
গাজায় চলমান বর্বর হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিস্তিনি মুসলিমদের সহায়তার উদ্দেশ্যে অনুদান সংগ্রহ করায় ভারতের উত্তর প্রদেশে একজন ইমামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। বিজনৌর জেলার শেরকোট শহরের জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা জাকি-এর বিরুদ্ধে স্থানীয় এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে এই মামলাটি রুজু করা হয়।
গত ২০ জুন মুসলিম মিরর প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, অভিযোগে বলা হয়েছে—ইমাম মাওলানা জাকি স্থানীয় মুসলিমদের গাজার জন্য সাহায্য পাঠাতে উৎসাহিত করছিলেন, এবং যারা অনুদান দিতে অস্বীকার করেন, তাদের বিরুদ্ধে নাকি ‘ফতোয়া’ জারি করে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। তবে মাওলানা জাকি ‘হুমকি প্রদানের’ এই অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছেন।
এই ঘটনাকে ঘিরে স্থানীয় মুসলিমদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তাদের মতে, এটি মুসলিমদের প্রতি ধারাবাহিক বৈষম্যের আরেকটি স্পষ্ট উদাহরণ। এক বাসিন্দা বলেন, ‘হিন্দু সংগঠনগুলো প্রকাশ্যে অনুদান সংগ্রহ করলেও তাদের বিরুদ্ধে কখনো এমন মামলা হয় না। তাহলে গাজার নির্যাতিতদের জন্য সাহায্য চাওয়া কি অপরাধ?’
স্থানীয় অধিকারকর্মী ও মুসলিম নেতাদের বক্তব্য, এই মামলা ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলোর চাপেই দায়ের করা হয়েছে। তারা একে রাজ্যের মুসলিম সম্প্রদায়ের কণ্ঠরোধের বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ বলে মনে করেন।
গত কয়েক মাসে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ফিলিস্তিনের পক্ষে সংহতি প্রকাশ করায় ব্যক্তি ও গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়ার ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। কেউ যদি রাস্তায় প্রতিবাদ করে, কেউ অনলাইনে পোস্ট দেয় কিংবা কেউ নিঃশব্দে অনুদান পাঠায় সবক্ষেত্রেই নজরদারি ও চাপ বাড়ছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় মুসলিমদের মধ্যে এক ধরনের ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে। যারা এতদিন নিরবে-নিভৃতে গাজার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তারা এখন আইনগত ঝামেলার আশঙ্কায় পিছিয়ে যাচ্ছেন। তাদের প্রশ্ন ‘মানবিক সহানুভূতি জানানো কি এখন অপরাধ?’
তথ্যসূত্র:
1. UP Imam booked for collecting donations for Palestine
– https://tinyurl.com/2r9jxhzm