ভারতে রামমন্দিরের চাঁদা সংগ্রহ করতে মুসলমানদের বাড়িঘরে গেরুয়া সন্ত্রাসীদের লুটপাট

0
956
ভারতে রামমন্দিরের চাঁদা সংগ্রহ করতে মুসলমানদের বাড়িঘরে গেরুয়া সন্ত্রাসীদের লুটপাট

ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় আযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের জন্য চাঁদা সংগ্রহকে কেন্দ্র করে মুসলমানদের বাড়িঘর লুট করা হচ্ছে।

ইন্দোর, মান্দসৌর, উজ্জয়িনী-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় মুসলিম সমাজের নেতারা অভিযোগ করছেন, রামমন্দিরের চাঁদা তোলার মিছিল ইচ্ছে করে তাদের মহল্লা দিয়ে নিয়ে গিয়ে হিংসায় প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছে এবং মসজিদেও ভাঙচুর চালানো হচ্ছে।

রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধেও এই সব ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি পক্ষপাত দেখানোর অভিযোগ উঠেছে।

বস্তুত সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের পথ প্রশস্ত হওয়ার পর গত আগস্টেই সেই মন্দিরের ভূমিপূজা সম্পন্ন হয়েছে, এখন চলছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সেই মন্দির নির্মাণের জন্য চাাঁদাবাজি করে অর্থসংগ্রহের কাজ।

বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো বিভিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠন বাইক মিছিলের আয়োজন করে মন্দিরের জন্য সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাঁদা তুলতেও শুরু করেছে। মধ্যপ্রদেশের বেশ কয়েকটি জেলায় এই সব মিছিল যখন মুসলিম মহল্লা দিয়ে যায় তখন মুসলমানদের বাড়িঘর লুটপাট চালায়।

মুসলমানদের উপর দোষ চাপাতে  হিন্দুত্ববাদীরা অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসী মিছিল লক্ষ্য করে পাথর বা ইট-পাটকেল ছুঁড়েছে।

মুসলিম সমাজের নেতারা পাল্টা বলছেন, মিছিল থেকেই হিংসায় প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছে, এমন কী মসজিদের মাথায় উঠে মিনার ভাঙার চেষ্টা পর্যন্ত হয়েছে। গত ২৯ ডিসেম্বর এই ধরনেরই তীব্র সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাক্ষী ছিল ইন্দোরের কাছে চন্দন খেড়ি গ্রাম। ওই গ্রামের সরপঞ্চ বা মোড়ল দিলনওয়াজ প্যাটেল বলছিলেন, “রামমন্দিরের নামে চাঁদা তোলার মিছিল বের করে আসলে গোটা রাজ্যেই মুসলমানদের জীবনযাপনের পরিবেশকে বিষিয়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে।

এই সব মিছিলের উদ্দেশ্যই হল মুসলিমদের ভয় দেখানো।” “বিভিন্ন মুসলিম পরিবারের ওপর হামলা হয়েছে, অথচ পুলিশ এই সব ঘটনায় শুধু মুসলিমদেরই আটক করছে – হিন্দুদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে না।” “প্রত্যক্ষদর্শীদের তোলা ভিডিওতে পরিষ্কার দেখা গেছে মসজিদের মাথায় চড়ে মিনার ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে, অথচ তাদের বিরুদ্ধে কিছুই করা হচ্ছে না।” একই সময়ে অবিকল প্রায় একই ধরনের ঘটনা ঘটার অভিযোগ এসেছে মান্দসৌর বা উজ্জয়িনী জেলা থেকেও।

বিজেপির নেতা-মন্ত্রীদের উসকানিমূলক বক্তব্যেই পরিস্থিতি আরও বিষিয়ে উঠছে। মধ্যপ্রদেশের ক্যাবিনেট মন্ত্রী বিশ্বাস সারং। সে জানিয়েছে রামমন্দিরের জন্য চাঁদা সংগ্রহে  কোনও বাধা দেওয়া হবে না।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধশাহাদাত : জান্নাতের সংক্ষিপ্ত পথ
পরবর্তী নিবন্ধরোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন, ৪৩৫ ঘর পুড়ে ছাই