হিন্দুত্ববাদী ভারতের ক্ষমতাসীন দল দখলকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোর নাম পরিবর্তন করে জাম্মু ও কাশ্মীরে হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করার মিশনে এগিয়ে নিচ্ছে। এই বছরের জুনে জম্মু মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন জম্মুর শেখ নগরকে শিব নগর নামে পরিবর্তন করার জন্য একটি প্রস্তাব পাস করেছে এবং সাথে আম্ফাল্লা চকের নাম পরিবর্তন করে হনুমান চক রাখার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
উগ্র বিজেপির কাউন্সিলর শারদা কুমারী উক্ত প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছে। এই শারদার মতে, “এই এলাকায় শিব মন্দির রয়েছে এবং জনগণও চায় যে এর নাম পরিবর্তিত হোক। তাই আমরা শেখ নগরের নাম পরিবর্তন করে শিব নগর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের প্রস্তাবটি হাউসে পাস হয়েছে।”
সে আরও জানায় “প্রস্তাবটি এখন অনুমোদনের জন্য জম্মু ও কাশ্মীরের সিভিল সেক্রেটারিয়েটে পাঠানো হবে।”
২০২০ সালে, এই হিন্দুত্ববাদীরা ঐতিহাসিক সিটি স্কয়ারের নাম পরিবর্তন করে ভারত মাতা চক, পাঞ্জথিরথির নাম পরিবর্তন করে অটল জি চক এবং নারওয়াল স্কয়ারের নাম পরিবর্তন করে রাজা মান্ডলিক চক রাখা হয়। অবশ্য হিন্দুত্ববাদীদের এই নাম পরিবর্তনের ঘৃণ্য রাজনীতি চালু হয়েছে ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকেই।
উক্ত নাম পরিবর্তনের মিশনটি গনতন্ত্রপন্থীরা আগামী ২০২৪ সালের নির্বাচনের জন্য মনে করলেও ইসলামপন্থী বিশেষজ্ঞগণ মনে করছেন ভিন্ন কথা। তাঁদের মতে, এই হিন্দুত্ববাদীরা নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশ থেকে ইসলাম ও মুসলিমদের সকল নাম ও নিশানা মুছে দিতে চায়। এবং সেই সাথে দেশে হিন্দুত্ববাদের গোড়াপত্তন করতে চায়।
উল্লেখ্য যে, ২০১৯ সালের আগস্ট মাস থেকে এখন পর্যন্ত হিন্দুত্ববাদী ভারতের ক্ষমতাসীন দল গোটা কাশ্মীরকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। সেখানকার মুসলিমদেরকে সকল প্রকার মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত করে আসছে। গুম, খুন, হয়রানি, ধর্ষণ, আটক এর মতো অপরাধের সাথে সাথে মুসলিম লোকালয়ের নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে তাঁদের আবেগে আঘাত করার ঘৃণ্য রাজনীতিতেও মেতে উঠেছে তারা।
এত কিছুর পরও জাতিসংঘ নামক সংস্থা নিরব ভূমিকা পালন করে ভারতকে সমর্থন করে যাচ্ছে। তাই মুসলিম উলামারা কাশ্মীরের জন্য মুসলিম বিশ্বকে কোন সেক্যুলার সংস্থার অপেক্ষা না করে বরং নিজেদেরই এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন।
তথ্যসূত্র :
———
1. BJP-led Jammu admin renames Muslim localities, opposition leaders protest
– https://tinyurl.com/2p84yh2a