ভারতে সম্মানিত একজন আলেমকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা : মুসলিম গণহত্যার চূড়ান্ত পর্ব কি তবে শুরু?

0
1741

উগ্র হিন্দুত্ববাদী বজরংদলের সন্ত্রাসীরা সম্মানিত একজন আলেমকে আগুনে পুড়িয়ে খুন করেছে। গতকাল ২৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের বাসিন্দা মাওলানা আতাউল্লাহ কাসেমী নামক সম্মানিত ঐ আলেমকে উগ্র হিন্দুত্ববাদী বজরংদলের সন্ত্রাসীরা আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। পরে আগুনে পোড়া দেহকে জঙ্গলে নিক্ষেপ করে।

হিন্দুত্ববাদী উগ্র কর্মী-জনতা এখন এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে যে, কি আলেম কি আওয়াম- কাউকেই তারা ছাড় দিচ্ছে না। কেউই তাদের হাত থেকে নিরাপদ নয়। তারা জানে মুসলিমদের উপর যতই অত্যাচার করুক, তাদের কোন বিচার হবে না। গত মাসেও বিলকিস বানু ধর্ষণ ও  ১৪ মুসলিম হত্যায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আত্মস্বীকৃত ১১ খুনিকে মুক্তি দিয়েছে হিন্দুত্ববাদীদের প্রহসনের আদালত। মুসলিম হত্যায় এমন দায়মুক্তির ঘটনা রয়েছে আরও শত শত। তাই নিশ্চিত মনেই উগ্র হিন্দুরা এখন পুড়িয়ে হত্যার মতো বর্বর কাজ করছে, এবং এর মাধ্যমে মুসলিম গণহত্যার মাঠ প্রস্তুতের চূড়ান্ত স্তরে প্রবেশ করেছে তারা।

একজন সম্মানিত আলেমকে আগুনে পুড়িয়ে খুন করার পরও হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন অপরাধীদের আটক করেনি। হিন্দুত্ববাদীদের দালাল মিডিয়াগুলো এনিয়ে কোন কথা বলেনি। কথিত কোন মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকেও কোন প্রতিবাদ আসেনি। এটা এখন ওপেন সিক্রেট যে, এতদিন ধরে মুসলিমদের পিটিয়ে মারার ঘটনায় দায়িত্বশীল সব পক্ষ নীরব থেকে আর অপরাধিদের দায়মুক্তি দিয়ে সেটাকে সাধারণ গ্রহণযোগ্য ঘটনা বানিয়ে ফেলেছে। আর এখন মুসলিম আলেমদের পর্যন্ত পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, এর কোন বিচার হচ্ছে না; সুতরাং এই ঘটনাও এখন সহজ স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়াবে। আর এভাবে এখন তারা মুসলিম গণহত্যা শুরুর চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রবেশ করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ পুড়িয়ে মারার ঘটনায় কাউকে আটক বা বিচার না করায় সারা ভারতেই উগ্র হিন্দুরা এখন একই কাজ করতে উৎসাহিত বোধ করবে অহরহ।

বেশ কিছু বছর ধরে চলমান উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের আগ্রাসী অত্যাচার এবং কথিত দায়িত্বশীল-প্রশাসনের নীরব ভূমিকা গোটা উপমহাদেশে হিন্দুত্ববাদের উগ্র অভ্যুত্থানকে ত্বরান্বিত করেছে; যা ক্রমেই এখন চূড়ান্ত মুসলিম গণহত্যায় রপ লাভ করছে। এটাও স্পষ্ট যে, প্রচলিত কোন আইন-আদালত বা পশ্চিমা গণতন্ত্রের ধ্বজাধারীরা কেউই মুসলিমদের রক্ষায় এগিয়ে আসবেনা।

কথিত সুপার পাওয়াররা আসলে এসব ক্ষেত্রে একে অপরকে চাপে ফেলে সুবিধা আদায় করতে মুসলিমদের প্রতি সুর নরম করার সাময়িক অভিনয় করে থাকে; যেমনটা করা হয়েছে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ক্ষেত্রে আর উইঘুর মুসলিমদের ক্ষেত্রে। কিংবা তারা বড়জোর একেকটি পক্ষকে উস্কে দিয়ে অস্ত্র বাণিজ্য করতে পারে; তবে মুসলিমদের জীবন-মরন বা নিরাপত্তা নিয়ে তাদের কিছুই যায়-আসে না।

উপমহাদেশের মুসলিমদের ক্ষেত্রেও কথিত বিশ্বমোড়লদের অবস্থান এর থেকে ভিন্ন হবেনা বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা।  হক্কপন্থী উলামাগণও তাই বরাবরই মুসলিমদেরকে পরিস্থিতির নাজুকতা উপলব্ধি করতে এবং সেই অনুযায়ী নিজ ও পরিবারের জান-মাল-ইজ্জত-আব্রুর হেফাজতের প্রস্তুতি নিতে বলে আসছেন নববী মানহাজ অনুযায়ী।



লেখক : উসামা মাহমুদ


 

তথ্যসূত্র :
1. Maulana Ataullah Qasmi, a resident of Jharkhand, was burnt by a Bajrang Dal Worker, and the body was thrown in the forest.
https://tinyurl.com/48cvnp6t
https://tinyurl.com/yse4k75y

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেশে চলছে ধর্ষণের মহামারি : উত্তরায় গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ
পরবর্তী নিবন্ধশরিয়াহ্ আদালত কর্তৃক ফের ৬ গুপ্তচরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর