সম্প্রতি পাকিস্তানের সেনা ও প্রশাসনের উপর ব্যাপক আকারে অভিযান চলাচ্ছে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান টিটিপি। গত ২৫ সেপ্টেম্বর মোতাবেক ১০ রবিউল আওয়াল তারিখে এক দিনেই দেশটির বিদেশি মদদপুষ্ট সেনাদের টার্গেট করে ৪ টি অভিযান পরিচালনা করেছেন টিটিপির প্রতিরোধ যোদ্ধারা। এতে পাকি সেনাবাহিনীর কমপক্ষে ১০ সেনা নিহত এবং আরও অন্তত ৮ জন আহত হয়েছে।
টিটিপি সংশ্লিষ্ট সূত্র মারফত জানা যায়, সেদিন সকাল ১০টা নাগাদ টিটিপি যোদ্ধারা তাদের প্রথম অভিযানটি পরিচালনা করেন কুররাম এজেন্সির পারা চিনার জেলায়। জেলার বিলায়া কোহাত এলাকায় তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের প্রতিরোধ যোদ্ধারা সেনাবাহিনীর একটি টহল দলকে লক্ষ্য করে বোমা বিস্ফোরণ ঘটান। এতে ঘটনাস্থলেই ৩ সেনা সদস্য নিহত হয় এবং অপর দুই জন আহত হয়।
একই দিন বিকেল ৪টার দিকে বান্নু প্রদেশে এবং উত্তর ওয়াজিরিস্তানের গুদিয়ুম আসিফা জেলায় সেনাবাহিনীর উপর পৃথক দু’টি স্নাইপার আক্রমণ চালায় টিটিপি। দলটির স্নাইপার যোদ্ধারা ঐ দুই এলাকায় সেনাবাহিনীর দুটি গাড়িতে আক্রমণ চালান। ফলশ্রুতিতে ২ সেনা সদস্য নিহত হয়। আর অপর কয়েকজন সেনাসদস্য গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আহতদের মধ্য থেকে আরও নিহতের সংবাদ আসার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
একই দিন বিকেলে আবার পেশোয়ার প্রদেশের বারা জেলায় এফসি বাহিনীর উপর তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের যোদ্ধারা অতর্কিত আক্রমণ পরিচালনা করেন। জেলার খাইবার এজেন্সির তিরাহ ময়দানে সংঘর্ষের সময় অন্তত ৩ জন এফসি সদস্য নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে, আর আহত হয়েছে আরও কয়েকজন।
এই অভিযানে টিটিপির দুই জন মুজাহিদ শহীদ হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে টিটিপি সূত্র। শাহাদাতপ্রাপ্ত দুইজন হলেন মুজাহিদ উবায়দা ও মুজাহিদ আদনান।
উত্তর ওয়াজিরিস্তানের গারহিউম জেলার নিশপেকা এলাকায়ও এদিন পাকি সেনাবাহিনীর একটি সামরিক কনভয়ে এম্বুশ করেন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের একদল মুজাহিদ। এতে দুই পাকি সেনা ঘটনাস্থলেই নিহত হয় এবং অপর কয়েকজন আহত হয়।
এ সবগুলো অভিযানের তথ্যই টিটিপির অফিসিয়াল সাইট উমার মিডিয়াতে সংক্ষিপ্ত বিবৃতির মাধদমে নিশ্চিত করেছেন দলটির মুখপাত্র মুহাম্মাদ খোরাসানী (হাফি.)।
এছাড়াও, দলটির সদস্যরা পেশোয়ারের সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের চর হয়ে কাজ করা শাহ্ নজর নামের এক যুবককে গ্রেপ্তারের পর তাকে ‘ভবিষ্যতে টিটিপির বিরুদ্ধে কোন কাজ না করা’র শর্তে ছেড়ে দেন। ঘটনার প্রেক্ষিতে জারি করা এক বার্তায় মুহাম্মাদ খুরাসানি এরকম তরুণদের পিতা-মাতাকে তাদের সন্তানদের প্রতি তীক্ষ্ণ নজর রাখতে পরামর্শ দেন, যেন তাদের সন্তানেরা নিরর্থক কোন কাজে মারা না পরে।