ভারত সরকার নাগরিকত্ব দেয়ারা নামে মুসলিম বিদ্বেষী যে আইন পাশ করেছে তা মূলত মুসলমানদের একঘরে করে ভারতকে হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র করার ঘৃণ্য প্রয়াস চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলেম আল্লামা শাহ আহমদ শফী। গতকাল সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোতে অমুসলিম সংখ্যালঘুরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছে বলে দাবী করে ভারত পার্শ্ববর্তী তিনটি দেশ বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের যারা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছেন, এসব অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেবে আর মুসলমানদের বিতাড়িত করবে।
আল্লামা আহমদ শফী বলেন, মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে মুসলমানদের উপর যেভাবে জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে তা পরিস্কার রাষ্ট্রীয় নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। মোদি সরকারের বিরুদ্ধে মুসলমানদের পাশাপাশি যেভাবে সাধারণ জনগণ ফুঁসে উঠেছে তা বিজেপি সরকারের প্রতি চরম অনাস্থা ও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।
ভারতের মুসলমান ধৈর্যশীল, তবে একথা ভুলে গেলে চলবে না, মুসলমান ধৈর্যশীল তবে ভীরু নয়। মুসলমানগণ প্রতিরোধ গড়ে তুললে মোদির মসনদ তছনছ হয়ে যাবে।
হেফাজত আমীর আরো বলেন, ভারতের দীর্ঘ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও অবদানে মুসলমানদের নাম মিশে আছে। ভারতের ঐতিআহাসিক প্রায় স্থাপত্য মুসলমানদের তৈরি। চাইলেই এসব মুছে দেয়া যায় না। ভারতীয় মুসলমানদের কাছে পুরো বিশ্ব ঋণী। বিজেপিসহ কট্টরপন্থী হিন্দু সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর ধারাবাহিক যে নির্যাতন নিপীড়ন চালাচ্ছে তা করে ভারতকে মুসলিমশূন্য করা যাবে না। বরং এসব নির্যাতন নিপীড়ন মোদি ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর পতন ডেকে আনবে।
আল্লামা আহমদ শফী আরো বলেন, কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতা গ্রহণ করার পর থেকে ভারতীয় মুসলমানগণ চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছে। ভারতকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সাম্প্রদায়িক সহবস্থানের দেশ দাবী করলেও শুধু মুসলিম হবার অপরাধে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। কাশ্মিরের মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে, মা বোনদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। মোদি সরকারের একথা জেনে রাখা উচিৎ, জুলুম-নির্যাতন করে মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করা যাবে না।
আমীরে হেফাজত বলেন, ইসলাম সবসময় মানবাধিকারের কথা বলে। শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার কথা বলে। অমুসলিম সম্প্রদায়কে নিরাপত্তা দানের কথা বলে। আর বাংলাদেশি মুসলমানগণ বারবার তা প্রমাণ করে দেখিয়েছে। মানবপ্রাচীর তৈরি করে মন্দির পাহারা দেয়ার নজীর আমরা দেখিয়েছি। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে বসবাস করছে। অথচ ভারতে এর উল্টো চিত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি। ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় সবসময় সংখ্যাগরিষ্ট হিন্দু সম্প্রদায় কর্তৃক নির্যাতিত নিপীড়িত হচ্ছে। ভারতের উচিৎ হবে নিজেদের দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা।