২ কোটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও ৫০ লক্ষে কলেজের অধ্যক্ষ পদ বিক্রি করত দীপু মনি

0
91

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মুদি দোকানি আবু সায়েদকে গুলি করে হত্যার মামলায় সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দীপু মনি ৪ দিনের রিমান্ডে রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানীর বারিধারা থেকে ১৯ আগস্ট রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত ১১ বছরে পররাষ্ট্র, শিক্ষা ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছে সে। সবচেয়ে আলোচিত ছিল শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালে।

দীপু মনির দুর্নীতি-অনিয়ম সম্পর্কে জানলেও ভয়ে মুখ খোলেনি তার মন্ত্রণালয়ের সচিবরা। অনেকে বলছেন, মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগ পর্যন্ত তার হাত ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) নিয়োগের জন্য দুই কোটি এবং কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য সে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ নিত। তার সময়ে শিক্ষা খাতে এটি ছিল ‘ওপেন সিক্রেট’।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের চার মেয়াদের মধ্যে তিন মেয়াদে ভিন্ন তিনটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিল দীপু মনি। ক্ষমতার অপব্যবহার করে দীপু মনি নিজে ও তার স্বজনরা জড়িয়ে পড়ে দুর্নীতিতে।

দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালে তার ভাই টিটুর মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্যের এক বিশাল রাজত্ব কায়েম করে। সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি ও কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগের বিষয়টি। শিক্ষা প্রশাসনে প্রতিটি বদলিতে তার ভাইয়ের হাতে ছিল পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ। সর্বনিম্ন দুই লাখ থেকে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকায় বেচাবিক্রি হতো শিক্ষা প্রশাসনের নানা পদ।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শুধু ঢাবি, রাবি, চবি, জাহাঙ্গীরনগর বাদে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগে কমবেশি আর্থিক লেনদেন হয়েছে। শেষ সময়ে ‘২ কোটি দাও ভিসি হও’- এমন একটি কথা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিয়োগ বাণিজ্যে মেতে ওঠে ভিসিরা।

ইউজিসির সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশের ইতিহাসে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের কোনো নজির ছিল না। কিন্তু দীপু মনি সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, নোট গাইড বিক্রি নিষিদ্ধ হলেও সারা দেশে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে এসব বই। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৯৭ শতাংশ শিক্ষার্থী নোট বা গাইডের ওপর নির্ভরশীল। মুখে নোট গাইড বইয়ের বিরোধিতা করলেও দীপু মনি নোট-গাইড বিক্রেতাদের কাছ থেকে নিয়মিত কমিশন নিত বলে অভিযোগ রয়েছে। এ কাজে তাকে সহায়তা করতো এক প্রকাশনীর মালিক। সেই প্রকাশনীর মালিকের বাড়ি চাঁদপুরে।

ঢাকার এক নোট-গাইড প্রকাশক জানান, তিন মাস পরপর অন্তত ২৫ কোটি টাকা কমিশন নিত দীপু মনি।


তথ্যসূত্রঃ
১. ২ কোটিতে ভিসি পদ বিক্রি করতেন দীপু মনি
– https://tinyurl.com/28dk7kd8

২. ২ কোটিতে ভিসি, ৫০ লাখে অধ্যক্ষ পদ বিক্রি করতেন দীপু মনি
– https://tinyurl.com/4v4mnwc6

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধবন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫২, সবচেয়ে বেশি ফেনীতে
পরবর্তী নিবন্ধতিন কাশ্মীরি যুবককে শহীদ করেছে দখলদার ভারতীয় সেনারা