান্তা সরকার। গ্রেফতারকৃতদের সর্বনিম্ন দুই থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেয়া হচ্ছে। যা রোহিঙ্গাদের জীবনকে করে তুলছে আরও দুর্বিষহ।
মুসলিম হবার কারণে এভাবে আর কতকাল নির্যাতন সহ্য করতে হবে, তা তাদের কারোই জানা নেই। তবে এখনো রোহিঙ্গারা সেই আশায় বুক বেঁধে আছেন যে, তাদের মুসলিম ভাইয়েরা গাফিলতি ঝেড়ে ফেলে জেগে উঠেবেন, আর ময়দানে নেমে আসবেন মুহাম্মদ বিন কাসিম আর সুলাতান মাহমুদ গজনবীর ভুমিকায়। সিংস্র বৌদ্ধদের পাওনা বুঝিয়ে দিবেন কড়ায়-গণ্ডায়। তাদেরকে ফিরিয়ে নিবেন আপন ভূমি আরাকান রাজ্যে।
তথ্যসূত্র:
——–
1. More than 100 Rohingya arrested near an island in Myanmar’s Ayeyarwady region-
– https://tinyurl.com/yc42bm7a
আসসালামু আলাইকুম ভাই, আরাকান রোহিঙ্গা সেভোলেশন আর্মি (আরসা) এবং তাদের প্রধান আতাউল্লা আবু আম্মার জুনুনী সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই।