ভারতের উত্তরপ্রদেশে মুঘল আমলের সামভাল শাহী জামে মসজিদকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। মসজিদটি যেখানে নির্মিত, সেখানে আগে মন্দির ছিল- এমনই ভ্রান্ত দাবি করে আদালতের দারস্থ হয়েছিল কট্টর হিন্দুত্ববাদী বেশ কয়েকজন ব্যক্তি। এরপর হিন্দুত্ববাদী আদালত তাদের পিটিশনের ভিত্তিতে সেখানে জরিপ চালানোর নির্দেশ দেয়।
মসজিদ কর্তৃপক্ষ ও সার্ভের বিরোধীদের বক্তব্য, ভারতের ধর্মীয় উপাসনালয় আইন ১৯৯১ অনুসারে দেশের স্বাধীনতার সময় কোনো মন্দির, মসজিদ বা গির্জার চরিত্র যা ছিল তা বদলানো যায় না – সুতরাং সম্ভলের জামে মসজিদেও এই ধরনের হস্তক্ষেপ সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়। তাছাড়া মসজিদে এভাবে ‘সমীক্ষা’ চালানো হলে তা এলাকায় অযথা উত্তেজনা ছড়াবে বলেও তারা যুক্তি দিচ্ছিলেন।
এমন প্রেক্ষাপটে ২৪ নভেম্বর, রবিবার সকালে মসজিদে জরিপ চালাতে যায় একটি দল। পরে তাদের জরিপ চালাতে বাধা দেন সেখানকার মুসল্লিরা। এ সময় গুলি চালিয়ে নাঈম, বিলাল এবং নোমান নামের তিন মুসলিমকে হত্যা করে পুলিশ।
পুলিশ ব্যাপক শক্তি প্রয়োগের ফলে সেখানে তিন মুসলিমের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া পুলিশের সুপারিনটেনডেন্টের গানারসহ ৩০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে মোরাদাবাদ ডিভিশনাল কমিশনার অঞ্জনেয়া কুমার সিং।
সমালোচকরা বলেছেন, মূলত উত্তেজনা তৈরি করতেই মসজিদটিতে জরিপ চালানোর মতো নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ ছাড়া এর মাধ্যমে ভারতের উপাসনা আইন ১৯৯১ ভঙ্গ করা হয়েছে। এ আইনে ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর পবিত্রতা রক্ষার কথা বলা হয়েছে।
তিন মুসলিমকে হত্যার পাশাপাশি নারীসহ আরও অন্তত ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রায় ৫০ জন আহত ও তিনজকে হত্যার পরও মসজিদটিতে জরিপ চালিয়েছে জরিপকারী দল।
স্থানীয় রাজনীতিবিদদের মতে, নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে সেখানে উত্তেজনা তৈরি করেছে। তারা মূলত সেখানে রাজনৈতিক ফায়দা আদায় করে নিতে এ কাজ করেছে।
তথ্যসূত্র:
1. 3 Dead, Over 30 Cops Injured: Violence In UP’s Sambhal Over Mosque Survey
– https://tinyurl.com/3fdw2ebj