ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের প্রচার শুরুর প্রায় ১২ দিনের মধ্যেই ২ হাজার ৪৭২ টন লেমিনেটেড প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়েছে। পুরো নির্বাচনে পোস্টার থেকে বর্জ্য জমবে আড়াই হাজার টন। এগুলোসহ সব মিলিয়ে বছরজুড়ে ঢাকা শহরে প্রায় ১০ হাজার টন লেমিনেটেড পোস্টার বর্জ্য তৈরি হবে।
গত মঙ্গলবার দুপুরে লালমাটিয়ায় নিজেদের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরে এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন (এসডো)। বাংলাদেশে লেমিনেটেড পোস্টার, লিফলেট, স্টিকার ব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে ‘থার্মাল লেমিনেশন ফিল্মস : অ্যান ইনসিজিং হেল্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট হ্যাভক অব ঢাকা সিটি’ শীর্ষক সংস্থাটির একটি গবেষণায় ওই তথ্য উঠে এসেছে।
এসডোর গবেষণা মতে, ঢাকা শহরে ২০১৯ সালে ৭ হাজার ১৪৫ দশমিক ২ টন লেমিনেটেড প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়েছে। চলতি ২০২০ সালে আনুমানিক ১০ হাজার ৪৩৮ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হবে, যেগুলো পূর্ণ প্রক্রিয়াজাতকরণ সম্ভব নয়। এগুলো মানবস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।
সংবাদ সম্মেলনে এসডোর চেয়ারপারসন সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ বলেন, এসডো ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে নির্বাচনী প্রচারে লেমিনেটেড পোস্টার এবং অন্যান্য ‘প্লাস্টিক কোটেড’ পণ্য ব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে গবেষণা শুরু করে। তিনি বলেন, উচ্চ আদালত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে উৎপাদিত ও বিলি করা লেমিনেটেড পোস্টারের বর্জ্য যথাযথভাবে ব্যবস্থাপনার নির্দেশ দিয়েছেন। এসডো আশাবাদী, পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে এ ধরনের প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এসডো ঢাকা শহরের সম্ভাব্য লেমিনেটেড প্লাস্টিক বর্জের প্রধান ছয়টি উৎস ধরে গবেষণাটি চালায়। এর মধ্যে রয়েছে- ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচন, খবরের কাগজের সঙ্গে বিলি করা প্রচারপত্র, ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যলো, অমর একুশে বইমেলা, অন্যান্য বড় পরিসরের মেলা বা প্রদর্শনী, রেস্তোরাঁ, বিউটি পার্লার ও অন্যান্য বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনে বিতরণ করা লিফলেট।
এ বছর সিটি নির্বাচনে পদপ্রার্থীরা প্রচারের উদ্দেশ্যে আনুমানিক ৩০৪ মিলিয়ন প্লাস্টিক লেমিনেটেড পোস্টার ছেপেছেন। এছাড়া প্রচারে ব্যবহৃত স্টিকার, সাধারণ কার্ড, স্বেচ্ছাসেবকের পরিচয়পত্র তৈরিতেও লেমিনেটেড প্লাস্টিকের ব্যবহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, খবরের কাগজগুলোর সঙ্গে থাকা বিজ্ঞাপনী প্রচারপত্র থেকেই বছরে প্রায় ২২৭ টন বর্জ উৎপন্ন হয়। গবেষণাটিতে ১১টি প্রধান বাংলা ও ইংরেজি দৈনিক সংবাদপত্র বিবেচনা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ছিলেন এসডোর প্রধান টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজর অধ্যাপক আবু জাফর মাহমুদ, নির্বাহী পরিচালক সিদ্দীকা সুলতানা, নির্বাহী বিভাগীয় সদস্য শাহনাজ মনিরসহ এসডোর অন্য গবেষণা সদস্যরা।
সূত্র: আমাদের সময়