বাগরাম এয়ার-বেসে তালিবানদের আকর্ষণীয় সামরিক কুচকাওয়াজ

ত্বহা আলী আদনান

5
1952

ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের বীর মুজাহিদিন ও দখলদার মার্কিন জোট বাহিনীর মাঝে বিগত ২০ বছর ধরে চলে আসছিলো রক্তক্ষয়ী এক লড়াই। দুই দশকের এই লড়াই শেষে গত বছরের ৩১ আগস্ট রাতের আধারে আফগানিস্তান ছেড়ে যায় সর্বশেষ দখলদার সেনাটিও।

ইমারাতে ইসলামিয়া প্রশাসন দেশ থেকে দখলদার সেনাদের প্রত্যাহারের প্রথম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে গত ৩১/৮/২২ তারিখে একটি সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করে। আর এই কুচকাওয়াজের আয়োজনটিও করা হয়েছে আফগানিস্তানে গত দুই দশক ধরে আগ্রাসী ন্যাটো এবং আমেরিকান বাহিনীর বৃহত্তম বাগরাম সামরিক ঘাঁটিতে। যা আফগানিস্তানের পারওয়ান প্রদেশের বাগরাম জেলায় অবস্থিত। সামরিক এই সদর দপ্তরটি থেকেই মার্কিন বাহিনী গত দুই দশক ধরে মুজাহিদদের লক্ষ্য করে সবচাইতে বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে।

বাগরামে অনুষ্ঠিত এই কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইমারাতে ইসলামিয়া প্রশাসনের প্রধানমন্ত্রী মোল্লা হাসান, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মোল্লা মুহাম্মদ ইয়াকুব, চিফ অফ জেনারেল স্টাফ ক্বারি ফসিহউদ্দিন, পররাষ্ট্র মন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি ও মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ্ মুজাহিদ (হাফি.) প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

বাগরাম ঘাঁটিতে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করার কারণ বলতে গিয়ে মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ্ মুজাহিদ বলেন, আমেরিকানরা ২০ বছর ধরে বাগরাম বিমানবন্দর থেকে আফগানিস্তানে বোমাবর্ষণ করেছে এবং নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেছে। এখানে তারা একটি কারাগারও তৈরি করেছিল, যাতে বন্দীদের উপর নির্যাতনের স্টিমরোলার চালানো হয়েছে। এই জায়গাটি দখলদার বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ নিউক্লিয়াস এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। তাই আজকের এই অনুষ্ঠানটি এখানেই হওয়া উচিত ছিলো। আজ এটা করা উচিত, কেননা আমাদেরকে দেখাতে হবে যে, আমরা একটি অন্ধকার যুগের সমাপ্তি ঘটিয়েছি।

অনুষ্ঠান চলাকালীন, আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মোল্লা মুহাম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদকে দেশটির সামরিক ইউনিটগুলি স্যালুট জানায়। পরে মোল্লা ইয়াকুব ও প্রধানমন্ত্রী মোল্লা হাসান আখুন্দ দীর্ঘ বক্তব্য রাখেন।

উমারাদের বক্তব্য শেষে শুরু হয় সামরিক কুচকাওয়াজের মূল পূর্ব। যেখানে তালিবানদের সামরিক ইউনিটগুলি তাদের শক্তিমত্তা ও দক্ষতা প্রদর্শনী করেন।

কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের বিস্ফোরক স্কোয়াড থেকে শুরু করে যুদ্ধের শুরুর দিকে তালিবান মুজাহিদদের ঐতিহাসিক পোষাক বাহিনীকেও দেখানো হয়। যারা শীতে কম্বল মুড়ি দিয়ে মোটরসাইকেলে চড়ে যুদ্ধ করছিলেন, আর বসন্তে ঢিলেঢালা পাঞ্জাবি গায়ে হাতে তৈরি মাইন নিয়ে যুদ্ধের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। যেগুলো গত ২০ বছরের যুদ্ধে মার্কিনীদের ধ্বংস করার সবচাইতে মারাত্মক অস্ত্র ছিলো।

এরপর মুজাহিদগণ তাদের বর্তমান সামরিক শক্তি প্রদর্শন করেন। এগুলর মধ্যে ছিল –

– BMP/ZU-23-2, T-62M, T-55 ও T54 মডেলের বেশ কিছু ট্যাঙ্ক

– Mi-24, Black Hawk, Mi-17/171, এবং Little Birds যুদ্ধ বিমান

– 9P117 TEL 9K72 মডেলের ব্যালিস্টিক মিসাইল এবং 8K14 ক্ষেপণাস্ত্র

– BM-27, 220mm MRL, এবং 9P140 মডেলের লঞ্চার

– বেশ কিছু M240 ও M2 মডলের যান, প্রচুর সংখ্যক হাম্বি, রেঞ্জার এবং M1117 ও MRAP মডেলের সাঁজোয়া যানগুলি অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করেন।

মুজাহিদগণ এই অনুষ্ঠানের প্রদর্শনী শুধু নিজেরাই দেখেননি, বরং ইমারাতের কর্মকর্তারা প্রতিবেশী শক্তিধর ইরান, চীন, পাকিস্তান, ভারত ও রাশিয়ার মতো দেশগুলোর প্রতিনিধিদের ডেকে এনে তাদেরকে সামনে রেখেই ভারী এই সামরিক মহড়া প্রদর্শ করেন।

তালিবান মুজাহিদদের সামরিক এই কুচকাওয়াজ/মহাড়ার কিছু চিত্র দেখুন…

5 মন্তব্যসমূহ

  1. আলহামদুলিল্লাহ
    আল্লাহর সৈনকেরা এগিয়ে যাচ্ছে কাশ্মীর ও আল-আকসার সম্মুখপানে। ইনশাল্লাহ আল-কায়দা ও তালেবানদের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা হিন্দুস্তান ও আকসার ইসলামের ঝান্ডা উড্ডিন করবেন।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধউইঘুর মুসলিমদের আর্তনাদ || পর্ব-১ || মুসলিম নারীদের জোরপূর্বক গর্ভপাত
পরবর্তী নিবন্ধআগস্ট মাসজুড়ে ১৯ কাশ্মীরি মুসলিমকে খুন করেছে হিন্দুত্ববাদীরা