মসজিদ ভেঙে শপিং মল ও মাদরাসা উচ্ছেদ করে পার্ক করার অভিযোগ এনে মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে সমাবেশ করেছে নারায়ণগঞ্জ ওলামা পরিষদ।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর শহরের চাষাড়া এলাকার বাগে জান্নাত মসজিদের সামনে কয়েক হাজার মুসল্লি ও শত শত আলেম-ওলামা এই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।
মুসল্লিদের অভিযোগ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আইভী প্রায় অর্ধশত বছরের প্রাচীন বাগে জান্নাত মসজিদ ও মাদরাসা ভেঙে ফেলতে চিঠি দিয়েছে।
এদিকে সমাবেশ থেকে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীর বিরুদ্ধে ফতোয়া দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ ওলামা পরিষদের প্রায় অর্ধশত ওলামা।
তারা এ সময় শহরের কয়েকটি মসজিদ ও মাদরাসা দখল ও ভাঙার প্রতিবাদ জানিয়ে মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ মহানগর ওলামা পরিষদের সভাপতি মুফতি ফেরদাউসুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাদানীনগর মাদরাসা মোহতামিম ও নারায়ণগঞ্জ হেফাজত ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মুফতি বশীরউল্লাহ।
সমাবেশে মুফতি বশীরউল্লাহ বলেন, ফতুল্লার মাসদাইর সিটি কবরস্থানের বহু পুরানো একটি মাদরাসা ২ বছর আগেই মেয়র আইভী উচ্ছেদ করে দিয়েছে। কিন্তু কথা দিয়েও সেই মাদরাসা আজও করে দেওয়া হয়নি। শহরের বাগে জান্নাত মসজিদ সংলগ্ন মাদরাসা উচ্ছেদে চিঠি দিয়েছে। এমনকি মেয়র আইভী নিজে এসেই মাদরাসাটি উচ্ছেদে কঠোর ভাষায় তাগিদ দিয়েছে। সে মসিজদটি ভেঙে সেখানে বহুতল শপিং কমপ্লেক্স ও মাদরাসা ভেঙে পার্ক করতে চাচ্ছে। অথচ সে পাশের রামকৃষ্ণ মিশনে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা দিয়ে প্রধান ফটক বানিয়ে দিচ্ছে, মাজারের জন্য সিটি কর্পোরেশনের জায়গা ছেড়ে দিচ্ছে। মেয়র আইভীর এসব দ্বৈত নীতি আমাদের হৃদয়ে রক্তরক্ষণ করছে।
এ সময় উপস্থিত ওলামারা ফতোয়া চাইলে মুফতি বশীরউল্লাহ বলেন, কিতাবের পরিস্কার নির্দেশনা মতে একজন মুসলমান হয়ে মেয়র আইভী মন্দিরে গিয়ে সিদুর এটে প্রতীমার সামনে করোজোরে নমস্কার করে ও মাজারে কপাল ঠেকিয়ে শিরিক করেছেন, ইসলামের বিধান ভঙ্গ করেছেন। তাই মেয়র আইভী এখন মুসলমানের কাতারে নেই, সে একজন মুশরিকের কাজ করেছে। সে মুসলমান হিসেবে নিজেকে দাবি করতে পারে না। তার উচিত আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে পুনরায় কালেমা পাঠ করা অথবা ঘোষণা দিতে হবে তিনি কোন ধর্মে থাকবে’।
এদিকে সমাবেশের আগে জুমার নামাজের পর ওই মসজিদের অভ্যন্তরেও এই ইস্যুত ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুসল্লিরা।
সেখানে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রয়োজনে কাউন্সিলর পদ থেকে পদত্যাগ করব, বুকের তাঁজা রক্ত ঢেলে দেব। কিন্তু মসজিদ মাদরাসা ভেঙে শপিং মল আর পার্ক করতে দেব না। আল্লাহর ঘর মসজিদ আর পবিত্র কোরআন হাদিস যেখানে পড়ানো হয় সেই মাদরাসার প্রশ্নে আমরা ছাড় দেব না।
মসজিদ কমিটির সদস্য ও মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু বলেন, ছোট বেলায় দেখেছি এখানে টিনের ঘরে নামাজ হতো। সম্পূর্ণ মুসল্লিদের অনুদানে সেই মসজিদ এখন ৩ তলা। সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এখানে মসজিদ ভেঙে শপিং মল আর মাদরাসা ভেঙে পার্ক করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। এই উদ্যোগ কখনোই বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না। মসজিদের উন্নয়ণ করতে চাইলে উপরে পিলার দিয়ে করেন, কিন্তু শপিং মল করে দোকান বাণিজ্য করবে সেটা হবে না।
স্পষ্ট ফতওয়ার জন্য আল্লাহ তাআলা আলেমদেরকে উত্তম বিনিময় দান করুন, আমীন।