সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিশুতে কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টনীতে থাকা গুরত্বপূর্ণ সরকারি হোটেল “এসওয়াইএল”। গত ১৪ মার্চ রাতে গুরুত্বপূর্ণ এই হোটেলটি অবরোধ করেন প্রতিরোধ বাহিনী হারাকাতুশ শাবাব মুজাহিদিন। হোটেলটিতে টানা ১৭ ঘন্টা শাবাবের অবরোধ ও তীব্র আক্রমণে অন্তত ৮১ জন সরকারি কর্মকর্তা ও শত্রু সেনা হতাহত হয়।
শাহাদাহ এজেন্সি ও স্থানীয় সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, হারাকাতুশ শাবাব মুজাহিদিন গত ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার রাত ৯:৪৮ মিনিটের সময় হোটেল এসওয়াইএলে তাদের অভিযানটি শুরু করেন। ২টি গাড়িতে করে এই অভিযানে অংশ নেন হারাকাতুশ শাবাবের “মুহাম্মদ বিন মাসলামা” ব্যাটালিয়নের ৭ জন মুজাহিদ, যাদের মধ্য থেকে একজন প্রথমে একটি নতুন টয়োটা গাড়িবোমা দ্বারা ইস্তেশহাদী হামলা চালান।
উক্ত মুজাহিদের সফল ইস্তেশহাদী হামলার পর অন্য ইনগিমাসী মুজাহিদগণ হোটেলে ঢুকে পড়েন এবং এর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে হোটেলটিতে অভিযান চালাতে শুরু করেন। এই অভিযান পরদিন ১৫ মার্চ শুক্রবার বিকাল ৩:০০ পর্যন্ত টানা ১৭ ঘন্টার বেশি সময় ধরে চলমান থাকে।
দীর্ঘ এই অবরোধের মাঝে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখে বিবরণ জানাতে থাকেন অভিযানে অংশগ্রহণকারী মুজাহিদগণ। এই তথ্যের ভিত্তিতে হারাকাতুশ শাবাবের মিডিয়া বিভাগ থেকে ১৩ বার হামলার আপডেট জানানো হয়। সেই সাথে অভিযানে অংশগ্রহণকারী মুজাহিদদের একাধিক লাইভ অডিও আল-ফুরকান রেডিও ও আল-কাতাইব মিডিয়া থেকে সম্প্রচার করা হয়। এসকল লাইভ অডিওতে মুজাহিদগণ জানান, তাঁরা শত্রু বাহিনীর দুই ডজনেরও বেশি সামরিক অপারেশন ব্যর্থ করেছেন।
সূত্রমতে, শাবাব মুজাহিদিন হোটেলটিতে এমন এক সময় অভিযান শুরু করেছিলেন, যখন সেখানে মোগাদিশু সরকারের একাধিক এমপি, সামরিক অফিসার ও মিলিশিয়া কমান্ডার বৈঠক করতে একত্রিত হয়েছিল। শাবাব মুজাহিদিনের দীর্ঘ এই অবরোধের ফলে বৈঠকের জন্য একত্রিত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৩১ জন কর্মকর্তা ও সেনা সদস্য নিহত এবং আরও ৫০ এরও বেশি কর্মকর্তা ও সেনা সদস্য আহত হয়। হতাহতদের মধ্যে রয়েছে ৮ জন এমপি, প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র, তুরস্কের প্রশিক্ষিত হারামকাদ বাহিনীর প্রধান কমান্ডার, বানাদির অঞ্চলিক প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা ও উচ্চপদস্থ অনেক সামরিক কর্মকর্তা।
জানা যায়, মুজাহিদিন তথা ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অবরোধের শিকার এসওয়াইএল হোটেলটি মোগাদিশুর সবচেয়ে কড়া নিরাপত্তা বেষ্টিত একটি সামরিক হোটেল ছিলো। হোটেলটি সোমালি রাষ্ট্রপতির প্রাসাদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং প্রেসিডেন্সি ও সংসদ ভবনের ৬০০ মিটারের মধ্যে অবস্থিত ছিলো। এছাড়াও আবাসিক এই এলাকটি ব্যবহৃত হতো মোগাদিশুর জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের প্রাথমিক বাসস্থান ও সদর দপ্তর হিসাবে। একারণে এলাকাটি ঘিরে রয়েছে ৬টি চেকপয়েন্ট, যেগুলোর নিয়ন্ত্রণে ছিলো রাষ্ট্রপতির স্পেশাল প্রাসাদ গার্ড এবং গোয়েন্দা বাহিনী। আর সরকারি পরিচয়পত্র ছাড়া এসব চেকপয়েন্ট হয়ে বেসামরিক যানবাহনগুলো উক্ত এলাকায় প্রবেশে ছিলো কড়া নিষেধাজ্ঞা।