শত বছরের পুরনো ঐতিহাসিক মসজিদের মাঝে মন্দির থাকার অভিযোগে পিটিশন দায়ের; তিন ঘন্টার মাঝেই জরিপের রায় দিলো আদালত

0
49

উত্তর প্রদেশের সাম্বাল জেলা আদালত হিন্দুদের মন্দিরের উপর ঐতিহাসিক শাহী জামে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে কী না এই বিষয়ে জরিপ করার আদেশ দিয়েছে।

গত মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এই জরিপ করা হয়। হিন্দুদের হরিহর মন্দিরের উপর উত্তর প্রদেশের ঐতিহাসিক দিল্লি জামা মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে মসজিদের বিরুদ্ধে একটি পিটিশন দায়ের করে বিষ্ণু শঙ্কর নামক এক হিন্দু আইনজীবী।

ষোল শতাব্দীতে প্রথম মুঘল সম্রাটে বাবারের নির্দেশে এই ঐতিহাসিক মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। সাম্বাল জেলার অফিশিয়াল ওয়েব সাইটে মসজিদকে ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

মসজিদের মাঝে কথিত এই জরিপ ও পুলিশের হস্তক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেছেন স্থানীয় মুসলিমরা। পরে স্থানীয় এমপির সহায়তায় জরিপ পরিচালনা করে। আগামী ২৯ নভেম্বর প্রাপ্ত জরিপ আদালতে পেশ করা হবে।

উল্লেখ্য, হিন্দু আইনজীবীর করা ওই পিটিশনে দাবী করা হয় মসজিদের ওই হিন্দুদের হরিহর মন্দির অবস্থিত ছিল। তাদের দাবী পরবর্তীতে ১৫২৯ সালে মন্দিরটিকে মসজিদের রূপান্তরিত করা হয়।

মসজিদ কমিটির পক্ষে আইনজীবী জাফর আলী খান স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, ‘জরিপ-কালীন সময়ে প্রশ্ন তোলার মতো কোনও বস্তুই পাওয়া যায়নি। এমনকি সন্দেহ সৃষ্টি করার মতো কোনও আলামতও পাওয়া যায়নি। এই জরিপের মাধ্যমে বিষয়টি আরও পরিষ্কার যে, শাহী জামা মসজিদ শুধুই একটি মসজিদ কখনোই কোনও মন্দির ছিলো না।’

ওই মুসলিম আইনজীবী আরও জানান, ‘কোনও প্রকার পূর্বঘোষিত নোটিশ ছাড়াই এই জরিপের আদেশ দেয় আদালত। এমনকি আমাদের অভিযোগ দায়ের করারও সুযোগ দেয়নি।’

অল ইন্ডিয়া মজলিসে ইত্তেহাদুল মুসলিমিন এর প্রেসিডেন্ট আসাদ উদ্দিন ওয়াইসি গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের রায়ের ফলে উগ্রবাদী হিন্দুত্ববাদীরা পুরো ভারত জুড়ে মুসলিম স্থাপনাগুলোতে হামলার দুঃসাহসী দেখাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘হিন্দু আবেদনের করার তিন ঘণ্টার মধ্যেই দেওয়ানী আদালত মন্দির ভেঙে মসজিদ তৈরি করা হয়েছে কী না খতিয়ে দেখার জন্য প্রাথমিক জরিপের নির্দেশ দেয়। একই তারা দিনে প্রাথমিক জরিপও করে ফেলেছে। ঠিক একইভাবে মুসলিমদের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও আদালতের নির্দেশের এক ঘণ্টা পর বাবরি মসজিদের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরণের গতি সাধারণ কোনও মামলায় দেখা যায় না। যদি আদালত নিয়মিত এই ধরণের রায় দিতে থাকে তাহলে ধর্মীয় উপসানালয় আইন মাত্র মৃত চিঠি মাত্র। এই আইন এই ধরণের মামলা কোর্ট পর্যন্ত যাতে না পৌছায় সেই তৈরি করা হয়েছিল। শতবছরের পুরনো একটি মসজিদকে উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে সাম্প্রদায়িক লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে। আদালতকে অবশ্যই শুরুতেই এই সমস্যার করতে হবে।’


তথ্যসূত্রঃ
1.Sambhal Court Orders Survey Of “Jama Masjid” On The Same Day A Petition is Filed, Alleging It To Be “Hari Har Mandir
– https://tinyurl.com/3max2ejx

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাঞ্জশির প্রদেশে ১০০ হেক্টরের অধিক জমিতে বনায়ন করেছে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ
পরবর্তী নিবন্ধব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির দুপক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, আহত অন্তত ৫০