
স্বামীকে হারিয়ে জীবনযুদ্ধে একমাত্র ছেলেকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেছিলেন আমেনা আক্তার রুবি। সন্তান মেহেদী হাসান রবিন ছিলেন তার জীবনের শেষ আশ্রয়, শেষ ভরসা। কিন্তু সেই আশ্রয়টুকুও কেড়ে নিয়েছে হাসিনার ফ্যাসিস্ট রেজিম ২০২৪ সালের ‘জুলাই আন্দোলনে’ অংশগ্রহণের অপরাধে। অপহরণের পর নির্মমভাবে নির্যাতন করে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় রবিনকে। একমাত্র সন্তান হারিয়ে আজ নিঃস্ব আমেনা।
নাটোর সদর উপজেলার উত্তর বড়গাছা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মেহেদী হাসান রবিন ছিলেন সমাজসচেতন, স্পষ্টভাষী একজন ছাত্র। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে দৃপ্ত কণ্ঠে কথা বলাই ছিল তার অপরাধ।
গত বছরের জুলাই আন্দোলনের ৫ আগস্ট নাটোর-২ (নাটোর সদর–নলডাঙ্গা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের অনুসারীরা রবিনকে অপহরণ করে। এরপর তাকে অমানবিক নির্যাতন করে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। আগুনে ঝলসে যাওয়া অবস্থায় রবিন নিজের পরিচয় দিয়ে শেষবারের মতো সাহায্য চেয়েছিলেন, বলেছিলেন: ‘আমি রবিন, আমাকে বাঁচাও।’
স্থানীয়দের সহায়তায় এবং মামার তৎপরতায় রবিনকে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতাল, সেখান থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে নেওয়া হয়। কিন্তু সমস্ত চেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে ৭ আগস্ট মৃত্যুহয় তাঁর। শহীদ হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সাহসী যোদ্ধা।
অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে আমেনা আক্তার রুবি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রবিন ছিল আমার বাঁচার একমাত্র অবলম্বন। অনেক স্বপ্ন ছিল ওকে ঘিরে। আজ সব শেষ। আমি বিচার চাই—যারা আমার ছেলেকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, তাদের ফাঁসি চাই।’
তথ্যসূত্র:
১.নির্যাতন শেষে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় রবিনকে
-https://tinyurl.com/4sf6urwm