
যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক উদ্বেগ চরমে পৌঁছেছে। মে মাসে ভোক্তাদের আস্থা সূচক রেকর্ড পরিমাণে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫০.৮-এ, যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। একইসঙ্গে, মূল্যস্ফীতির ১২ মাসের প্রত্যাশা লাফিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছে ৭.৩ শতাংশে, যা ১৯৮১ সালের পর সর্বোচ্চ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির প্রভাবেই সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির কারণে বাজারে পণ্যের দাম বাড়ছে এবং অনেক পণ্যের সংকট দেখা দিতে পারে এমন শঙ্কাও উঠে এসেছে।
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, মূল্যবৃদ্ধি ও পণ্যের সম্ভাব্য ঘাটতির আশঙ্কায় সাধারণ জনগণ উদ্বিগ্ন। জরিপে অংশ নেওয়া ৭৫ শতাংশ ভোক্তা সরাসরি ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কনীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাব এখন সরাসরি বাজারে পড়ছে। রিটেইল জায়ান্ট ওয়ালমার্ট এবং বড় গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও মূল্যবৃদ্ধির সতর্কবার্তা দিয়েছে। এরইমধ্যে কিছু পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। ফেডারেল রিজার্ভও সতর্ক করেছে যে, বারবারের সরবরাহ সংকট ও মূল্যস্ফীতি মুদ্রানীতিকে কঠিন চ্যালেঞ্জে ফেলবে।
অর্থনীতিবিদ ক্রিস্টোফার রুপকি সতর্ক করে বলেছে, ‘এভাবে চলতে থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি মন্দার মুখে পড়তে পারে।’
এদিকে, আবাসন খাতেও ধস দেখা দিয়েছে। নতুন বাড়ি নির্মাণ ও অনুমোদনের হার কমেছে, নির্মাতারা জানিয়েছেন উপকরণমূল্যের অনিশ্চয়তা ও চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় তারা ‘ব্রেক চেপে ধরছে’।
বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, ভোক্তা আস্থা ও বাজার স্থিতিশীলতা যদি দ্রুত পুনরুদ্ধার না হয়, তবে চলতি বছরের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি মারাত্মক চাপে পড়বে।
মূল্যস্ফীতি ঠেকাতে সুদের হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা আপাতত বাতিল করা হলেও বাজারে উদ্বেগের স্রোত থেমে নেই। মূল্যবৃদ্ধির এই তরঙ্গ যদি রোধ করা না যায়, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি বড় ধরনের বিপদের মুখে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কা এখন অর্থনীতিবিদদের মুখে মুখে।
তথ্যসূত্র:
1. US consumer sentiment slumps, households brace for inflation surge
– https://tinyurl.com/bdfbjepa
2. Trading Day: Market elation trumps brewing stagflation
– https://tinyurl.com/bdu8n6p7