
ভারতের মধ্যপ্রদেশের রায়সেন জেলায় হিন্দুত্ববাদী কথিত গো-রক্ষকদের নির্মম হামলায় এক মুসলিম যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় অপর একজন যুবক এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ভারতীয় গণমাধ্যম মাকতুব মিডিয়া জানায়, গত ৫ জুন সন্ধ্যায় বিদিশা-কোহদি রোডে মেহাঙ্গাওয়া গ্রামের একটি স্কুলের কাছে এ নৃশংস ঘটনা ঘটে। খবরে বলা হয়, প্রায় ১০ থেকে ১৫ জনের একটি হিন্দুত্ববাদী দল গরু পরিবহনকারী জুনায়েদ খান ও তার সঙ্গী আরমানের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়।
হামলাকারীরা মুসলিম যুবকদের উপর পৈশাচিক নির্যাতনের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। পরে পুলিশ গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে ভোপালের হামিদিয়া হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে জুনায়েদকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়। অবশেষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৭ জুন সকালে তিনি মারা যান। আরমানের অবস্থাও এখনো আশঙ্কাজনক।
পুলিশ জানায়, হামলাকারীরা কেবল মারধরেই ক্ষান্ত হয়নি, তারা ভুক্তভোগীদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় এবং ভিডিও করার সময়ও নির্মমভাবে পিটিয়ে যায়।
ঘটনার পর প্রকাশিত একটি ভিডিওতে ধ্রুব চতুর্বেদী নামের এক হিন্দু যুবক নিজেকে ‘গো-রক্ষা’ দলের সদস্য পরিচয় দিয়ে দাবি করে, ‘আমরা মেহগাঁও মন্দিরের কাছে গরু বাঁধা থাকার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। গাড়ি ধাওয়ার সময় আমাদের ওপর পাথর ছোড়া হয়। আমরা জীবন ঝুঁকিতে ফেলে গরু রক্ষা করেছি।’
জুনায়েদের পরিবার জানায়, তিনি একজন দিনমজুর ছিলেন এবং আরমান তাকে গরু কেনার কাজে সহায়তা করছিলেন। জুনায়েদের বাবা বলেন, ‘আমার ছেলে নির্দোষ ছিল। এমনকি যদি সে গরু বহন করতও, তাহলে তদন্ত না করে জনতা কীভাবে হত্যা করতে পারে? আমরা কেমন দেশে পরিণত হচ্ছি?’
এখন পর্যন্ত তিন থেকে চারজন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হলেও মূল হামলাকারীদের অধিকাংশই এখনো পলাতক রয়েছে। তবে এর আগের বহু ঘটনার মতোই এই হামলার ক্ষেত্রেও ন্যায়বিচারের সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ফলে পুরো ঘটনায় মুসলিম সমাজে চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ভিডিওটি আর্কাইভ থেকে দেখুন:
তথ্যসূত্র:
1. MP: Muslim man succumbs to injuries after cow vigilante attack, another in critical condition
– https://tinyurl.com/3w9dvk9r