রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) হলে অবৈধভাবে অবস্থান ও হল প্রাধ্যক্ষকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় হল প্রশাসন জরুরি সভা ডেকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার কক্ষটি সিলগালা করে দিয়েছে। একই সঙ্গে নগরীর মতিহার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ আবাসিক হলে এ ঘটনা ঘটে। ২০শে ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার কক্ষ সিলগালা এবং জিডি করেছে হল প্রশাসন।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম শামীম হোসেন। সে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং নবাব আব্দুল লতিফ হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৩–১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শামীম। বর্তমানে তার ছাত্রত্ব নেই।
সোমবার বিকেলে শামীম হোসেনের বিরুদ্ধে হল প্রাধ্যক্ষ অভিযোগ করেন, ওই ছাত্রলীগ নেতা মোবাইল ফোনে হুমকি ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। পরে হল প্রশাসন জরুরি সভা ডাকে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে শামীমকে মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু শামীম কক্ষ ত্যাগ না করলে দুপুরে হল প্রশাসন তার ২১২ নম্বর কক্ষ সিলগালা করে দেয়। বিকেলে হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগরীর মতিহার থানায় জিডি করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৩ জুন নবাব আব্দুল লতিফ হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে মাঝরাতে নির্যাতনের অভিযোগে শামীম হোসেনকে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। প্রশাসনের সেই নির্দেশ তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে হলে অবস্থান করে সে। এছাড়া আবাসিক শিক্ষার্থীকে আসন থেকে নামিয়ে দেওয়াসহ হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবাব আব্দুল লতিফ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এএইচএম মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা শামীম হোসেনকে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবুও সে অবৈধভাবে হলে অবস্থান করতে থাকে। তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা বিরোধী আরও বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।’
বর্তমান অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রাধ্যক্ষ বলেন, ‘গতকাল শামীম আমাকে মোবাইল ফোনে হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও দু–তিনটা লাশ ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে হল প্রশাসন তার কক্ষ সিলগালা করেছে।’
তবে ‘আজকের পত্রিকা’র সূত্রে জানা যায়, হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করেছে ছাত্রলীগ নেতা শামীম হোসেন। সে বলেছে, ‘আমি শুধু বলেছিলাম, স্যার, বিভিন্ন রুমে তালা লাগাচ্ছে কারা? চুরির ঘটনাও ঘটছে। এগুলো কারা করছে? উনি বলেছিলেন, রুমে রুমে পাহারা দেওয়ার সময় নাই। তখন আমি বলেছিলাম, কোনো ব্যবস্থা না নিলে তো হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে, তখন বড় ধরনের ঘটনাও ঘটে যেতে পারে। এটুকুই বলেছি। এছাড়া কোনো হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি।’
তথ্যসূত্র:
১. রাবির হলে ছাত্রত্ব হারানো ছাত্রলীগ নেতা, লাশ ফেলার হুমকি প্রাধ্যক্ষকে
– http://tinyurl.com/yekywhzv