
আশুগঞ্জ থানার ওসি মোহা. বিল্লাল হোসেন, তার নিয়ন্ত্রণে চলছে মাদক ব্যবসা। সে মাদককারবারিদের নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলেছে। অভিযোগ রয়েছে, মাদককারবারিদের তার সাহায্য করার বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাত ১২টার পর থেকে রাতভর মাদককারবারিসহ বিভিন্ন স্থানে মদের আড্ডায় সময় কাটায় ওসি।
অবৈধ মাদক ও ভারতীয় পণ্য চোরাচালানের নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজা। অভিযোগ রয়েছে, পুলিশের সহযোগিতায় এবং মাসোহারার মাধ্যমে নিয়মিত ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজাসহ অবৈধ পণ্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বাধাহীনভাবে পৌঁছে যাচ্ছে।
আশুগঞ্জে হাত বাড়ালেই মিলছে ইয়াবা, ফেনসিডিল আর গাঁজা। টাকা ছাড়া কোনো মামলা হচ্ছে না থানায়। এসব অপকীর্তির পেছনে রয়েছে আশুগঞ্জ থানার ওসি মোহা. বিল্লাল হোসেন। ৪ অক্টোবর যোগদানের পর থেকেই সে দুহাতে টাকা কামাতে মাদক ব্যবসাকে পুঁজি করে। মাদককারবারিদের নিয়ে খুলেছে নিজস্ব হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ।
গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, ১৪ ফেব্রুয়ারি ১০ হাজার ইয়াবাসহ বিজয়নগরের দুই মাদক ব্যবসায়ী আনোয়ার ও রফিকুলকে আটক করে আশুগঞ্জ থানা পুলিশ। পরে ৩০০ ইয়াবা দিয়ে তাদের চালান দেওয়া হয়। বাকি ইয়াবা পুলিশের এক সোর্স পাখি জসিম ও বিজয়নগরের আরেক মাদক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের জীবন মিয়ার কাছে বিক্রি করা হয়। প্রতিনিয়তই এমন ঘটনা ঘটছে। বিপুল পরিমাণ মাদক আটক করে আবার সেই মাদকই অন্য মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়।
গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, বিজয়নগরের বিষ্ণুপুর গ্রামের চিহ্নিত চোরাকারবারি হানিফ মেম্বার, জালাল, সিঙ্গারবিল গ্রামের জহির, সেতু, জসিম, চান্দুরা ইউনিয়নের আলাদাউদপুরের রহিম, শাহ আলম, জালালপুরের ফজলুর রহমান প্রকাশ বজলু, আকতার হোসেন, আনোয়ার হোসেন, মাসুক এবং ভৈরবের স্বপন দাদা, ঢাকার সাইফুল চাচাসহ এমন বহু চিহ্নিত মাদক ও চোরাকারবারি এখন আশুগঞ্জ পুলিশের সঙ্গে সমঝোতায় অবৈধ পণ্য পাচার করছে।
অভিযোগ রয়েছে, আশুগঞ্জের প্রতিটি মাদকের স্পট থেকে ওসির নামে টাকা নেওয়া হয়। সে কারণে স্থানীয় কোনো মাদক ব্যবসায়ীকে আটক বা মাদক উদ্ধার করা হয় না। যা আটক করা হয় মহাসড়ক দিয়ে আশুগঞ্জ হয়ে ঢাকা বা দেশের অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়ার সময়। ওসি বা পুলিশের সঙ্গে যাদের সখ্য বা চুক্তি নেই তারাই ধরা পড়ছে এখানে। ভারতীয় জিরা ও চিনি পাচারের জন্য ট্রাকপ্রতি টাকা নেয় ওসি। মাদক ব্যবসায়ী ও পাচারকারীদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আশুগঞ্জের মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তার সখ্যতার বিষয়টি ওপেন সিক্রেট। রাত ১২টার পর থেকে রাতভর মাদক ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন স্থানে মদের আড্ডায় সময় কাটান ওসি।
এ ছাড়াও আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাছির মুন্সি ও উপজেলা বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক ফয়সালকে ১ মার্চ মারধর করা হয়। সেই মামলা নিতে ফয়সালের কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করে ওসি। টাকা না দেওয়ায় মামলা নেওয়া হয়নি।
আশুগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সাবেক সদস্য সচিব শাহিন আলম বকশির কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়েছে ওসি। গ্রেফতার করা হবে না বলে কৃষক লীগের বর্তমান সভাপতি নজরুল ইসলাম বকুলের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নেয়। যুবলীগ নেতা শাহীন মুন্সির কাছ থেকেও ওসি ৭০ হাজার টাকা নিয়েছে। মোট কথা ৫০ হাজার থেকে ২ লাখের নিচে কোনো মামলা রেকর্ড করে না ওসি। মামলা হলেও আসামিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মামলার আসামি গ্রেফতার করে না।
তথ্যসূত্র:
১. মাদককারবারিদের নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ওসির
– https://tinyurl.com/68zpdjkn