আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়নের পরাজয়ের পর ক্ষমতালোভীদের হটাতে ১৯৯৪ সালে মাদ্রাসার ছাত্র ও সাধারন জনতাকে নিয়ে নতুন এক আফগান গড়ার লক্ষ্য ময়দানে আসেন মোল্লা মোহাম্মদ উমর মুজাহিদ (রাহিঃ)। দেশটিতে গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে ১৯৯৬ সালে ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান প্রতিষ্ঠা করেন মুজাহিদগণ।
এরপর ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর রাত থেকে শুরু হয় নতুন এক যুদ্ধের। ক্রুসেডার আমেরিকার নেতৃত্বে কথিত “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ” স্লোগান দিয়ে এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে বহুজাতিক ৪০টি দেশের ক্রুসেডার সৈন্যরা।
আমেরিকার রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ কর্তৃক ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া এই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হয় ৭,২৬২ দিন। আর দীর্ঘ এই যুদ্ধে পরাজিত সর্বশেষ সেনাদেরকে চলতি বছরের ৩১ আগষ্ট মঙ্গলবার রাতের আধারে আফগানিস্তান থেকে কেটে পড়তে নির্দেশ দেয় ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এরমধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে দুই দশক ধরে চলা আফগান যুদ্ধের। তবে আমেরিকান শেষ বহরটি কাবুল থেকে কেটে পড়ার আগেই তালিবানদের হাতে তাদেরকে চড়া মূল্য দিতে হয়েছে। তাই এখন শুরু হয়েছে সেই মূল্যের হিসাব কষার পালা।
তালিবানদের হাতে আমেরিকার এই চড়া মূল্যের একটি তথ্যচিত্র ইনফোগ্রাফি আকারে প্রকাশ করেছেন তালিবানদের মিত্র বাহিনী আল-কায়েদা উপ-মহাদেশের মুখপত্র “নাওয়াই গাজওয়াতুল হিন্দ” দ্বিমাসিক ম্যাগাজিন।
ম্যাগাজিনটির প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আফগান জিহাদে আমেরিকার সর্বমোট ৩৬,৫৪২ সেনার প্রাণহানি ঘটেছে। পঙ্গু ও কর্ম-অক্ষম হয়েছে ১,৭২,৬৪৬ সেনা। আর এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২.৩১৩ ট্রিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ৭,২৬২ দিনের এই যুদ্ধে আমেরিকার প্রতিদিন খরচ হয়েছে ৩০০ মিলিয়ন ডলার।
তবে ময়দানে যুদ্ধ শেষ হলেও যুক্তরাষ্ট্রের খরচের খাতা এখনই বন্ধ হচ্ছে না। কারন এই যুদ্ধে যেসব সৈন্য আহত হয়েছে, তাদের চিকিৎসা ও খরচ, নিহত এবং আহত সেনাদের পরিবারের খরচ আমেরিকাকে টানতে হবে। অপরদিকে এই যুদ্ধ চালাতে গিয়ে আমেরিকা সুদের উপর যে ঋণ নিয়েছে, সেই সুদের জের ২০৫০ সাল অবধি টানতে হবে, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ ব্যয় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
আমেরিকা এই যুদ্ধে যে অর্থ খরচ করেছে, তা বাংলাদেশ সরকারের ২০২১ সালের বাজেট হিসাবে এই বাংলাদেশের ১১২ বছরের বাজেটের সমান অর্থ।
অপরদিকে ২০২০ সালের বাজেট হিসাবে এই টাকা আফগানিস্তানের ১৩৩৩ বছরের বাজেটের সমান।
আফগানিস্তানে ক্রুসেডার আমেরিকার কথিত সন্ত্রাস দমন, গণতন্ত্র এবং নারী অধিকার নিশ্চিতের খরচনামা বিস্তারিত ইনফোগ্রাফিতে দেখুন…
মার্কিনিরা যে, আফগান থেকে সম্পদ চুরি করে কোটি কোটি ডলার আয় করছে। সেটা বললেন না কেন?
প্রিয় বোন! এখানে আলোচনা অবস্থার চাহিদা মুয়াফেক করতে হবে।আলোচনা হচ্ছে মার্কিনীদের ক্ষয় ক্ষতি নিয়ে। আর “আফগান থেকে তাদের আয়” হলো একটি স্বতন্ত্র আলোচনার বিষয়।
তাই এখন মার্কিনীদের আফগান থেকে লুটপাটের আলোচনা এখনা হওয়া আশ্চর্য কিছু নয়।
কাফেররা এভাবেই মুসলিমদের ধ্বংস করার জন্য নিজেদের জান মাল খরচ করবে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা অবশেষে এগুলো তাদের আফসোসের কারণ বানিয়ে দিবেন