সৌদি আরবের প্রখ্যাত শায়েখ খালেদ আর-রাশেদের কারাদণ্ড আবারও বৃদ্ধি করেছে গাদ্দার সৌদি সরকার। এর আগে তিনি একবার কারাদণ্ডের মেয়াদ শেষ করেছিলেন। তবে চলমান কারাদণ্ড শেষ হবার আগেই ফের কারাদণ্ড বৃদ্ধি করে তাঁকে মোট ৪০ বছরে কারাদণ্ড দিলো সৌদি সরকার।
যে কারণে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়:
তাঁর পৃথিবী কাঁপানো দুটি ভাষণ হচ্ছে ‘ইয়া উম্মাতা মুহাম্মাদ’ ‘হে মুহাম্মাদ (ﷺ) এর উম্মত’! ও ‘রআইতুন নাবিয়্যা ইয়াবকী’ ‘আমি নবীজীকে কাঁদতে দেখেছি’। ক্রুসেডার ডেনমার্ক যখন রাসুল (ﷺ) এর শানে ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুন প্রচার করে, তখন শায়েখ এ ভাষণগুলো প্রদান করেন।
এ সকল ভাষণে তিনি মুসলিম উম্মাহকে সম্বোধন করে হৃদয় ছোঁয়া, জ্বালাময়ী বক্তৃতার মাধ্যমে সর্বস্তরের মুসলিমদের ডেনমার্ক ও তাদের সমর্থনকারী দেশের পন্য বয়কটের উদাত্ত আহ্বান জানান। পাশাপাশি সৌদি আরবের শাসকদেরও আহ্বান করেন, যেন অনতিবিলম্বে ডেনমার্কের দূতাবাস বন্ধ করে তাদের সাথে সবরকম দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়।
তাঁর এ ভাষণের পর হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা রাজধানী রিয়াদ অভিমুখে যাত্রা করেন। এর মাস খানেকের মধ্যে ২০০৬ সালের ১৯ মার্চ পবিত্র মক্কায় হজ্ব পালন শেষ করার সাথে সাথেই শায়েখকে বন্দী করা হয়। প্রথমে তাঁকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। এই পাঁচ বছর পরিবারের সদস্যদের সাথে তাঁর যোগাযোগ ছিল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আর অবর্ণনীয় নির্যাতনের কথা তো বলার অপেক্ষা রাখে না।
এই দণ্ডের মেয়াদ শেষ হলে, তাঁর দণ্ড আরও পনেরো বছর বাড়িয়ে দেয় গাদ্দার সৌদি শাসকরা। এখন, এই পনের বছরের মেয়াদ শেষ হবার আগেই আরও ২০ বছর কারাদণ্ড বৃদ্ধি করা হলো।
সৌদি রাজতন্ত্রের ইসলামি সাইনবোর্ডের ভেতরের কদাকার চিত্রের স্বরূপ বোঝার জন্য শুধু শায়খ খালিদ আর রাশেদের উদাহরণই যথেষ্ট।
সৌদির তাগুত শাসকগোষ্ঠীর রোষানলে পড়ে আরো বহু সংখ্যক উলামায়ে কেরাম কারাগারে বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন। তাদের মধ্যে প্রখ্যাত শায়খ ড. নাসের আল ওমরকেও ১০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে সৌদি শাসকগোষ্ঠী।
শায়খ নাসের আল-ওমর এর অপরাধ ছিল তিঁনি সৌদি আরবে নতুন শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বলতেন। সেই সাথে সৌদি আরবে ক্রুসেডার আমেরিকান সেনাবাহিনী উপস্থিতির বিরুদ্ধেও সরব ছিলেন। ১৯৯০ সালে আরবের ভূমিতে আমেরিকান সেনা আগমনের বিষয়টি আরব ভূমির জন্য সবচেয়ে বড় ভুল বলে উল্লেখ করতেন তিনি। এসব কারণে গত ২০১৮ সালে সম্মানিত এই বয়োজ্যেষ্ঠ আলেমকে গ্রেফতার করে দালাল সৌদি প্রশাসন। এরপর ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হলেও পরবর্তীতে আরও ২০ বছর বাড়িয়ে ৩০ বছর করা হয়।
উল্লেখ যে, বর্তমানে সৌদি আরবে যারাই ইসলাম ও মুসলিমদের পক্ষে কথা বলে এবং সৌদির জালেম প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমানের দ্বীন বিধ্বংসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেন, তাদেরকেই কারাগারে নিক্ষেপ করছে ইহুদি মায়ের সন্তান খ্যাত মুহাম্মদ বিন সালমান। অন্যদিকে যারা মুহাম্মদ বিন সালমানের পক্ষে কথা বলছে এবং তার কুকর্মের পক্ষে সাফাই গাইছে, সেইসব নামধারী দালাল আলেমদেরকে মুহাম্মদ বিন সালমান উচ্চ পদমর্যাদার আসনে সমাসীন করছে; পবিত্র হজের খুৎবা দিতে কিংবা কাবার ঈমাম হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছে।
আল্লাহ তা’আলা সারাবিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় জালিমের কারাগারে বন্দী হওয়া আলিমদের ও মুসলিমদের মুক্তিকে ত্বরান্বিত করুন; তাঁদেরকে ইসলামের পথে অটল রাখুন। আমীন ইয়া রাব্বাল আলামীন।
তথ্যসূত্র:
১। BREAKING! Saudi Authorities Increase Prison Sentence of Sheikh Khaled Al-Rashed For Second Time – https://tinyurl.com/5n879skb
আমি আল্লাহর কাছে ওই দিনটার জন্য দোয়া করছি
যে দিন প্রতিটা গাদ্দার কে গলা কাটা হবে???