বিমানবন্দর আধুনিকায়নে ইসলামি ইমারতের কার্যকরী পদক্ষেপ

1
239
[কাবুল বিমানবন্দর]

যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত একটি ক্ষেত্র হচ্ছে বেসামরিক বিমান সেক্টর। আফগানিস্তানের পুনর্গঠন কার্যক্রমে বদ্ধপরিকর ইসলামি ইমারত কর্তৃপক্ষ তাই এই খাতে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে ক্ষমতা আসার পর থেকেই। এবার বেসামরিক বিমান চলাচলকে আধুনিকায়ন করতে কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছে ইসলামি ইমারত প্রশাসন।

আফগানিস্তানের প্রধান তিনটি বিমানবন্দর পরিচালনার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের জিএএসি-নামক একটি হোল্ডিং কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে ইসলামি ইমারত। দশ বছর মেয়াদী এই চুক্তির আওতায় কোম্পানিটি কাবুল, কান্দাহার এবং হেরাতের তিনটি প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড ট্রান্সপোর্টেশন সার্ভিস, তথ্য প্রযুক্তি এবং নিরাপত্তার বিষয়গুলো পরিচালনা করবে। আফগানিস্তানের পরিবহন ও বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী গোলাম জিলানি পোপাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই চুক্তির মাধ্যমে আফগানিস্তানের বিমানবন্দরগুলোর মানোন্নয়ন হবে এবং স্থিতিশীলতা আসবে। ফলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স আফগানিস্তানের প্রতি নজর দেবে। পাশাপাশি, অনেকে এখানে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবে। তাছাড়া, বহির্বিশ্বের সাথে ইসলামি ইমারত আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পথ খুলে দেবে এই চুক্তি।

এর বাইরে, দেশের অভ্যন্তরেও অসংখ্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি তৈরি হবে। ইতোমধ্যে আফগানিস্তানের প্রায় এক হাজার স্থানীয় লোককে বিমানবন্দর পরিচালনার বিভিন্ন কাজে উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণ দিয়েছে জিএএসি।

আফগানিস্তানের বেসামরিক বিমান চলাচল সেক্টরটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নানা সমস্যায় জর্জরিত ছিল। মার্কিন নেতৃত্বাধীন দখলদার বাহিনী আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরগুলোতে তাণ্ডব চালিয়ে অনেক ক্ষতি করে যায়। ফলশ্রুতিতে, অনেক আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স আফগানিস্তানে তাদের ফ্লাইট বাতিল করেছিল।

এখন প্রায় দুই বছর পর, আফগানিস্তানের বিমানবন্দরগুলো আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য কর্মক্ষমতা এবং নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে পুরোপুরি প্রস্তুত বলে জানিয়েছে জিএএসি।

বিমানবন্দরের কর্মক্ষমতার উন্নতির জন্য তারা ব্যবস্থাপনা, গ্রাউন্ড সাপোর্ট যন্ত্রাদি এবং প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে ৬ লাখ ৪১ হাজার ডলার বিনিয়োগও করেছে বলে জানায় কোম্পানিটি। রানওয়ের লাইট মেরামত, জেনারেটর স্থাপন, এক্স-রে মেশিন সরবরাহ, মেটাল ডিটেক্টর, এবং বিস্ফোরক অনুসন্ধানী যন্ত্র সরবরাহ করা, অস্থায়ী টার্মিনাল বিল্ডিং নির্মাণ, বিমানবন্দরের কর্মীদের খাবার ও পানি দেওয়া এবং আরও কিছু ক্ষেত্রে এই অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে।

জিএএসি ২০২০ সালের নভেম্বরে তৎকালীন দখলদার মার্কিন মদদপুষ্ট আফগান সরকারের সাথে প্রথম চুক্তি করেছিল। এরপর ২০২২ সালের মে মাসে ইসলামি ইমারত আফগানিস্তানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। এখন সর্বশেষ তৃতীয় বারের মতো আফগানিস্তানের আন্তর্জাতিক তিনটি বিমানবন্দর পরিচালনার বিষয়ে চুক্তি করলো তারা।

আফগানিস্তানে কার্যক্রম শুরু করার পর এখন পর্যন্ত প্রায় ১.৫ মিলিয়ন যাত্রীকে মানসম্মত সেবা দিয়েছে এবং ৪০,০০০ টনের অধিক মালামাল স্থানান্তর করেছে জিএএসি।

তথ্যসূত্র:
1. UAE’s GAAC Signs Contrat to Operate Afghanistan’s Airports – https://tinyurl.com/3cx8uaa8
2. GAAC to Uplift Afghanistan’s Airports to the Modern Era – https://tinyurl.com/3x5yz6en

১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধমুজাফফরনগর সহিংসতা ও গণধর্ষণ: ন্যায় বিচার মিলবে কি?
পরবর্তী নিবন্ধফিলিস্তিন জুড়ে ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসন, নিহত ২১ মুসলিম