গাজায় একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক জায়োনিস্ট সৈন্যের লাশ দেখলো ইসরায়েল। গত ২২ জানুয়ারী সকাল বেলায় গাজার দক্ষিণে জায়োনিস্ট বাহিনীর উপর ২টি ভবন ধসানোর ঘটনায় অন্তত ১১২ দখলদার জায়োনিস্ট সৈন্য নিহত এবং আহত হয়েছে।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরাইলী বাহিনী ও প্রতিরোধ যোদ্ধাদের মাঝে তীব্র সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে বর্তমানে গাজার দক্ষিণে খান ইউনুস এবং এর আশপাশের এলাকাগুলো লড়াইয়ের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে। অঞ্চলটিতে গত ২২ জানুয়ারী মঙ্গলবার সকালে, কাসাম ব্রিগেডের যোদ্ধারা এককভাবে ইসরায়েলি সৈন্যদের বিরুদ্ধে একটি সফল অপারেশন পরিচালনা করছেন। অভিযানটি খান ইউনুস শহরের আল-মাগাজি ক্যাম্পে ২টি ভবন ও ১টি সামরিক ট্যাঙ্ক টার্গেট করে চালানো হয়েছিল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী প্রথম বলেছিল যে, অভিযানে ১০ জায়োনিস্ট সৈন্য নিহত হয়েছে। পরে নিহতের সংখ্যা ২৪ পর্যন্ত আপডেট করে জায়োনিস্ট বাহিনী।
ফিলিস্তিন ভিত্তিক স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, অভিযানটি একটি ট্যাংক ও এমন ২টি ভবন টার্গেট করে চালানো হয়েছে, যেই ভবনগুলো উড়িয়ে দিতে কয়েক ডজন জায়োনিস্ট সৈন্য ভবনগুলোতে শক্তিশালী মাইন স্থাপনের কাজ করছিল। আর ভবনের বাহিরে নিরাপত্তার জন্য আরও কয়েক ডজন সৈন্য পাহারা দিচ্ছিল। ঠিক তখনই আল-কাসসাম যোদ্ধারা প্রথমে বাহিরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা জায়োনিস্ট সৈন্যদের একটি ট্যাংককে আল-ইয়াসিন রকেট দ্বারা লক্ষ্যবস্তু করেন। এর পরপরই মুজাহিদগণ ভবন ২টি লক্ষ্য করে আরপিজি এবং আর্মার ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা আঘাত করেন।
এর ফলে কাসসামের নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্র আর জায়োনিস্টদের স্থাপন করা মাইনগুলো মুহুর্মুহু করে ভবনের ভিতরে বিস্ফোরিত হয়। আর তাতেই এই ভবনগুলি ধ্বসে পড়ে, যখন ভিতরে ইসরায়েলি সৈন্যরা অবস্থান করছে। আর তাতেই ভিতরের থাকা সমস্ত জায়োনিস্ট সৈন্য এবং ভবনের আশপাশে পাহারায় নিয়োজিত অনেক জায়োনিস্ট সৈন্য হতাহত হয়।
সূত্রগুলো বলছে, কাসসাম যোদ্ধাদের এই অভিযানে জায়োনিস্ট বাহিনীর অন্তত ৫০ সৈন্য নিহত হয়েছে। ভবনের ভিতর ও আশপাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে আরও ৩০ আহত সৈন্যকে। আর ভবনের ধ্বংসস্তুপের নিছে নিখোঁজ রয়েছে আরও ২০ এরও বেশি জায়োনিস্ট সৈন্য। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৩ তারিখ সকাল ১০টা পর্যন্ত এলাকাটিতে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করে ইসরায়েল, এতে জায়োনিস্ট বাহিনীতে হতাহতের সংখ্যা ১১২ পর্যন্ত উন্নতি হয়েছে।
জায়োনিস্ট সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি এক বিবৃতিতে জানায়, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়া সেনাদের উদ্ধারে ইসরায়েলি বাহিনী কয়েক ঘণ্টা ধরে কাজ করেছে।
মাগাজি এলাকার কাসসামের বীর মুজাহিদদের এই অভিযানের প্রতীক্রিয়ায় দখলদার জায়োনিস্ট রাষ্ট্রপতি আইজ্যাক হারজোগ বলেছিল, “আজকের সকালটি একটি দুঃখজনক এবং নিষ্ঠুর সকাল, এটি সহ্য করা কঠিন।”
মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছিল, “আজ সকালটা কঠিন এবং বেদনাদায়ক।”
জায়োনিস্ট অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ আল-মাগাজির ঘটনায় মন্তব্য করে বলেছিল, “আজ সকালে এটি মর্মান্তিক খবর।”
জায়োনিস্ট বাহিনীর জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গভির ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের বীরত্বপূর্ণ অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় বলেছিল, “আজ সকালে আমাদের হৃদয় ভেঙে গেছে।”
দখলদার সরকারের জ্বালানি মন্ত্রী বলেছিল, “এটি একটি খুব কঠিন সকাল, এর জন্য কোনো শব্দই যথেষ্ট নয়। গাজা উপত্যকায় ২২ জন সৈন্যকে হত্যা করা একটি উচ্চ মূল্য।”
এদিকে, ইসরায়েলের যুদ্ধ বিষয়ক পরিষদের মন্ত্রী, বেনি গ্যান্টজ বলেছিল, “২১ সৈন্য নিহত হওয়ার বিপর্যয়ের সাথে পুরো ইসরায়েলের জনগণের জন্য একটি কঠিন সকাল।”
এবার আগুনের স্বাদ আস্বাদন করে দেখো খিনজিররা ! কেমন টেস্ট!