দেশ ও মানুষ নিয়ে ভাবনা

    0
    1106

    ১.

    পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কিছু বললে কেউ ক্ষিপ্ত হয় না, পেটাতেও নামে না। কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধে কিছু বললে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ ধেয়ে আসে কেন? এটি কি এজন্য নয় যে, তারা ভারতের দাস এবং কাজ করছে ভারতীয় স্বার্থের পাহারাদার রূপে?

    ২.

    ভারতে অতি অসভ্যদের শাসন চলছে। অসভ্যদের শাসনে আইনের শাসন থাকে না; থাকে গুম, খুন, ধর্ষণ ও সন্ত্রাসের রাজনীতি। ভারতে তাই মুসলিমদের বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও নাগরিকত্বহীন করে বহিষ্কারের চেষ্টা হচ্ছে। অসভ্যদের শাসন চলছে বাংলাদেশেও। তাই ভারতে অসভ্য শাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সরকার কিছুই বলছে না। যারাই প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নামছে তাদের বিরুদ্ধে হামলা হচ্ছে। নিজেদের যারা সভ্য রূপে দাবী করে তাদের এখন আওয়াজ তোলার সময়।

    ৩.

    মশামাছি কখনোই ফুলের উপর বসেনা, আবর্জনা খুঁজে। তেমনি দুর্বৃত্তরা রাজনীতির অঙ্গণে খুঁজে চোর-ডাকাত ও ভোট-ডাকাতদের দল। বাংলাদেশে দুর্বৃত্তদের সংখ্যাটি বিশাল। তাই শেখ হাসিনার ভোট-ডাকাত সরকারের লোকবলের অভাব হচ্ছে না।

    ৪.

    মিথ্যা বলা ও মিথ্যা নিয়ে বাঁচাটি কবিরা গুনাহ। বাঙালীর জীবনে বড় মিথ্যাটি হলো ১৯৭১’য়ে ৩০ লাখের মৃত্যু। এ গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য চাই সঠিক তালিকা। কিন্তু যাদের রাজনীতি মিথ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত তাদের মূল এজেন্ডা হলো মিথ্যাকে বাঁচিয়ে রাখা। কারণ মিথ্যা না বাঁচলে তাদের রাজনীতি বাঁচে না। এরাই জনগণকে বাধ্য করে মিথ্যা বলার কবিরা গুনাহতে। এরূপ কবিরা গুনাহর রাজনীতি বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে দেশে রাজাকারের তালিকা ও মুক্তিযুদ্ধাদের তালিকা হলেও একাত্তরে কতজন নিহত হলো -সে তালিকাটি বানানো হচ্ছে না।

    শেখ হাসিনার লক্ষ্য হলো, পিতার তিরিশ লাখের মিথ্যাকে যে কোন মূল্যে বাঁচিয়ে রাখা। শেখ হাসিনা জানে, একাত্তরে কতজন মারা গেছে সে তালিকাটি গ্রামে গ্রামে গিয়ে বানানো হলে প্রমাণিত হতো, তার পিতা কত বড় মিথ্যাবাদি ছিল সেটি। তখন শেখ মুজিব ইতিহাসে যুগ যুগ বেঁচে থাকতো বিশাল মাপের মিথ্যাবাদি রূপে। জাতিও জানতে পারতো তাদের তথাকথিত বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গপিতা কতবড় মিথ্যুক ছিল। শেখ হাসিনা এজন্যই তেমন একটি গণনা চায় না।

    ৫.

    সাহাবায়ে কেরামদের জান-মালের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগটি ছিল বিশাল মুসলিম রাষ্ট্র্রের প্রতিষ্ঠায়; মসজিদ-মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠায় নয়। অথচ আজকের মুসলিমদের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগটি হচ্ছে মুসলিম রাষ্ট্রকে ক্ষুদ্রতর করার কবিরা গুনাহতে। ১৯৭১’য়ে তেমন একটি কবিরা গুনাহতে বিশাল বিনিয়োগ ছিল বাঙালী মুসলিমদের। এবং সেটি ভারতীয় কাফেরদের অর্থ, অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ নিয়ে। বাঙালীদের সে বিনিয়োগে উপমহাদেশের মুসলিমগণ যেমন দুর্বল ও নিরাপত্তাহীন হয়েছে, তেমনি শক্তি বেড়েছে ভারতের। একাত্তরে যারা ভারতকে বিজয়ী করতে লড়েছিল এখন তাদেরই অনেকে লড়ছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের স্বার্থকে বাঁচিয়ে রাখায়। সেটি করছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নামে।

    প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কালে তেমন একটি কবিরা গুনাহতে মত্ত দেখা গেছে আরবদের। তাতে আরব ভূমি ২২ টুকরোয় বিভক্ত হয়েছে এবং তাতে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে ইসরাইল। সে পাপের কারণেই ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেন, লিবিয়া, ফিলিস্তিন ইতিমধ্যে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। বিভক্তিতে আযাব যে অনিবার্য -সেটি মহান আল্লাহতায়ালা সুরা আল-ইমরানের ১০৫ নম্বর আয়াতে সুস্পষ্ট ভাবে শুনিয়েছেন। মুসলিমগণ বিভ্ক্ত হয়ে এখন সেটিই প্রমাণ করছে।

    ৬.

