চবিতে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষে আহত ৩০

0
838

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের ঝামেলা মিটছে না। পূর্বশত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র গতকাল বুধবার রাত ১টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত সংঘর্ষে জড়িয়েছে দুই পক্ষ। এতে অন্তত ৩০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। পাশাপাশি ভাঙচুর করা হয় এফ রহমান হলের অন্তত ২৫টি কক্ষ।

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার মারামারিতে জড়ায় সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের তিন উপপক্ষ ‘সিক্সটি নাইন’, ‘কনকর্ড’ ও ‘বিজয়’। এর জের ধরে গতকাল বিকেলে থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে সংঘর্ষ। আওয়ামী দালাল পুলিশ এসে নিয়ন্ত্রণ করলেও সংঘর্ষের সমাধান হয়নি। খবরঃ প্রথম আলো

বিবদমান উপপক্ষ তিনটির মধ্যে ‘সিক্সটি নাইন’ ও ‘কনকর্ড’ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী। অন্যদিকে বিজয় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসানের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। বিজয়ের নেতৃত্বে আছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াছ। আর সিক্সটি নাইনের নেতৃত্বে আছেন সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন ওরফে টিপু এবং কনকর্ডের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক।

বর্তমানে ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ আছে। একটি মেয়র নাছিরের ও অন্যটি শিক্ষা উপমন্ত্রীর অনুসারী বলে পরিচিত। এই দুই পক্ষের মধ্যে আরও ১১টি উপপক্ষ আছে।

সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের কোন্দলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হলে গতকাল বুধবার রাতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মধ্যরাতে পুলিশ চলে যাওয়ার পর সিটি মেয়রের অনুসারী পাঁচটি উপপক্ষ এক হয়ে বিজয়ের ওপর হামলা করে। ক্যাম্পাসের সোহরাওয়ার্দী ও এফ রহমান হলে ঢুকে বিজয়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় পাঁচটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পাশাপাশি এফ রহমান হলের সামনে থাকা চারটি মোটরসাইকেল, হল কক্ষ ও লাইট ভাঙচুর করা হয়। এতে পুরো হল অন্ধকার হয়ে যায়। দুই পক্ষের সংঘর্ষে এ সময় অন্তত ৩০ জন আহত হন। পরে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। আর আহতদের বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ছাড়া প্রাথমিকভাবে অন্তত ৫০ জনকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু নেতাদের হুমকিকে ৪৩ জনকে ছেড়ে দিতে হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর বাকি সাতজনকে পুলিশ নিয়ে যায়।

সংঘর্ষের বিষয়ে প্রক্টর এস এম মনিরুল হাসান বলেন হিংসার রাজনীতির কারণে বারবার সংঘর্ষে জড়াচ্ছে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ। গতরাতে সিটি মেয়রের অনুসারীরা তিন হলে হামলা চালিয়েছেন। আর উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে আটকৃতদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আলাওল হলের ২৩৮ নম্বর কক্ষে বিজয়ের কর্মী মো. আবদুল্লাহ ও কনকর্ডের কর্মী আরমান হোসেন থাকেন। এ দুজনের মধ্যে কয়েক দিন ধরে ঝগড়া হচ্ছিল। পরে আবদুল্লাহ বিজয়ের আরেক কর্মী মো. আবিরকে নিয়ে গত সোমবার আরমানকে মারধর করেন বলে অভিযোগ ওঠে। অন্যদিকে আরমান সিক্সটি নাইনের নেতা-কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবার রাতে আবিরকে মারধর করেন। এ থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত।

এ ঘটনার রেশ ধরে গতকাল বুধবার বিকেলে সিক্সটি নাইনের এক কর্মীকে মারধর করেন বিজয়ের নেতা-কর্মীরা। ঘটনা জানাজানি হলে সন্ধ্যায় আবারও সংঘর্ষে জড়ায় সিক্সটি নাইন ও বিজয়। রামদা, লোহার রড, কাচের বোতল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে অবস্থান নেন বিজয়ের নেতা-কর্মীরা। পাশাপাশি শাহজালাল হলের সামনে অবস্থান নেয় সিক্সটি নাইন। এ সময় একে অপরকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধনববধূকে উত্ত্যক্ত করলো সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ নেতা
পরবর্তী নিবন্ধদিল্লি পেয়েছিস! বলেই দুই মুসলিমকে গেরুয়া সন্ত্রাসীদের মারধর!