আরেকটি মুসলিম বিরোধী তালিকা করছে ভারতের হিন্দুত্ববাদি সন্ত্রাসী মোদি সরকার

0
961
আরেকটি মুসলিম বিরোধী তালিকা করছে ভারতের হিন্দুত্ববাদি সন্ত্রাসী মোদি সরকার

মুসলিম বিরোধী কথিত বিতর্কিত নাগরিক পঞ্জি ও নাগরিকত্ব আইনের পর এবার ভারত জুড়ে আদমশুমারি ও জনসংখ্যা জরিপ (ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার) করার পরিকল্পনা করছে হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকার তথা কথিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।

আগামী বছর থেকে ওই আদমশুমারি শুরু হবে বলে জানিয়েছে বিবিসি বাংলা। তবে, সমালোচকেরা বলছেন, তালিকাটি হবে আরেকটি মুসলমান বিরোধী তালিকা।

কেননা জরিপ চালানোর সময় কোনও নাগরিক সম্পর্কে যদি কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়, তাহলে তাকেই প্রমাণ করতে হবে তিনি ভারতের নাগরিক।

ভারতে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে অব্যাহত বিক্ষোভের মধ্যেই নতুন করে একটি আদমশুমারি ও জনসংখ্যা জরিপের জন্য তহবিল অনুমোদন করেছে দেশটির মন্ত্রিসভা। যদিও কর্তৃপক্ষ বলছে, এই জরিপ ভারতের সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের ওপর চালানো হবে।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই আদমশুমারি ও জনসংখ্যা জরিপ চালানো এজন্য মোদি সরকার প্রায় চার হাজার কোটি রুপি বরাদ্দ করেছে। এছাড়া আরো প্রায় নয় হাজার কোটি রুপি ব্যয় হবে আদমশুমারি চালানোর জন্য।

কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি হবে একটি পূর্ণাঙ্গ জরিপ, অর্থাৎ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল রাজ্যের সব সাধারণ বাসিন্দার ওপর একযোগে এই জরিপ চালানো হবে।

সরকার বলছে, কোন নাগরিক যদি কোন এলাকায় অন্তত ছয় মাস বাস করে অথবা কোন নির্দিষ্ট এলাকায় ছয় মাস বা তার বেশি সময় বসবাসের পরিকল্পনা করে, তাহলে তাকে সাধারণ বাসিন্দা হিসেবে গণ্য করা হবে। এর মানে হচ্ছে এখন ভারতে বসবাসরত বিদেশিরাও এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের অন্তর্ভুক্ত হবেন।

কিন্তু সমালোচকেরা বলছেন, জরিপ চালানোর সময় কোন নাগরিক সম্পর্কে যদি কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়, তাকে প্রমাণ করতে হবে যে তিনি ভারতের নাগরিক। এর ফলে যে কোন নাগরিকের অ-ভারতীয় হিসেবে নথিভুক্ত হবার আশংকা থেকে যায় বলে মনে করেন সমালোচকেরা।

এর আগে গত আগস্টে আসাম রাজ্যে বিতর্কিত নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) বাস্তবায়ন করে সেখানকার বিজেপি শাসিত রাজ্য সরকার। এর উদ্দেশ্য ছিলো মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কায়দা করে বহিরাগত হিসাবে ঘোষণা করা। এটি বাস্তবায়িত হওয়ার পর দেখা যায় আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) থেকে বাদ পড়েছে ১৯ লাখের বেশি মানুষ। এদের মধ্যে বাঙালি হিন্দুর সংখ্যা ১০ থেকে ১২ লাখ। আর বাঙালি মুসলিম বাদ পড়েছেন দেড় থেকে দু’লক্ষ।

এই পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ার পর চলতি মাসের গোড়ার দিকে বিরোধী দলগুলোর চরম আপত্তি অগ্রহ্য করে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাস্তবায়ন করে মোদি সরকার। এ আইনের উদ্দেশ্য হলো, দেশে বহিরাগতক হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে ভারতের নাগরিক হিসাবে ঘোষণা করা, যাতে আগামী নির্বাচনে বিজেপির ভোট ব্যাংক আরোও শক্তিশালী হয়।

কেননা এই নতুন আইনে আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে আগত হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ ছয়টি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের সে দেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে ওই তিন দেশ থেকে আগত মুসলিমরা এই সুবিধা পাবেন না। এই বৈষম্যমূলক আইনটি পাশ হওয়ার পর থেকেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে গোটা ভারত। গত কয়েক দিনের বিক্ষোভে এ পর্যন্ত ৩০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেওবন্দ সমাবেশ থেকে মালাউন পুলিশ প্রশাসনকে মাহমুদ মাদানীর কঠোর হুঁশিয়ারি
পরবর্তী নিবন্ধশীতে কাহিল জনজীবন, বাড়ছে রোগের প্রকোপ