গাজায় এখন ইসরায়েলের চাপানো ক্ষুধার যন্ত্রণায় মারা যাচ্ছে অসংখ্য মানুষ

0
89

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় এখন সন্ত্রাসী ইসরায়েলের ছোড়া গুলি ও বোমার চেয়ে দেশটির ইচ্ছাকৃতভাবে চাপিয়ে দেওয়া ক্ষুধায় বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন ‘খাদ্য অধিকার’বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত মাইকেল ফখরি।

গাজার ক্ষুধা পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এক নতুন প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন মাইকেল ফখরি। এরপর তিনি ওই মন্তব্য করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় দুর্ভিক্ষজনিত ক্ষতির রেশ টানতে হবে ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যৎ কয়েক প্রজন্মকে। ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় খাদ্যের উৎপাদন ও সরবরাহব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিষক্রিয়ায় কৃষিজমি অনাবাদি করে ফেলা এবং খেতখামার, বন্দর ও মাছধরা নৌযানগুলো ধ্বংস করা। এতে গাজার পুরো জনগোষ্ঠী মানবিক ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।

যুদ্ধ–পরবর্তী ইতিহাসে কখনো কোনো জনগোষ্ঠীকে এত দ্রুত ক্ষুধার সম্মুখীন ও তীব্র ক্ষুধায় পতিত হতে দেখা যায়নি; যেমনটা ঘটেছে গাজায় বসবাসরত ২৩ লাখ মানুষের ক্ষেত্রে।

গাজার সমগ্র জনগোষ্ঠী বা এর অংশবিশেষকে ধ্বংস করার অভিপ্রায়ে ইসরায়েল ক্ষুধাকে ব্যবহার করছে। গত বছরের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু করার পর এ উপত্যকায় ৩৪ ফিলিস্তিনি না খেয়ে মারা গেছেন বলে এখন পর্যন্ত জানা গেছে। তাদের বেশির ভাগই শিশু।

গাজাবাসীর এই নির্ভরশীলতা পুঁজি করে তাদের ক্ষতি করতে ও মেরে ফেলতে রাজনৈতিক ও সামরিক অস্ত্র হিসেবে মানবিক ত্রাণ ব্যবহার করেছে ইসরায়েল। এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে মানবিক ত্রাণ প্রবেশে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করার বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।

এক্সে দেওয়া পোস্টে ফখরি বলেন, গাজাবাসীকে ক্ষুধায় মেরে ফেলার ইসরায়েলি কৌশলের শুরু ৭ অক্টোবরের অনেক আগে থেকেই। এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, গাজায় খাদ্য প্রবেশে দেশটি বাধা দেওয়া শুরু করে সেই ১৯৯১ সালে আর ২০০০ সাল থেকে উপত্যকাটি পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে রেখেছে তারা। এ অপতৎপরতা এখন শুধু গাজাতেই সীমাবদ্ধ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গত ৭০ বছরের বেশি সময় ধরেই ফিলিস্তিনিদের খাদ্যব্যবস্থা ধ্বংস করে আসছে দখলদার ইসরায়েল। এ সময়ের মধ্যে দেশটি তাঁদের বাগান ও খামার ধ্বংস করেছে। এ ছাড়া হয়রানি বা হত্যা করেছে কৃষক, জেলে ও মেষপালকদের। নিজ বাড়িঘর ও এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের উৎখাত করার লক্ষ্যে ইসরায়েলি চেষ্টার অংশ তাঁদের (ফিলিস্তিনি) ক্ষুধায় রাখার এ কৌশল। এ সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় ইসরায়েলের ওপর বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অবরোধ আরোপ করা।


তথ্যসূত্র:
1. War on Gaza: Palestinians face ‘deliberate starvation’ by Israel, says UN expert
– https://tinyurl.com/4szzxdfx

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধসেপ্টেম্বরের প্রথম দশকে সাহেল অঞ্চলে মুজাহিদদের ৯ অভিযান
পরবর্তী নিবন্ধগাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন, নিহতের সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়ালো