ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ৩৬৫ বর্গকিলোমিটারের গাজায় ২৩ লাখ বাসিন্দার বসবাস। ২০২৩ সালের অক্টোবরে শহরটিতে জায়োনিস্ট ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর শততম দিন ছিল গত ১৪ জানুয়ারি রবিবার। সাম্প্রতিক ইতিহাসে স্বল্প সময়ে এমন ধ্বংসাত্মক ও বর্বরোচিত গণহত্যা দেখেনি বিশ্ব, যা ইরাক ও সিরিয়া যুদ্ধের বর্বরতাকেও ছাড়িয়ে গেছে। ছোট্ট এই শহরটিতে শতদিনে ৬৫ হাজার টনেরও বেশি বোমা ছুড়েছে ইসরায়েল। এরমধ্যমে শহরটিতে গড়ে প্রতিদিন দুই শতাধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে।
ইউরো-মেড মনিটর গত ১৩ জানুয়ারী ঘোষণা করেছে যে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় মোট ১ লাখ ফিলিস্তিনি নিহত, নিখোঁজ বা আহত হয়েছেন।
ইউরো-মেড মনিটরের অনুমান অনুসারে, ১৩ জানুয়ারী ২০২৪ পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে মোট ৩১,৪৯৭ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন। এছাড়াও শত শত মৃতদেহ উদ্ধার করা যায়নি, বিশেষ করে যেসব এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী স্থল অভিযান চালাচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত পরিসংখ্যান অনুসারে, মৃতের সংখ্যা ২৪ হাজার। আর নিখোঁজ রয়েছেন প্রায় ৮ হাজারেও বেশি মানুষ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বিমান ও আর্টিলারি হামলায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের মধ্যে ২৮ হাজার ৯৫১ (৯২ শতাংশ) বেসামরিক নাগরিক। এর মধ্যে ১২ হাজার ৩৪৫ জন শিশু, ৬ হাজার ৪৭১ জন নারী, ২৯৫ জন চিকিৎসাকর্মী, ৪১ জন বেসামরিক প্রতিরক্ষাকর্মী (উদ্ধারকর্মী) এবং ১১৩ জন সাংবাদিক রয়েছেন।
এছাড়াও বর্বরতার সমস্ত সীমা ছাড়িয়ে যাওয়া জায়োনিস্টদের এই আগ্রাসনে আহত হয়েছেন ৬১ হাজার ৭৯ জন, যাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর। আর বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১৯ লাখ বাসিন্দা, যা গাজার মোট জনসংখ্যার ৮৫ শতাংশ।
ইউরো-মেড মনিটর অনুসারে, জায়োনিস্ট বাহিনীর বোমার আঘাতে গাজার ৬৯,৭০০টি বাড়ি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে এবং ১৮৭,৩০০টি বাড়ি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জায়োনিস্ট বাহিনীর এই আগ্রাসনের হাত থেকে বাদ যায়নি মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল এমনকি আশ্রয় শিবিরগুলোও। ফলে জায়োনিস্ট বাহিনীর চলমান হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে ৩৯০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ১৬৭১টি শিল্প, ৩৫৯টি আশ্রয় কেন্দ্র, ৩০টি হাসপাতাল, ৫৯টি ক্লিনিক, ২০৩টি স্বাস্থ্য-কেন্দ্র ও প্রতিষ্ঠান, ১২১টি অ্যাম্বুলেন্স সহ ১৮৩টি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের গাড়ি, ৩৮৮টি মসজিদ, ৩টি গির্জা, ১৭০টি প্রেস অফিস।