
সম্প্রতি ভারতের নির্বাচন কমিশন সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন জমা দিয়েছে, যা দেশটির মুসলিমদের ভোটাধিকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কমিশনের দাবি, চলমান বিশেষ তীব্র পুনঃসংস্করণ প্রক্রিয়া (এসআইআর) চলাকালে ভোটার কার্ড এবং আধার কার্ডকে (ইপিআইসি) ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির বৈধ কাগজপত্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না। এই সিদ্ধান্তে হাজার হাজার মানুষ, বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত ও মুসলিম জনগোষ্ঠীর ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য অনুযায়ী, এসআইআর একটি সম্পূর্ণ নতুন যাচাই প্রক্রিয়া, তাই পুরোনো ভোটার কার্ডের ভিত্তিতে নতুন ভোটার তালিকা তৈরি করা যাবে না। আধার কার্ডকে নাগরিকত্ব প্রমাণ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে না, এবং রেশন কার্ডকেও প্রতারণার আশঙ্কায় বাতিল করা হয়েছে। এতে স্পষ্ট যে, ভোটারদের পরিচয় ও নাগরিকত্ব প্রমাণের ক্ষেত্রে সরকারের কড়াকড়ি বেড়েছে, যা সাধারণ মানুষের জন্য ঝামেলা ও অসুবিধার কারণ হতে পারে।
বিশেষত, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সন্দেহভাজন ভোটারদের নাগরিকত্ব কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যা অনেকেই ‘গোপন এনআরসি’ হিসেবে দেখছেন। সংখ্যালঘু ও সংবেদনশীল সম্প্রদায় যেমন দলিত, ওবিসি, মাইগ্র্যান্ট শ্রমিক ও মুসলিমরা ভোটাধিকার হারানোর ভয় পাচ্ছেন। এই ব্যবস্থাটি তাদের নাগরিকত্ব প্রশ্নবিদ্ধ করে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে বঞ্চনার শিকার হতে পারে।
এছাড়া, আধার ও রেশন কার্ড বাদ দেওয়ার কারণে দেশের বহু অসচ্ছল ও পঞ্চায়েত-গ্রাম পর্যায়ের মানুষ ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ার আশঙ্কা রয়েছে, বিশেষ করে যেখানে আধার সর্বত্র ব্যবহৃত হলেও ভোটার যোগ্যতার প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে না।
অন্যদিকে, অনেক রাজনৈতিক নেতা এবং নাগরিক সমাজের সংগঠন এই বিশেষ তীব্র পুনঃসংস্করণ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন। তাদের অভিযোগ, সরকার জনমত উপেক্ষা করে কঠোর নিয়ম চালু করেছে, যা নাগরিক অধিকার লঙ্ঘন করছে। এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানি সুপ্রিম কোর্টে ২৮ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে।
তথ্যসূত্র:
1. Voter ID, Aadhaar not valid for Bihar electoral roll inclusion, EC tells SC; calls SIR ‘de novo’ process needing fresh verification
– https://tinyurl.com/2s4h6zae