    রাজাকারদের ইতিহাস হলো তারা কখনোই ভারতের দালালী করেনি। ভারতের দালালী কখনোই তাদের ধাতে সয়না। তাই ভারতের দালালদের রাজাকার বলাটি একাত্তরের ইতিহাস নিয়ে মূর্খতা। তেমন এক মুর্খতা হলো যারা ভারতের বিজয় বাড়াতে একাত্তরে যুদ্ধ করেছে সে ভারতসেবী গোলামদের রাজাকার বলা। অথচ বাংলাদেশে সে মুর্খতাটি প্রকট ভাবে হচ্ছে। এমনকি জামায়াত শিবিরের পক্ষ থেকেও হচ্ছে।

    ৭.

    বাংলাদেশে এখন ভারতের প্রতি অনুগত দাসদের সরকার। তাই ভারতের বিরুদ্ধে কিছু বললে এ দাসেরা মারতে ধেয়ে আসে। এ দাসেরাই আবরারকে হত্যা করেছে এবং ভিপি নূরুল হকসহ অনেককে আহত করেছে।

    ৮.

    পবিত্র কোর’আন জান্নাতের পথ দেখায়। তাই যারা কোর’আনের জ্ঞান থেকে দূরে থাকে তারা দূরে থাকে জান্নাতের পথ থেকে। কোর’আনের জ্ঞানহীনরা চলে জাহান্নামের পথে।

    ৯.

    কে কতটা মুসলিম রূপে বেড়ে উঠলো -মহান আল্লাহতায়ালার দরবারে সে বিষয়টির বিচার হবে। তার ভিত্তিতে জান্নাত বা জাহান্নাম মিলবে।  কে কতটা বাঙালী হলো সেদিন সেটির কোন গুরুত্বই থাকবে না।

    ১০.

    সেক্যুলার মুসলিমদের মূল আগ্রহটি ভাষা ভিত্তিক পরিচয় নিয়ে বেড়ে উঠায়। তাই সেক্যুলার বাঙালী মুসলিমদের মুসলিম পরিচয় নিয়ে কোন গর্ব নাই; তাদের গর্বটি বাঙালী রূপে বেড়ে উঠায়। অথচ আল্লাহর দরবারে সে পরিচয়ের কোন মূল্যই নাই। ঈমানের দায়ভার তো মুসলিম রূপে বেড়ে উঠায়।

    ১১.

    বিভক্তি আযাব আনে। এবং একতা বিজয় ও নিয়ামত আনে।  মুসলিমদের সংখ্যা ও সম্পদ যতই বৃদ্ধি পাক না কেন -তা দিয়ে আল্লাহর প্রতিশ্রুত আযাব, অপমান ও পরাজয় থেকে মুক্তি মিলবে না। অথচ যখন একতা ছিল তখন দরিদ্র মুসলিমও কম জনসংখ্যা নিয়ে বিশ্বশক্তিতে পরিণত হয়েছে।

    ১২.

    “যে ব্যক্তির জীবনে পর পর ২টি দিন আসলো অথচ তার জ্ঞানের ভান্ডারে কোন নতুন জ্ঞান যোগ হলো না তার জন্য বিপর্যয়।”- হাদীস।

    ১৩.

    ডাকাতদের গর্ব তাদের সর্দারকে নিয়ে। কারণ সে ডাকাতির নতুন নতুন পথ দেখায়। আওয়ামী চোর-ডাকাত ও ভোট-ডাকাতদের গর্বও শেখ হাসিনাকে নিয়ে। আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের ও অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতাদের ভাষণে তো সেটিই ফুটে উঠলো।

    ১৪.

    নেক কাজে সফলতা আসে আল্লাহতায়ালার রহমতের ফলে। আর ছওয়াব জুটে শুধু নেক নিয়তে, মেধা, মেহনত, অর্থ, সময় তথা নিজ সামর্থ্যের বিনিয়োগে।

    সূত্র: এখন /ফিরোজ মাহবুব কামাল

    মন্তব্য করুন

    দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
    দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

    পূর্ববর্তী নিবন্ধবিপর্যয়ের মুখে উইঘুর জাতিসত্তা
    পরবর্তী নিবন্ধসম্পাদকীয় || ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি : গাজওয়াতুল হিন্দের ডঙ্কা? [Video]