নাগরিক অধিকার নিয়ে যে কোন আন্দোলনে একবার হলেও রাজপথে দেখা যায় দেবজ্যোতি মিশ্রকে। অনেকে তাকে বুদ্ধিজীবি হিসেবেই জানেন।
এবার উত্তরপ্রদেশে শ্রমিকদের গায়ে কীটনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করার ঘটনার কড়া ভাষায় নিন্দা করলেন সেই দেবজ্যোতি মিশ্র। তিনি করোনার এই সংকটময় মুহূর্তে ইঙ্গিতপূর্ণ ভাষায় বলতে চেয়েছেন, করোনার চেয়েও ভয়ঙ্কর যোগী আদিত্যনাথের কাজকর্ম।
তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের একাউন্টে লিখেছেন, ‘মাফ করবেন, সত্যি বলছি কবিতা গান সিনেমা টিনেমা থিয়েটার ফিয়েটার কমিউনিজম ফমিউনিজম .. ফটো চ্যালেঞ্জ ট্যালেঞ্জ পুরো আ# বা# লাগছে!!’ এরপরেই তিনি যোগীকে করোনার চেয়েও ভয়ঙ্কর বলতে চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই আমরা বেঁচে আছি!! করোনা নয় রে দোস্ত! যোগী সরকার কি করছে দেখছেন.. !!!!!
ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘রাস্তার একপাশে মাটির উপর উবু হয়ে বসে রয়েছেন একদল মানুষ। পিঠ থেকে ব্যাগপত্র পর্যন্ত নামানোর সুযোগ পাননি তাঁরা। সেই অবস্থাতেই তিন দিক থেকে তাঁদের উপর নির্বিচারে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। যে স্বাস্থ্যকর্মীরা জীবাণুনাশক স্প্রে করছেন, বিশেষ পোশাকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঢাকা রয়েছে তাঁদের। কিন্তু পরনের জামাটুকু ছাড়া আর কোনও সুরক্ষার আবরণ নেই মাটিতে বসে থাকা মানুষগুলির শরীরে। জীবাণুনাশকে ভিজতে ভিজতেই কেউ রুমালে মুখ ঢেকে রেখেছেন। কেউ আবার নিজে ভিজছেন, কিন্তু হাত বাড়িয়ে বাচ্চার চোখ দু’টি ঢেকে রেখেছেন, যাতে জীবাণুনাশক কোনও ভাবে তার চোখে প্রবেশ না করে।’
একইসঙ্গে তিনি আরো লিখেছেন, ‘নোভেল করোনাভাইরাসের আতঙ্কে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হতদরিদ্র শ্রমিকরা যখন ঘরে ফেরার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন, ঠিক সেইসময় সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগীর রাজ্য থেকে এমনই ঘটনা সামনে এল। ঘরে ফেরা শ্রমিকদের জীবাণুমুক্ত করতেই এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে রাজ্য সরকারের তরফে যদিও সাফাই দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গোটা ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সরকার। তাদের বিরুদ্ধে ‘অমানবিক’ আচরণের অভিযোগ তুলেছেন সোশ্যাল এক্টিভিস্ট ও রাজনীতিকদের একাংশ। সূত্র- কলকাতা ২৪X৭।
সম্প্রতি বরেলীর একটি চেকপয়েন্টের কাছে এই ঘটনা ঘটে। জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বাসে চেপে দিল্লি, হরিয়ানা এবং নয়ডা থেকে ওই সমস্ত নিম্ন আয়ের মানুষ ফিরেছিলেন। কিন্তু বাস থেকে নামতেই বাড়ি ফিরতে দেওয়া হয়নি তাঁদের। বরং মহিলা, শিশু সমেত ওই শ্রমিকদের রাস্তার এক পাশে উবু হয়ে বসিয়ে দেওয়া হয়। পিঠের ব্যাগপত্রও নামানোর সুযোগ দেওয়া হয়নি তাঁদের। শুরু হয় বিষ মেশানো পানির স্প্রে তাদের উপর।