
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, তাদের কর্মীরা ১৩ মার্চ, বৃহস্পতিবার আল-শিফা হাসপাতালের চত্বরে থেকে ৪৮টি লাশ উত্তোলন করেছেন। এক সময় গাজার বৃহত্তম চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত এই হাসপাতাল বর্তমানে যুদ্ধে ইহুদিবাদী দখলদার ইসরায়েলের একাধিক হামলার ফলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
সংস্থাটি এর আগেও একই ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, যাতে লাশগুলো শনাক্ত করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া যায় অথবা তা সম্ভব না হলে যথাযথভাবে অন্যত্র দাফন করা যায়।
সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসসাল এএফপিকে বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে শনাক্ত হওয়ার পর ৩৮টি মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে, যা পরে অন্য কবরস্থানে পুনরায় দাফন করা হবে। অন্য ১০টি লাশ শনাক্ত করার জন্য সেগুলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ফরেনসিক বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
বাসসাল আরও জানান, হাসপাতাল কমপ্লেক্সের ভেতরে এখনো প্রায় ১৬০টি লাশ রয়ে গেছে এবং উত্তোলন প্রক্রিয়া আরও কয়েক দিন ধরে চলবে। এএফপির ধারণ করা ফুটেজে দেখা গেছে, উদ্ধারকর্মীরা হাসপাতালের চত্বরের বিভিন্ন অংশ খুঁড়ছেন এবং সাদা ব্যাগে রাখা মানুষের দেহাবশেষ বের করছেন, যা পরে কম্বল দিয়ে মুড়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
গাজার বাসিন্দা মোহাম্মদ আবু আসি তার ভাইয়ের মরদেহ শনাক্ত করে গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি যেন আবারও যুদ্ধের অভিজ্ঞতা অনুভব করার মতো। আমার ভাইয়ের মরদেহ খুঁজে পাওয়া মানে যেন আজই তাকে দাফন করা হচ্ছে—ব্যথা ও ক্ষত নতুন করে জেগে উঠছে।’
সুহা আল-শরিফ নামের আরেক গাজাবাসী তার ছেলের মরদেহ খুঁজতে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি জানি আমার ছেলে কী পরে ছিল। এ কারণেই আমি এসেছি। আল্লাহ চাইলে আমি তাকে খুঁজে পাব। আমি তাকে খুঁজে পেতে চাই। আমি একজন মা—আমি ক্লান্ত, জানি না আমার ছেলে কোথায়।’
এর আগেও গাজার স্বাস্থ্যকর্মীরা আল-শিফা হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছিলেন। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজার হাসপাতাল, বিশেষ করে আল-শিফা ইসরায়েলি বাহিনীর একাধিক হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। গত বছর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় হাসপাতালের ভেতরে ও আশপাশে গণকবরের সন্ধান পাওয়া সংক্রান্ত প্রতিবেদনের পর ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছিল।
তথ্যসূত্র:
1. Gaza rescuers exhume dozens of bodies from Al-Shifa Hospital
– https://tinyurl.com/4ksrywsz
2.48 bodies recovered from hospital in Gaza City: civil defense
– https://tinyurl.com/34zr5ptw