আফগানের মুসলিম সমাজে মসজিদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শান্তিকামী আফগানের মুসলিম জনগণ সত্য দ্বীন ইসলামের অনুসারী।তাই,মসজিদগুলো কেবল ইবাদতের স্থান হিসাবেই বিবেচনা করা হয় না। বরং, মসজিদ সবার কাছে জালিম-কাফিরদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হবার কেন্দ্র হিসাবেও কাজ করে।
সম্প্রতি আমারা লক্ষ করছি বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানে বিশেষত কাবুলের বিভিন্ন জায়গায় ইসলাম ও মুসলিমদের শত্রুদের দ্বারা মসজিদ এবং ধর্মীয় স্থানগুলোয় হামলা হচ্ছে।
শান্তি-চুক্তি স্বাক্ষরিত হবার পর থেকেই আফগানিস্তানের শান্তির শত্রুরা এর সর্বনাশ করার সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিভিন্ন কূটকৌশলে সক্রিয়ভাবে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিকভাবে শান্তি-চুক্তির বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে।আমারা দেখছি, কাবুলের ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলিতে ঘন ঘন আক্রমণ হচ্ছে।বিশিষ্ট রাজনৈতিক ও জনপ্রিয় ব্যাক্তিদের হত্যাকান্ড,মসজিদ ও জনবহুল এলাকায় বোমা হামলা ও জানাযার নামাজে বোমা হামলায় অবর্ণনীয় ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো শান্তি প্রক্রিয়াকে স্তব্ধ করার অপপ্রয়াস মাত্র। ধূর্ত শত্রু যে কোন মূল্যে শান্তি প্রক্রিয়াটিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। বিগত দুই দশক ধরেই ইসলামের শত্রুরা মারাত্মক ও ধ্বংসাত্মক চক্রান্তের মাধ্যমে বিদেশীদের অবস্থান দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করছে।
শান্তি প্রক্রিয়াটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার লক্ষ্যে, জনবহুল শহরগুলিতে বিশেষত কাবুলের ধর্মীয় কেন্দ্রগুলিকে প্রধান টার্গেটে পরিনত করা হয়েছে। যাতে আফগানিস্তানে ধর্মীয় ও জাতিগত বিদ্বেষ ঘটাতেপারে। এই কুচক্রী মহল দীর্ঘদিন ধরে কূটকৌশল অবলম্বন করছে যাতে ইরাক ও অন্যান্য দেশগুলির মতো আফগান সমাজের মধ্যেও আগুন জ্বালাতে পারে।
ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান প্রমাণ করেছে যে কাউকে কখনও আফগানিস্তানের শান্তির বিরুদ্ধে কাজ করতে দেয়া হবে না। আফগানিস্তান ইসলামের শত্রুদের পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেবে ইনশাআল্লাহ।
সম্প্রতি, আফগানের একটি স্বাধীন সংবাদমাধ্যম একটি ডকুমেন্টারি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভিডিওতে তারা প্রমাণ করেছে যে “এনডিএস”নামে কাবুলের পুতুল প্রশাসনের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা এইসব হামলার সাথে জড়িত। সংস্থার সিনিয়র কর্মকর্তারা এসব সন্ত্রাসবাদী হত্যাকাণ্ড, বোমা হামলা,রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের হত্যা, ধর্মীয় আলিমদের হত্যা, সমাজকর্মী ,মসজিদ ও জনবহুল স্থানে বোমা হামলাসহ ধর্মীয় কেন্দ্রগুলিতে হামলার সাথে সরাসরি জড়িত রয়েছে।
ভিডিওতে দেখা গেছে যে বেশিরভাগ সন্ত্রাসী তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে। কাবুল প্রশাসনের গোয়েন্দা সংস্থা বিশেষ করে ৬২তম অধিদপ্তর এই জঘন্য হামলা চালানোর জন্য সন্ত্রাসীদের সহায়তা করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা তাদের পরিচালক ও অদূর ভবিষ্যতে মারাত্মক ক্ষতিকর পরিকল্পনার তথ্যও প্রকাশ করে। এই ভিডিও এর মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের শান্তি প্রক্রিয়াকে নষ্ট করার লক্ষ্যে সক্রিয় ও নিয়মতান্ত্রিক নাশকতা কর্মসূচিতে নিযুক্ত কাবুল প্রশাসনের নিকৃষ্ট চেহারা উন্মোচিত হয়েছে।
ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান ইতোমধ্যে দেশের পুরো অঞ্চল থেকে দায়েশ মিলিশিয়াদের সরিয়ে দিয়েছে এবং তাদের অবশিষ্ট এলাকা ও আশ্রয়স্থলে গভীরে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জেনে রাখা উচিত যে, আফগানিস্তানের সংঘাতের রাজনৈতিক সমাধানের জন্য একমাত্র পথ হলো বিদেশি বাহিনীর পুরোপুরি প্রত্যাহার করা। এটিই একমাত্র পদ্ধতি যার মাধ্যমে আফগানে স্থায়ী শান্তি,সমৃদ্ধি, ও কার্যকর স্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হবে।
right