মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবকে মহিমান্বিত করা একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের জন্য মহারাষ্ট্র পুলিশ বিড জেলার অষ্টী শহরে ১৪ বছর বয়সী এক মুসলিম ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
ছেলেটিকে ভারতীয় দণ্ডবিধির বিধানের এমন অধীনে অভিযুক্ত করা হয়েছে, যা ধর্মীয় অনুভূতিকে ক্ষুব্ধ করার উদ্দেশ্যে এবং জনসাধারণের দুর্দশা সৃষ্টিকারীর বিরুদ্ধে করা হয়। অথচ, পোস্টে কারো ধর্মীয় অনুভূতিকে ক্ষুব্ধ করবে এমন কোন বিষয় ছিল না। পোস্টগুলিতে অডিও বার্তা সহ ১৮ শতকের মহীশূর শাসক টিপু সুলতান এবং আওরঙ্গজেবের ছবি শেয়ার করা হয়েছে। হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলি দাবি করেছে যে, অডিও বার্তাগুলি হিন্দুদের অনুভূতিতে আঘাত করেছে।
তবে পরবর্তীতে ছেলেটি পোস্ট ডিলিট করে দেওয়ায়, সেখানে ঠিক কোন ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল তা সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
পোস্টের বিষয়ে বিডের পুলিশ সুপার নন্দকুমার ঠাকুর পিটিআই সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছে, “একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে, যার ভিত্তিতে অষ্টী থানায় একটি অপরাধ নথিভুক্ত করা হয়েছে। এরপর, কিছু স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বন্ধের (অবরোধ) ডাক দেয়।”
পুলিশ জানিয়েছে, পাশাপাশি পোস্টটির কারণে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করছে বুঝতে পেরে মুম্বাইতে থাকা ছেলেটি পোস্টটি ডিলিট করে দেয়। শুধু তাই নয়, তার পোস্টের কারণে কেউ আঘাত পেলে ক্ষমা চেয়ে একটি ভিডিওও আপলোড করেছিল সে।
পুলিশ আরও জানায়, “তবুও ছেলেটি যখন শহরে ফিরে আসবে তখন তাকে আটক করা হবে এবং শিশুদের জন্য একটি সংশোধন সুবিধায় রিমান্ডের জন্য শিশু কল্যাণ কমিটির সামনে হাজির করা হবে।”
মূলত হিন্দুত্ববাদীরা মুঘল শাসকসহ অন্যান্য মুসলিম শাসকদেরকে বহিরাগত, দখলদার ও হিন্দুদের উপর নির্যাতনকারী বর্বর হিসেবে তুলে ধরে। ইতিহাসের বই থেকে মুসলিম শাসকদের গৌরবমাখা অবদানগুলো মুছে উপমহাদেশের ইতিহাসকেই বিকৃত করে দিয়েছে হিন্দুত্ববাদীরা। তাই মুসলিম শাসকদের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরলেই হিন্দুত্ববাদীরা অযৌক্তিকভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে, আর শুরু করে মুসলিমদের হয়রানি এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে চাপ প্রয়োগ।
প্রশাসনও অযৌক্তিক এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে মুসলিমদের উপর ধর-পাকর শুরু করে; যেমনটা করা হয়েছে এই ক্ষেত্রে। আর এমন দৃশ্যই এখন একটা সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতজুড়ে।
তথ্যসূত্র:
1. Maharashtra: 14-year-old Muslim boy booked over social media post on Aurangzeb
– https://tinyurl.com/jra4cmx8