
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় চলমান বর্বর ইসরায়েলি আগ্রাসন, অবরোধ ও সহায়তা-সংকট মিলিয়ে মানবিক বিপর্যয় দিনে দিনে ভয়াবহ হয়ে উঠছে। সর্বশেষ ঘটনায় ৪ বছর বয়সী রেজ্জান আবু জাহির অপুষ্টিজনিত জটিলতায় শহীদ হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসকেরা বলছেন—দীর্ঘ ক্ষুধা ও তীব্র পুষ্টিহীনতা এই মৃত্যুর মূল কারণ।
২২ জুলাই, সোমবার প্রকাশিত বার্তাসংস্থা আনাদোলু ও সরকারি সংবাদমাধ্যম ওয়াফার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—ইসরায়েল আরোপিত মানবিক সহায়তা অবরোধের ফলে খাদ্য ও চিকিৎসা প্রবাহ প্রায় থমকে যাওয়ায় গাজার শিশুদের মধ্যে অপুষ্টি বিস্ফোরক হারে বাড়ছে।
একই দিনে গাজাজুড়ে বর্বর ইসরায়েলি হামলায় ৬০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হন, অন্তত ১১ জন নিহত হন সহায়তার জন্য লাইনে অপেক্ষার সময়। এদিনই ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক দক্ষিণ ও পূর্ব দেইর আল-বালাহ এলাকায় প্রথমবারের মতো ঢুকে পড়ে, সংকটাপন্ন বেসামরিক অঞ্চলগুলোকে সরাসরি সংঘর্ষের মুখে ঠেলে দেয়।
ওয়াফা জানায়, রেজ্জান আবু জাহিরকে গাজার আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা নিশ্চিত করেন—দীর্ঘদিনের খাদ্যঘাটতি, পুষ্টিহীনতা ও তার জটিলতায় তার মৃত্যু হয়েছে। শুধু এই এক পরিবার নয় হাসপাতালে শত শত ছোট-বড় রোগী ক্ষুধা, দুর্বলতা ও অপুষ্টির চিকিৎসার অপেক্ষায়—কিন্তু পর্যাপ্ত শয্যা, ওষুধ বা পুষ্টি-সহায়তা নেই। অনুমান করা হচ্ছে গাজায় বর্তমানে প্রায় ১৭ হাজার শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে, শারীরিক ক্ষয়ের পাশাপাশি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যও ক্ষতিগ্রস্ত—অনেক শিশু ট্রমা, উৎকণ্ঠায় ভুগছে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ আগেই সতর্ক করেছে মার্চ থেকে জুন—মাত্র তিন মাসে—পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের অপুষ্টির হার দ্বিগুণ হয়েছে, যার পেছনে প্রধান কারণ মানবিক সহায়তা বাধাগ্রস্ত হওয়া।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, দখলদার ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৯,০২৯ জন শহীদ এবং ১,৪২,১৩৫ জন আহত হয়েছেন। ৭ অক্টোবর ২০২৩-এ ইসরায়েলে হামলায় আনুমানিক ১,১৩৯ জন শহীদ এবং ২০০-র বেশি মানুষ বন্দী হন—সেই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় শুরু হওয়া সংঘাত এখন আঞ্চলিক মানবিক দুর্যোগে রূপ নিয়েছে।
তথ্যসূত্র:
1. Baby and child die from malnutrition in Gaza
– https://tinyurl.com/2zwhrct6


