ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় আরও ৩৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৩৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ইসরায়েলি বর্বর এই হামলায় নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
বার্তাসংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা বিরতিহীন ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে ৩৬ হাজার ৫০ জনে পৌঁছেছে। অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২৭ মার্চ, সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৮১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। তাদের মধ্যে প্রায় ১১ হাজারের বেশি মানুষের জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন।
মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে সাতটি ‘গণহত্যা’ চালিয়েছে। এতে ৩৩ জন নিহত এবং আরও ৩৮৩ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
এদিন রাফাহতে আল সুলতান এলাকায় বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের একটি তাঁবু ক্যাম্পে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে ৪৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
তাল আল সুলতান শরণার্থীশিবিরে ইসরায়েলের ‘হত্যাযজ্ঞ’ থেকে বেঁচে যাওয়া এক গাজানিবাসি জানান, এই হামলায় তিনি তার পরিবারের পাঁচ সদস্যকে হারিয়েছেন। মাজেদ আল আত্তার নামের ওই ব্যক্তি জানান, তাঁরা গাজার বেইত লাহিয়া এলাকা থেকে রাফায় আশ্রয় নিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাঁবুতে বসে ছিলাম। আচমকা শিবিরে বোমবর্ষণ শুরু হয়। এই হামলায় আমার পরিবারের সদস্যরা জীবন্ত ঝলসে গেছে। মৃতদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা নারীও ছিলেন।’ আত্তার বলেন, গাজায় এখন কোনো নিরাপদ জায়গা নেই। সবখানেই হত্যাযজ্ঞ চলছে।
গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
গত ৭ অক্টোবর পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
তথ্যসূত্র:
1. Gaza death toll from Israeli attacks tops 36,000
– https://tinyurl.com/4c6bmnua