প্রত্যাবর্তিত শরণার্থীদের সহায়তা জোরদার করতে ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন তালিবানের একাধিক মন্ত্রী

0
84

পাকিস্তান সরকারের জোরপূর্বক নির্বাসনে আফগান শরণার্থীগণ ঝাঁকে ঝাঁকে স্বদেশে ফেরত আসছেন। তবে উষ্ণ অভ্যর্থনা ও সার্বিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে শরণার্থীদের গ্রহণ করে নিচ্ছেন ইমারতে ইসলামিয়া সরকার। নানগারহার প্রদেশের তুরখামে অবস্থিত ওমারি ক্যাম্পে অসংখ্য শরণার্থী বর্তমানে অস্থায়ীভাবে অবস্থান করছেন।

গত ১০ এপ্রিল তুরখামের ওমারি ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন ইমারতে ইসলামিয়ার প্রশাসনিক উপপ্রধানমন্ত্রী মৌলভী আব্দুস সালাম হানাফি হাফিযাহুল্লাহ ও তার নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নানগারহার প্রদেশের গভর্নর মোল্লা মুহাম্মদ নাঈম আখুন্দ হাফিযাহুল্লাহ, যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মৌলভী নাজিবুল্লাহ হায়াত হাক্কানি হাফিযাহুল্লাহ এবং একাধিক উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাগণ।

পরিদর্শনে প্রত্যাবর্তিত শরণার্থীদের অবস্থা ও বিভিন্ন পরিষেবাগুলো মূল্যায়ন করেছেন উক্ত প্রতিনিধি দল। ফেরত আসা শরণার্থীদের সকল ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের দৃঢ় আশ্বাস ব্যক্ত করেছেন মৌলভী আব্দুস সালাম হাফিযাহুল্লাহ।


এছাড়া ১১ই এপ্রিল ওমারি ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন ইমারতে ইসলামিয়ার জ্বালানি ও পানি সম্পদ মন্ত্রী মোল্লা আব্দুল লতিফ মনসুর হাফিযাহুল্লাহ।

ক্যাম্পে মন্ত্রী আব্দুল লতিফ হাফিযাহুল্লাহ শরণার্থীদের উদ্বেগ ও অভিযোগসমূহ মনোযোগ সহকারে শুনেছেন। তিনি শরণার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেন, তাদের সমস্যাগুলো মোকাবেলা করতে ইতোমধ্যেই একটি নিবেদিতপ্রাণ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পাশাপাশি তিনি স্থানীয় ও নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষকে শরণার্থীদের সাথে সহানুভূতি প্রদর্শনের নির্দেশ দেন, তারা যে অবর্ণনীয় ক্ষতি ও কষ্ট সহ্য করেছেন তা বিবেচনায় রাখতে বলেন। এছাড়া তিনি স্থানীয় কমিটি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সহযোগী সংস্থার কার্যক্রমসমূহ মূল্যায়ন করেছেন।


১১ই এপ্রিল শরণার্থীদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে তুরখাম পরিদর্শন করেছেন ইমারতে ইসলামিয়ার জনস্বাস্থ্য বিষয়ক উপমন্ত্রী মৌলভী আব্দুল ওয়ালি হাক্কানি হাফিযাহুল্লাহ। উপমন্ত্রী ও তার নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলের সদস্যগণ জরুরি হাসপাতাল ও ক্যাম্পে অবস্থিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর বিভিন্ন বিভাগ পরিদর্শন করেছেন।

স্বাস্থ্যসেবা উন্নত ও সম্প্রসারণের জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করেছেন উপমন্ত্রী হাক্কানি হাফিযাহুল্লাহ। এ সময় তিনি শরণার্থীদের জন্য সময়োপযোগী ও দক্ষ চিকিৎসা সরবরাহের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, তুরখামে বর্তমানে ৯টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে এবং ২০ শয্যাবিশিষ্ট একটি হাসপাতাল চালু রয়েছে। এছাড়া জরুরি পরিবহনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১৫টি অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, আফগান শরণার্থীদেরকে পাকিস্তান ত্যাগ করতে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল পাক প্রশাসন। তালিবান সরকারের অনুরোধ সত্ত্বেও এ সময়সীমা আর বাড়ানো হবে না, বরং শরণার্থীদের ক্রমেই বহিষ্কার করা হবে বলে স্পষ্ট জানিয়েছে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র উপমন্ত্রী তালাল চৌধুরী। সূত্রমতে, চলতি বছরে প্রায় ৩০ লক্ষ আফগান শরণার্থীকে নির্বাসনের পরিকল্পনা করছে পাকিস্তান সরকার।

১ এপ্রিল থেকে বিগত কয়েক দিনে এখন পর্যন্ত ১১ হাজারের অধিক শরণার্থী আফগানিস্তানে ফিরে এসেছেন। অভিযোগ উঠেছে শরণার্থীদের সম্পদ ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রাদি কেড়ে নেয়া হচ্ছে, তাদেরকে শূন্য অবস্থায় পাকিস্তান ত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। পাকিস্তানের এমন দুর্ব্যবহারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তালিবান প্রশাসন।


তথ্যসূত্র:
1. Deputy Minister of Public Health Visits Torkham to Oversee Health Facilities for Returnees
– https://tinyurl.com/td7a32cw
2. Minister of Water and Energy Visits “Omari Camp” Assures Suppor to Returning Refugeest
– https://tinyurl.com/mr2akeyx
3. High-Ranking Delegation of the IEA Visits Omari Camp in Torkham
– https://tinyurl.com/23rhuc8y
4. No new deadline will be given for Afghan refugees: Pakistani official
– https://tinyurl.com/56n3bnrm
5. Pakistan plans to expel 3 million Afghan refugees this year
– https://tinyurl.com/y2hjjwc8

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধআফগানিস্তানের নানগারহার প্রদেশে প্রায় ১৫০০ একর জায়গা জুড়ে শরণার্থী নগরী নির্মাণ
পরবর্তী নিবন্ধগাজা সিটির একমাত্র সচল হাসপাতালে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা