মুসলিম উচ্ছেদকামী বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন- সিএএ নিয়ে আদালতের সব রকম কর্তৃত্ব কেড়ে নিল ভারতের বিজেপি সরকার। হিন্দুত্ববাদী সরকার জানিয়ে দিয়েছে, একমাত্র সংসদের হাতেই নাগরিকত্ব আইন প্রণয়নের সার্বভৌম ক্ষমতা রয়েছে। এ নিয়ে আদালতে কোনও সওয়াল-জবাব হতে পারে না। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে এ বার সুপ্রিম কোর্টে এমনটাই জানিয়ে দিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
সিএএ-র সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গত কয়েক মাসে একাধিক আবেদন জমা পড়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে। তারই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার আদালতে ১২৯ পাতার একটি হলফনামা জমা দেয় কেন্দ্র সরকার। তাতে বলা হয়, সিএএ-র জন্য কোনও নাগরিকের মৌলিক অধিকার খর্ব হবে না। তাই ওঠেনা সাংবিধানিক নৈতিকতা লঙ্ঘনের প্রশ্নও।
গত বছরের শেষ দিকে সংসদে সিএএ আইন পাশ করিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এর আগে মুসলিমদের নাগরিকত্ব হরণের জন্য দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে চালু করেছে এনআরসি। সিএএ-র আওতায় তিন পড়শি দেশ— বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আগত মুসলিম ব্যতিত হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, এবং পারসিদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে স্পষ্ট আইন করে দেওয়া হয়েছে, এ আইনে মুসলিমদের কোনো নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না।
এ নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি তুলে আসছেন বিরোধীরা। তাদের দাবি, ইচ্ছাকৃত ভাবে ওই তালিকা থেকে মুসলিমদের বাদ দেওয়া হয়েছে, যা সংবিধান বিরোধী। তাই এই আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে আবেদন জমা দিয়েছিলেন তারা। সর্বপ্রথম কেরল বিধানসভায় সিএএ বিরোধী প্রস্তাব পাশ হয়। সিএএ-র সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে যায় তারা। পরে রাজস্থান সরকারও একই পথ অনুসরণ করে। রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা মনোজ ঝা, তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র, এমআইএম নেতা আসাদুদ্দিন ওয়াইসি-সহ আরও অনেকে এই আইনের বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন জমা দেন।
তারই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে হলফনামা জমা দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ডিরেক্টর বিসি জোশী। তাতে বলা হয়েছে, এ নিয়ে আদালতে কোনও সওয়াল-জবাব হতে পারে না। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে এ বার সুপ্রিম কোর্টে এমনটাই জানিয়ে দিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।