
ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েলের অব্যাহত অবরোধ এবং বর্বর আগ্রাসনের কারণে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনুস শহরের নাসের হাসপাতালে ২৬ জুন, বৃহস্পতিবার দুই নবজাতক শিশু অনাহারে মারা গেছে।
স্থানীয় ও চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে, এই দুই শিশুর মৃত্যুর কারণ মারাত্মক অপুষ্টি ও শিশুখাদ্যের সংকট। কয়েক মাস যাবত অবরুদ্ধ গাজায় কোনো ধরনের খাদ্য, ওষুধ বা শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় ফর্মুলা দুধ প্রবেশ করতে দিচ্ছে না দখলদার ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল। ফলে হাজার হাজার শিশু এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
এই শিশুদের পরিবার জানায়, তাদের সন্তানেরা খাবার না পেয়ে দীর্ঘদিন ধরে ধুঁকছিল। আশপাশে কোনো হাসপাতাল কাজ করছে না, আর নাসের হাসপাতালেও প্রয়োজনীয় ওষুধ, অক্সিজেন বা দুধ ছিল না। মৃত্যুর পরে দুই শিশুর দেহ দাফনের সময় বহু মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়েন। এক অভিভাবক বলেন, “আমরা যেন জীবিত অবস্থাতেই আমাদের সন্তানদের কবর দিলাম।”
নাসের হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, “খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে ইসরায়েল একটি নতুন ধরনের যুদ্ধ চালাচ্ছে—এটা হলো মানবিক অবকাঠামো ধ্বংস করে গণহত্যা। এই দুই শিশুর মৃত্যু কেবল শুরু মাত্র।”
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, অবরোধের ফলে প্রায় ৩০ হাজার নবজাতক চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। গাজায় বর্তমানে শিশুখাদ্য, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, এবং জীবন রক্ষাকারী ওষুধের চরম সংকট চলছে।
ইসরায়েলি এই মানবতাবিরোধী বর্বরতার বিরুদ্ধে তথাকথিত মানবাধিকারের বড় বড় মুখোশধারী পশ্চিমা দেশগুলো বরাবরের মতো এবারও নির্লিপ্ত। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা আমেরিকা— কেউই এসব শিশু হত্যার বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বরং তারা অবরোধের পেছনে নীরব সমর্থন দিয়েই চলেছে।
এই দুই শিশুর মৃত্যু কেবলমাত্র একটি ঘটনার প্রতিফলন নয়—বরং এটি এক গোটা জাতির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক গণহত্যার প্রমাণ। ইসলামফোবিয়ায় আক্রান্ত পশ্চিমা বিশ্ব এবং ইহুদিবাদী দখলদার ইসরায়েলের এই জোট মুসলিম শিশুদের জীবনকেও রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। গাজার দুই শিশুর এই মৃত্যু আমাদের মনে করিয়ে দেয়—ইহুদিবাদী ইসরায়েল কেবল বোমা-গুলির মধ্য দিয়েই নয়, বরং খাদ্য, পানি ও ওষুধের পথ বন্ধ করেও একটি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার নীলনকশা বাস্তবায়ন করছে।
তথ্যসূত্র:
1.Amid ‘Israel’s’ brutal blockade, 2 babies die of malnutrition in Gaza
– https://tinyurl.com/yc8f7hsy