আল-কাসসাম ব্রিগেডের মুজাহিদিনদের সাহসী আক্রমনে দখলদার সেনাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

0
94

গাজার রক্তমাখা প্রান্তরে প্রতিরোধের সাহস দীপ্ত আখ্যান রচনা করে যাচ্ছে আল-কাসসাম ব্রিগেড। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের সামরিক শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেড ৮ জুলাই (মঙ্গলবার) একটি নতুন ভিডিও প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যায়—স্নাইপার গুলি, আরপিজি হামলা এবং সরাসরি সংঘর্ষের মাধ্যমে দখলদার ইসরায়েলি সেনা ও সামরিক যানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

এই সব অভিযান ‘ডেভিড স্টোন’ নামক বৃহত্তর প্রতিরোধ ক্যাম্পেইনের অংশ, যা গাজার পূর্বাঞ্চল ও উত্তরের বিভিন্ন এলাকায় দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে।

ভিডিও ফুটেজে প্রথমে লক্ষ্য করা যায়, তাল আল-মুনতার এলাকায় একটি ইসরায়েলি বুলডোজার শনাক্ত করে ধ্বংস করা হয়। পরবর্তীতে একই এলাকায় স্নাইপার আক্রমণে দুই দখলদার ইসরায়েলি সেনাকে হত্যা করা হয়। এরপর শুজাইয়া এলাকায় একটি দালানের ভিতর অবস্থানরত ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে লিপ্ত হতে দেখা যায় আল-কাসসাম ব্রিগেডের মুজাহিদিনদের।

আরপিজি দিয়ে একটি ইসরায়েলি ট্যাংক ধ্বংসের দৃশ্যও ভিডিওতে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে, যা প্রতিরোধ যোদ্ধাদের লক্ষ্যভেদী কৌশল ও সাহসিকতার প্রতিফলন। ভিডিওটি শেষ হয় গাজা শহরের তুফাহ এলাকার পূর্বাঞ্চলে একটি ইসরায়েলি কমান্ড ও কন্ট্রোল ঘাঁটিতে পরিচালিত সফল বোমা হামলার দৃশ্য দিয়ে।

এর আগের দিন, অর্থাৎ সোমবার, গাজার উত্তরাঞ্চলীয় বেইত হানুন এলাকায় এক জটিল ও কৌশলী অভিযানে প্রায় ২০ দখলদার সেনা নিহত ও আহত হয়। এই হামলাকে গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া দখলদার বাহিনীর আগ্রাসনের পর থেকে অন্যতম কঠিন এবং সফল প্রতিরোধ বলে মনে করা হচ্ছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের ঐতিহাসিক প্রতিরোধ অভিযানের পর, ২৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় স্থল আগ্রাসন শুরু করে। সেই সময় থেকেই আল-কাসসামসহ অন্যান্য প্রতিরোধ সংগঠনগুলো বিভিন্ন ফ্রন্টে প্রতিনিয়ত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব সাহসী আক্রমনে শত শত সামরিক যান ধ্বংস ও বহু সংখ্যক দখলদার সেনা হতাহত হয়েছে। পাশাপাশি, মাঝারি ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলি শহর ও বসতিগুলোতেও হামলা অব্যাহত রয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাত যেন এক মনোবলের লড়াইয়ে রূপ নিয়েছে, যেখানে টিকে আছে সেই পক্ষই যার হৃদয়ে রয়েছে ন্যায়ের দাবিতে আত্মত্যাগের দৃঢ় সংকল্প। গাজার প্রতিরোধ যোদ্ধারা প্রতিনিয়ত প্রমাণ করে চলেছেন, সাহস, একতা ও কৌশলের মাধ্যমে কীভাবে আধুনিক সামরিক শক্তিকে পেছনে ফেলা যায়। বছরের পর বছর অবরুদ্ধ থেকেও তারা আজ সেই সেনাবাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করছে, যারা এক সময় নিজেদের ‘অজেয়’ দাবি করত।

ইহুদি সন্ত্রাসবাদ ও পশ্চিমা ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিন প্রতিরোধ হয়ে উঠেছে আজকের বিশ্বে অন্যতম এক সাহসী প্রতিক্রিয়া।


তথ্যসূত্র:
1. Sniper Fire, RPGs, and Ambushes: Qassam Video Shows Fierce Clashes in Gaza
– https://tinyurl.com/mmcyacuv

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধসীমান্তে ঘাস কাটার সময় বাংলাদেশি কৃষককে গুলি করে হত্যার ০৭ দিন পর লাশ ফেরত দিল বিএসএফ
পরবর্তী নিবন্ধরাজপথে শাহাদাত থেকে সাংস্কৃতিক অঙ্গন; জুলাই গণঅভ্যুত্থানে কওমী মাদ্রাসার অবদান