‘ইউরোপ জুড়ে মুসলিমদেরকে অন্যায়ভাবে কালো তালিকায় রাখা হয়েছে’

0
844
ইউরোপে বসবাসরত মুসলিমরা ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন। ছবি - প্রেস টিভি

পুরো ইউরোপ জুড়েই মুসলিমদের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ইসলাম বিদ্বেষী পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইউরোপের সাতটি দেশের মুসলিম প্রতিনিধিরা।

গত ৫ অক্টোবর পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে অনুষ্ঠিত সিকিউরিটি অ্যান্ড কোঅপারেশন ইন ইউরোপস (ওএসসিই) হিউম্যান ডাইমেনশন কনফারেন্সে অংশগ্রহণকারী মুসলিম প্রতিনিধিরা আরও অভিযোগ করেন, ইউরোপে ক্রমবর্ধমান ইসলাম বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ার পিছনে রয়েছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা।

অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স, সুইডেন, স্পেন ও নেদারল্যান্ডসসহ সাতটি দেশের মুসলিম সংগঠন এ সম্মেলনে যোগ দেয়। তবে, লন্ডনভিত্তিক একটি মানবাধিকার সংগঠনের পরিচালক মুহাম্মদ রাব্বানিকে এই সম্মেলনে অংশ নিতে পোল্যান্ডে প্রবেশ করতে দেয়নি কর্তৃপক্ষ। তার নাম “শেনজেন ইনফরমেশন সিস্টেম” এ থাকায় তারা এই সিদ্ধান্ত নেয়। উল্লেখ্য, শেনজেন হলো ইউরোপের নিরাপত্তা এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য একটি তথ্য আদান-প্রদান পদ্ধতি।

সম্মেলনে নেদারল্যান্ডসের মুসলিম রাইটস ওয়াচের মুখপাত্র আদানি আল-কানফুদি বলেন, ‘অন্যান্য মুসলিম নাগরিক সংস্থার পাশাপাশি রাব্বানির সাথেও তার সাক্ষাত করার কথা ছিল। তাকে পোল্যান্ডে প্রবেশ করতে না দেয়ার ঘটনাটি একটি বড় উদাহরণ যে, এখানে মুসলিম সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অন্যায়ভাবে কালো তালিকায় রাখা হয়।’

তিনি জানান, ‘আমরা ভয়াবহ বাস্তবতার মধ্যে আছি। এখানে মুসলিমদেরকে পরিকল্পিতভাবে টার্গেট করা হয়, ‘সাংবিধানিক অধিকার নির্লজ্জভাবে লঙ্ঘন করা হয়। এই বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা কেবল ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওপরই প্রয়োগ করা হয় না, বরং আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতি ও বিভাজন সৃষ্টি করা হয়।’

নিজের দেশের অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, শত শত মুসলিমকে ভ্রান্তভাবে সন্ত্রাসী তালিকায় রেখেছে ডাচ কর্তৃপক্ষ। এর ফলে অনেকে জীবিকা হারিয়েছে, অনেকে ব্যাংকিং ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়েছে, অনেকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকের মতো থাকছে।

সুইডেনের প্রতিনিধি আরমান জেজিজ বলেন, তিনি যখন বক্তৃতাটি লিখছিলেন, তখন সুইডেনে একটি মসজিদ পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছিল।

তিনি বলেন, ‘যদি বইপুস্তক পুড়িয়ে দেয়া হয়, মুসলিমদেরকে তাদের পোশাক পরতে দেয়া না হয়, তাদের ওপর সবসময় নজরদারি চালানো হয়, তাদেরকে যদি অব্যাহতভাবে সমস্যা হিসেবে দেখা হয়, তবে তারা কী করবে?’

বাস্তবতা হচ্ছে, শুধু ইউরোপ নয়, পুরো বিশ্ব জুড়েই ইসলাম বিদ্বেষের কালো থাবা ছড়িয়ে পড়েছে। সুইডেন, ডেনমার্কের মতো দেশে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তায় কুরআন পুড়ানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অথচ মুসলিম বিশ্বের নেতৃবর্গ কার্যত নীরব ভূমিকাই পালন করছে। শুধু মৌখিক নিন্দা জানানোর মধ্যেই তাদের প্রতিবাদ সীমাবদ্ধ থাকছে। ফলে, ইসলাম বিদ্বেষীরা ইসলাম ও মুসলিমদেরকে অবমাননা করার আরও সাহস পাচ্ছে।



 

তথ্যসূত্র:

1. Muslims ‘unjustly placed on blacklists’ across Europe, rights groups warn
https://tinyurl.com/yp59un7e
2. Rights groups slam ‘state-sponsored’ Islamophobia facing Muslims across Europe
https://tinyurl.com/bdz7ntt6

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধগাজায় নিষিদ্ধ ফসফরাস বোমা ব্যবহার করছে ইসরাইল
পরবর্তী নিবন্ধগাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ!