ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী গাজায় চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেশটিকে অব্যাহতভাবে সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তাই ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর প্রতি সহায়তার অভিযোগে এবং অভিযুক্ত ইউনিটগুলোর সামরিক সহায়তা বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ৫ ফিলিস্তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় ১৭ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার এই মামলাটি করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের গত শতকের ৯০-এর দশকের ‘লেহি আইনের’ আওতায় মামলাটি করা হয়েছে। মামলায় বিচারবহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে ওই ৫ ফিলিস্তিনি বলেছেন, ‘লেহি আইন পররাষ্ট্র দপ্তর চাইলে প্রয়োগ করতে পারত। কিন্তু তারা তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে নজিরবিহীনভাবে ইসরায়েলের মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন যেভাবে বেড়েছে, তা ভয়ংকর।’
৫ জন বাদীর মধ্যে একজন গাজায় বসবাসকারী। তিনি পেশায় শিক্ষক। তার ছদ্মনাম আমাল গাজা। ওই নারী এক বিবৃতিতে জানান, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তিনি এখন পর্যন্ত সাতবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ইসরায়েলি হামলায় তার পরিবারের ২০ সদস্য নিহত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমার দুঃখ-কষ্ট ও আমার পরিবারের অকল্পনীয় ক্ষতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে, যদি যুক্তরাষ্ট্র চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী ইসরায়েলের ইউনিটগুলোর কাছে সামরিক সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে।
উল্লেখ্য, এদিকে গত বছরের অক্টোবরের শুরু থেকে গাজায় বোমবর্ষণ ও স্থল অভিযান পরিচালনা করছে ইসরায়েল। এতে ৪৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘ ও বিশ্বের প্রধান মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যাসহ নানা ধরনের যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছে।
গাজায় বেশ কয়েকটি মারাত্মক হামলায় ইসরায়েলি বাহিনী যে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অস্ত্র ব্যবহার করেছে, সে বিষয়টিও তুলে ধরেছে বিভিন্ন মানবাধিকার গ্রুপ। নির্বিচারে এসব হামলায় বহু বেসামরিক ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে বছরে কমপক্ষে ৩.৮ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দেয়। তবে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলকে অতিরিক্ত ১৭.৯ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা দিয়েছে বলে ব্রাউন ইউনিভার্সিটির গবেষকদের ধারণা।
তথ্যসূত্র:
1. Palestinians sue State Department over US assistance to Israel’s military
– https://tinyurl.com/2n84a4xz