
ইহুদিবাদী দখলদার পক্ষ ইসরায়েল এবার সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ সংঘাতে সরাসরি হস্তক্ষেপের নয়া অপকৌশল গ্রহণ করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল-সমর্থিত দ্রুজ নেতা শেখ হিকমত আল-হিজরির মিলিশিয়া বাহিনীকে শক্তিশালী করতে শত শত দ্রুজ যোদ্ধাদের সিরিয়ায় প্রবেশের বিশেষ অনুমতি দিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এই যোদ্ধাদের সিরিয়ায় পাঠানোর মূল উদ্দেশ্য হলো সিরীয় সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে হিজরি বাহিনীকে শক্তিশালী করা এবং দেশটিতে অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করা।
দখলদার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে দ্রুজ সম্প্রদায়ের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য থাকায়, ইহুদিবাদী রাষ্ট্রটি দ্রুজদের ব্যবহার করে সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিভেদকে আরও গভীর করতে চাইছে। এই পদক্ষেপ সিরিয়ার স্বাধীনতা লঙ্ঘনের পাশাপাশি পুরো অঞ্চলে নতুন করে সংঘাতের জন্ম দিতে পারে।
সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের সুওয়াইদা প্রদেশে গত কয়েকদিন ধরে দ্রুজ ও বেদুইন গোষ্ঠীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলছে। এই সংঘাতকে কেন্দ্র করে সিরীয় সরকার সুওয়াইদায় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করলে, ইসরায়েলি বাহিনী সিরীয় সেনাদের ওপর বিমান হামলা চালায়। ইসরায়েল দাবি করেছে যে তারা দ্রুজদের রক্ষা করতে হামলা চালাচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে এটি সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের একটি কৌশলমাত্র।
দখলদার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইসরায়েলি দ্রুজ নাগরিকদের মধ্যে থেকে স্বেচ্ছাসেবক বাছাই করে তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে সিরিয়ায় পাঠাচ্ছে। এসব যোদ্ধাদের হিজরি মিলিশিয়ার পক্ষে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য সুওয়াইদায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলে বসবাসকারী দ্রুজরা দেশটির সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দ্রুজদেরকে তাদের “ভ্রাতৃত্বপূর্ণ মিত্র” হিসেবে প্রচার করলেও, বাস্তবে এ সম্প্রদায়কে ব্যবহার করেই ইসরায়েল সিরিয়া, লেবানন ও ফিলিস্তিনে নিজস্ব আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
ইসরায়েলি দ্রুজ নেতা ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা ফাতিন মুল্লা সম্প্রতি বলেছে, “আমরা সিরিয়ার দ্রুজদের রক্ষায় ইসরায়েলের ভূমিকা সমর্থন করি, কিন্তু আসলে ইসরায়েলের উদ্দেশ্য হলো সিরিয়াকে দুর্বল করে নিজেদের আধিপত্য কায়েম করা”।
সিরীয় সরকার দখলদার ইসরায়েলের এই হস্তক্ষেপকে “আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন” হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে। সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “ইসরায়েলের এই আগ্রাসী কর্মকাণ্ড সিরিয়ার স্থিতিশীলতা ধ্বংসের জন্য পরিকল্পিত একটি ষড়যন্ত্র।”
ইসরায়েলের এই সাম্প্রতিক কার্যক্রম প্রমাণ করে যে, ইহুদিবাদী দখলদার রাষ্ট্রটি কেবল ফিলিস্তিনেই নয়, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য কাজ করছে। দ্রুজ সম্প্রদায়কে ব্যবহার করে সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ সংঘাতকে উস্কে দেওয়ার এই নীলনকশা আসলে পাশ্চাত্যের মদদপুষ্ট একটি গভীর ষড়যন্ত্র।
তথ্যসূত্র:
1. Dozens of Israeli Druze cross border into Syria at Majdal Shams: ‘There’s guerrilla warfare in the streets’
-https://tinyurl.com/3za2yazm
2. ⚡️The Israeli army has allowed hundreds of Palestinian Druze to enter Syria to join the Israel-backed Hijri militias in their war against the Syrian government.
– https://tinyurl.com/yrxsc6ur