
হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকারের নেতৃত্বে ভারতের উত্তর প্রদেশে রাজ্য প্রশাসন নেপাল সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ৩০০টি মুসলিম ধর্মীয় স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ২২৫টি মাদ্রাসা, ৩০টি মসজিদ, ২৫টি মাজার ও ৬টি ঈদগাহ। এই অভিযানকে আইনের নামে মুসলিমদের উপর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস হিসেবে দেখছেন মানবাধিকার সংগঠন ও মুসলিম নেতারা।
উত্তর প্রদেশের মহারাজগঞ্জ, সিদ্ধার্থনগর, বালরামপুর, শ্রাবস্তী, বহরাইচ, লখিমপুর খেরি ও পিলিভীত জেলায় চলমান এই অভিযানে ১৪ মে, বুধবার একদিনেই মহারাজগঞ্জে দুটি মাদ্রাসা, শ্রাবস্তী ও বহরাইচে একটি করে ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংস করা হয়। প্রশাসনের দাবি, এসব স্থাপনা “অবৈধভাবে সরকারি ও বনভূমি দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে”। কিন্তু স্থানীয় মুসলিমরা বলছেন, এটি হিন্দুত্ববাদী সরকারের ইসলামবিদ্বেষী এজেন্ডার অংশ।
শ্রাবস্তীর কালীমপুরওয়াতে একটি মাদ্রাসা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যেখানে দরিদ্র মুসলিম শিশুরা বিনামূল্যে শিক্ষা পেত। স্থানীয় বাসিন্দা মুহাম্মদ সেলিম বলেন, “এগুলো শুধু ইট-পাথরের স্থাপনা নয়, আমাদের ঈমান ও শিক্ষার কেন্দ্র। সরকার চাইলে বৈধ করত, কিন্তু তারা ধ্বংস করতে চায়”।
প্রশাসনের বক্তব্য, ভারত-নেপাল সীমান্তের ১০ কিলোমিটার ভেতরে এসব স্থাপনা নির্মাণে অনুমতি নেই। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, হিন্দু মন্দির বা অন্যান্য ধর্মের স্থাপনা কি একইভাবে ভাঙা হচ্ছে? মাওলানা আরশাদ হুসেনের কথায়, “যদি কোনো মন্দির অবৈধ হয়, সেখানে কি বুলডোজার যায়? শুধু মুসলিম স্থাপনাই কেন লক্ষ্য?”।
এই ঘটনা মোদি সরকারের মুসলিমবিরোধী নীতিরই প্রতিচ্ছবি। গত কয়েক বছরে নাগরিকত্ব আইন (CAA), হিজাব নিষেধাজ্ঞা, কুরআন পোড়ানোর ঘটনা এবং এখন মসজিদ-মাদ্রাসা ধ্বংস—সবই প্রমাণ করে, ভারতীয় মুসলিমদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বানানোর চক্রান্ত চলছে।
অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড এই পদক্ষেপকে সংবিধান লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে এবং ধ্বংস হওয়া স্থাপনাগুলোর পুনর্নির্মাণের দাবি জানিয়েছে। হিউম্যান রাইটস ল নেটওয়ার্কের আইনজীবী দীপা কৌল বলেছে, “এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের স্পষ্ট উদাহরণ”।
1. UP govt cracks down on illegal religious structures near Nepal border, 225 madrasas, 30 mosques demolished
– https://tinyurl.com/3j223c7k