
ভারতের জন্য কৌশলগতভাবে সবচেয়ে স্পর্শকাতর অঞ্চল ‘চিকেনস নেক’ বা শিলিগুড়ি করিডোরে ব্যাপক সামরিক শক্তি মোতায়েন করেছে নয়াদিল্লি। মাত্র ২২ কিলোমিটার প্রশস্ত এই করিডোর দিয়েই ভারতের মূল ভূখণ্ড সংযুক্ত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যের সঙ্গে। এই ভূখণ্ডটির চারপাশে রয়েছে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান ও চীনের সীমান্ত।
গত ৪ এপ্রিল এক প্রতিবেদনে ইন্ডিয়ান ডিফেন্স নিউজ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বিমসটেক সম্মেলনের পরপরই করিডোরে নিরাপত্তা জোরদার করে ভারত। এর মধ্যে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, রাফায়েল যুদ্ধবিমান, ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রসহ একাধিক অত্যাধুনিক অস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছে। করিডোর লাগোয়া সুকনায় অবস্থিত ‘ত্রিশক্তি কর্পস’-এর সদরদপ্তর ইতিমধ্যেই ভারতীয় সামরিক শক্তির অন্যতম ঘাঁটি হয়ে উঠেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, যত সামরিক আধুনিকীকরণই করা হোক না কেন, করিডোরটির ভৌগোলিক সংকীর্ণতা ভারতের জন্য একটি কৌশলগত দুর্বলতা। কারণ সামান্য অবরোধেই এই করিডোর বিচ্ছিন্ন হয়ে ভারতের সাতটি রাজ্যের সঙ্গে সংযোগ ছিন্ন হতে পারে।
ভারতের সেনাপ্রধান সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে, ‘চিকেনস নেক আর ঝুঁকি নয়, বরং এটি ভারতের সবচেয়ে সুরক্ষিত সামরিক অঞ্চল হয়ে উঠবে।’ কিন্তু পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই ধরনের ঘোষণা মূলত ভারতের দুর্বল জায়গাকে ঢাকার কৌশল হিসেবেই দেখা যেতে পারে।
উল্লেখযোগ্য যে, ২০১৭ সালে ভুটানের দোকলাম অঞ্চলে চীন সেনা মোতায়েন করলে ভারতের সঙ্গে বড় ধরনের উত্তেজনা দেখা দেয়। ওই সময়ই শিলিগুড়ি করিডোরের নিরাপত্তা প্রশ্নে ভারতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। সেই উত্তেজনার ধারাবাহিকতায় ভারত এখন এই অঞ্চলে প্রতিরক্ষা ঘাঁটি মজবুত করছে।
সব মিলিয়ে, শিলিগুড়ি করিডোর ভারতের জন্য এক কৌশলগত সংকটের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। আঞ্চলিক উত্তেজনার যে কোনো প্রভাব এই করিডোরের মাধ্যমে ভারতের ভূখণ্ডগত অখণ্ডতায় সরাসরি আঘাত হানতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তথ্যসূত্র:
1. India Fortifies ‘Chicken’s Neck’ As Bangladesh, China Eye Strategic Corridor
– https://tinyurl.com/3u5sb7t2