মালি | রাজধানীর সামরিক কেন্দ্রস্থলে আল-কায়েদার জোড়া ইস্তেশহাদী হামলা

1
1125

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালির রাজধানী বামাকোর কাছে একটি জোড়ো গাড়ি বোমা হামলা চালিয়েছেন আল-কায়েদা যোদ্ধারা। এমন একটি এলাকায় হামলাটি চালানো হয়েছে, যেখানে জান্তা প্রশাসনের সামরিক সদর দফতর অবস্থিত।

মালির কুখ্যাত গাদ্দার সামরিক জান্তা প্রশাসনের বিরুদ্ধে হামলা অব্যাহত রেখেছে আল-কায়েদা। সেই সূত্র ধরেই রাজধানী বামাকোর নিকটবর্তী কাটি শহরে পর পর দুটি শক্তিশালী ইস্তেশহাদী হামলা চালিয়েছে ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী ‘জেএনআইএম’।

স্থানীয় সূত্র মতে, গত ২২ শে জুলাই রাজসী কাটিতে অবস্থিত শক্তিশালী সামরিক ঘাঁটি এবং কেন্দ্রগুলি লক্ষ্য করে এই হামলাটি চালানো হয়। হামলায় ২টি বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছিল। এই আক্রমণে মালিয়ান সেনাবাহিনীর সামরিক ঘাঁটি ছাড়াও, রাষ্ট্রপতি আসমি গোইতারের বাড়ি এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বাসভবনকেও লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়।

‘জেএনআইএম’ এর মিডিয়া সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, এই অভিযানে আবদুল্লাহ নামে একজন মুজাহিদ প্রথমে তাঁর বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি নিয়ে সামরিক ব্যারাকের দরজা এবং এর রক্ষীদের দিকে অগ্রসর হন। নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছেই তিনি শহীদি হামলাটি পরিচালনা করেন, যাতে ঘাঁটির প্রধান ফটক ধ্বংস এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সমস্ত গাদ্দার সেনা নিহত হয়।

প্রথম বিস্ফোরণটি সঠিকভাবে পরিচালনার পর বীর মুজাহিদ জুলইয়াদাইন আল-বুরকিনি অন্য একটি গাড়ি বোমা নিয়ে অগ্রসর হন, যতক্ষণ না তিনি ব্যারাকের গভীরে এবং মাঝখানে পৌঁছান। অতঃপর তিনিও তাঁর লক্ষ্যে পৌঁছে ২য় ইস্তেশহাদী হামলাটি পরিচালনা করেন। এতে সামরিক ঘাঁটির বিভিন্ন দেয়ালের সাথে সাথে বহু সংখ্যক গাদ্দার সৈন্যও লুটিয়ে পড়ে।

এদিকে পর পর ২টি শক্তিশালী ইস্তেশহাদী হামলার পর ঘাঁটির ভিতরে তীব্র লড়াই শুরু হয়। কেননা বাহিরে অপেক্ষমান অন্যান্য ইনগিমাসী মুজাহিদগণও বিস্ফোরণের পর তাদের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঘাঁটিতে প্রবেশ করেন। এসময় তাঁরা বোমা বিস্ফোরণের হাত থেকে বেঁচে চাওয়া অবশিষ্ট সৈন্যদের হত্যা করতে থাকেন। এতে আরও অনেক সৈন্য নিহত হয়। তবে কিছু সৈন্য ইঁদুরের মতো ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়ে এবারকার মতো বেঁচে যায়।

এদিকে অভিযান চলাকালে গাদ্দার বাহিনীকে সহায়তা করতে আসা একাধিক কনভয়ে এদিন রকেট হামলা চালান মুজাহিদগণ। ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পায়।

অবশেষে মুজাহিদগণ তাদের অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করেন এবং কোন হতাহত ছাড়াই তাঁরা নিরাপদে ফিরে আসেন। তবে ফিরার আগে মুজাহিদগণ সামরিক স্থাপনা, শত্রুদের অনেক সাঁজোয়া যান এবং সামরিক সরঞ্জাম ধ্বংস করেন। যাতে করে পরবর্তীতে এসব সরঞ্জাম গাদ্দার-কুফ্ফার সম্মিলিত বাহিনী মুজাহিদদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে না পারে।

উল্লেখ্য যে, হামলার পরও আশপাশে সংঘর্ষ অব্যাহত থাকে। তখন রাশিয়ার Mi-24 সামরিক হেলিকপ্টারগুলো উম্মাহর ঐ গাদ্দার সেনাদের  উদ্ধার করতে ওই অঞ্চলে উড়তে থাকে, যারা সামান্য দুনিয়াবি স্বার্থের জন্য নিজেদের ও জাতির মা-বোন আর শিশুদের ভবিষ্যৎ অবিশ্বাসী শত্রুদের হাতে তুলে দেয়, আর নিজেরা মান-মরিয়াদা ভুলে ইসলাম ও মুসলিমের শত্রুদের গোলামি করতে থাকে। অপরদিকে মুজাহিদরা তাদের পরিবার-পরিজন ভুলে নিজেদের জান-মাল কুরবান করতে থাকেন উম্মাহকে মুক্ত করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য, আল্লাহর ক্ষমা ও মহাপুরষ্কার মহান জান্নাত লাভের জন্য।

এদিকে জান্তা প্রশাসন তাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের তথ্য গোপন করতে ঘোষণা করে যে, এই অভিযানের সময় তাদের মাত্র ৭ সৈন্য নিহত হয়েছে। সেই সাথে তাদের ৮ সেনাকে বন্দী করে নিয়ে গেছেন মুজাহিদগণ। তবে স্থানীয় সূত্র জানায় যে, আল-কায়েদা যোদ্ধাদের বরকতময়ী এই অভিযানে মালিয়ান বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ধারণার চাইতেও অনেক বেশি ছিল।

বরকতময় এই অভিযানের পর গত ২৭ জুলাই জামা’আত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিনের মুখপাত্র ঘোষণা করেছেন যে, তাঁদের বীর যোদ্ধারা খুব শীগ্রই রাজধানী বামাকো অবরোধ করতে যাচ্ছেন। আর এই অবরোধের আগ পর্যন্ত দেশ জুড়ে আরও বড় বড় সফল অভিযান চালানো হবে, ইনশাআল্লাহ।



 প্রতিবেদক :  ত্বহা আলী আদনান

১টি মন্তব্য

Leave a Reply to Khan Jahan Ali প্রতিউত্তর বাতিল করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধউইঘুরদের পক্ষ নেওয়ায় এক অমুসলিম এক্টিভিস্টেকে সাত বছরের কারাদণ্ড
পরবর্তী নিবন্ধসোমালিয়া | নতুন আরও এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিলো আশ-শাবাব