
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে (Niger/নিজের) সামরিক অভ্যূত্থানের পর দেশটিতে সক্রিয় অবস্থানে ফিরতে শুরু করেছে আল-কায়েদা। সম্প্রতি দেশটিতে আল-কায়েদা যোদ্ধাদের পরপর দুই অভিযানে অন্তত ৪১ সেনা নিহত এবং আরও ২০ সেনা আহত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রমতে, আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী জামা’আত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন (জেএনআইএম) গত ১৫ ও ১৭ আগস্ট নাইজারে ২টি সামরিক অপারেশন পরিচালনা করছে। এরমধ্যে প্রথম অভিযানটি চালানো হয় মালির সীমান্তবর্তী বনি এলাকায়। অভিযানটি সেনাবাহিনীর একটি কনভয় লক্ষ্য করে চালানো হয়েছিল, যাতে অন্তত ২৪ সৈন্য নিহত হয়েছে এবং আরও ডজনখানেক সৈন্য আহত হয়েছে।
জেএনআইএম যোদ্ধারা তাদের দ্বিতীয় অভিযানটি পরিচালনা করেন টিলাবেরি রাজ্যের তরোদির শহরে, গত ১৭ আগস্ট বিকালে। অতর্কিত এই অভিযানটি নাইজার সেনাবাহিনীর একটি সামরিক কনভয় লক্ষ্য করে চালানো হয়েছিল। এতে নাইজার সেনাবাহিনীর অন্তত ১৭ সৈন্য নিহত হয়েছে এবং আরও ২০ সৈন্য আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৬ সেনার অবস্থাই গুরুতর বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির সামরিক সরকার।
এদিকে ‘জেএনআইএম’ সংশ্লিষ্ট আয-যাল্লাকা মিডিয়া সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, মুজাহিদদের এই অভিযানে নাইজারের ১৭ সৈন্য নিহত হয়েছে। সেই সাথে মুজাহিদগণ ঘটনাস্থল থেকে ৪টি গাড়ি, ২২টি ক্লাশিনকোভ, ২টি পিস্তল, ১টি ড্রোন, ১টি দোশকা, ১টি বিকা এবং ১টি মর্টার সহ প্রচুর পরিমাণে গোলাবারুদ, মর্টার শেল এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম জব্দ করেছেন।
উল্লেখ্য যে, টিলাবেরি রাজ্যটি মালি, বুরকিনা ফাসো এবং নাইজারের মধ্যে ত্রি-সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত। রাজ্যটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসের প্রধান ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। গত মাসে ‘জেএনআইএম’ যোদ্ধারা বুরকিনা ফাসোতে আইএসের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করলে মাত্র দু’দিনের লড়াইয়ে দলটির শীর্ষ পর্যায়ের ৪ নেতাসহ ৪৬০ সদস্য নিহত হয়। এসময় আরও কয়েক শতাধিক সদস্য ভুল বুঝতে পেরে এই অঞ্চলে আল-কায়েদার কাছে আত্মসমর্পণ করে।
গোষ্ঠীর অবশিষ্ট সদস্যরা বুরকিনা ফাসো থেকে আল-কায়েদা যোদ্ধাদের তাড়া খেয়ে নাইজারে আশ্রয় নেয়। এখানেও আইএস সদস্যদের তাড়া করে আল-কায়েদার প্রতিরোধ যোদ্ধারা, সেই সাথে আইএসের শক্ত ঘাঁটি টিলাবেরিতে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করেন তাঁরা।
ফলশ্রুতিতে দেখা যাচ্ছে, গত ২৬শে জুলাই দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর টিলাবেরিতে যথেষ্ট সক্রিয় হয়ে উঠেছে আল-কায়েদা। স্থানীয় সূত্রমতে, অভ্যুত্থানের পর এ নিয়ে অঞ্চলটিতে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ছোট-বড় ৭টি অভিযান পরিচালনা করেছেন আল-কায়েদা তথা জেএনআইএম যোদ্ধারা।
নাইজারে ফ্রান্স এবং পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে নাইজারের সেনাবাহিনী। নাইজারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমন চালানো মানে ফ্রান্স আর পশ্চিমাদের পক্ষ নেওয়া। আর নাইজারের সেনাবাহিনী তো কাফির নয় বরং মুসলিম। তাই এখানে আল কায়েদার উচিত ছিলো নাইজারের সেনাবাহিনীর পক্ষ নেওয়া, ফ্রান্স এবং পশ্চিমাদের সৈন্যবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা অথবা চুপচাপ থাকা!!! নাইজারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা মানে ফ্রান্স আর পশ্চিমাদের পক্ষে কাজ করা। এমন কাজ আল কায়েদা কিভাবে করতে পারলো ???