মহানবী হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) ও উম্মুল মু’মিনিন হযরত আইশা (রাঃ) কে নিয়ে সম্প্রতি আপত্তিকর মন্তব্য করে হিন্দুত্ববাদী ভারতের দুই উগ্রবাদী নেতা। এরই জের ধরে ভারত সহ মুসলিম বিশ্ব জুড়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করছেন নবী প্রেমী মুসলিমরা। তবে ভারতের উত্তর প্রদেশ ও মধ্য প্রদেশে যারা এধরণের বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন তাদের বাড়িঘর ভেঙ্গে দিচ্ছে হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন। এছাড়াও গোটা দেশজুড়ে চলছে প্রশাসন কর্তৃক ব্যাপক ধরপাকড় ও হতাহতের ঘটনা।
আঞ্চলিক সূত্রে জানানো হয়, জবরদখলকৃত কাশ্মীরেও চলছে নিরিহ মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঢালাও গ্রেপ্তার অভিযান। সেখানে এক মুসলিম তরুণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করলে, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। উগ্র হিন্দুত্ববাদী এই দেশটির বেশ কয়েকটি রাজ্যেই গত কয়েক দিন ধরেই মুসলমানদের বাড়িঘর ভঙ্গচুর এবং প্রতিবাদকারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ধরপাকড় চলছে। এমনকি কয়েকটি জায়গায় উগ্র হিন্দুরা ও হিন্দুত্ববাদের রক্ষক হিন্দুত্ববাদী পুলিশ-প্রশাসন যৌথভাবে বিক্ষোভকারীদের উপর হামলা চালাচ্ছে।
সংবাদ মাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, উত্তর প্রদেশের (যোগীর রাজ্য) পুলিশ গত রবিবার পর্যন্ত তিনশ’র বেশি মুসলিমকে গ্রেপ্তার করেছে। উত্তর প্রদেশের উগ্র হিন্দুত্ববাদী মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসনকে বিক্ষোভ দমনে যে কোনও ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করতে বলেছে। বিশেষ করে বিক্ষোভকারী মুসলিম নেতা ও নেতৃস্থানীয় মুসলিমদের বাড়িঘরও গুঁড়িয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে এই উগ্র সন্ত্রাসী হিন্দু নেতা।
ইতিমধ্যে অনেক মুসলিমের বাড়িঘর পুলিশের উপস্থিতিতে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। যাদের মাঝে একজন হচ্ছেন মুসলিম অধিকার আন্দোলনকর্মী আফরিন ফাতিমা। তাঁর বাড়ি ভেঙ্গেই ক্ষান্ত থাকেনি হিন্দুত্ববাদী যোগী প্রশাসন, এসময় তাঁর বাবাকে কারাগারে বন্দী করেছে তারা। এবং তাঁর মা ও ছোট বোনকে জিজ্ঞাসার নামে থানায় আটকে রাখা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, সেখানে তাদেরকে অশালীন মন্তব্য ও নির্যাতন করছে হিন্দুত্ববাদী পুলিশ।
ঐদিন রাজ্যটির আরও দুই নেতৃস্থানীয় মুসলিম বাসিন্দার বাড়িও প্রশাসন ভেঙ্গে দিয়েছে। এভাবেই বিক্ষোভ দমনের নামে রাজ্যটিতে ব্যপকহারে মুসলিমদের বাড়িঘর ভেঙে দেওয়া হচ্ছে, শত শত মুসলিমকে বন্দী করা হচ্ছে।
গত শুক্রবারের জুমার নামাজের পর ভারতের অন্তত ৯টি রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বিশাল বিশাল প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন দেশটির নবী প্রেমী মুসলমানরা। এসব প্রতিবাদ বিক্ষোভ দমনে অনেক মুসলিমকে গুলি করে হত্যা ও আহত করে হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন। সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধু ঝাড়খণ্ডের রাঁচি এলাকাতেই বিক্ষোভকারীদের দমন করতে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় হিন্দুত্ববাদী পুলিশ। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ২ জন মুসলিম যুবক শহীদ হন, আহত হন ১৫ জনেরও বেশী। আহতদের কারো কারো শরীরে ৫-৬টি করেও গুলি লেগেছে।
মিডিয়ায় যখন হতাহতের সংবাদগুলো প্রকাশ হতে শুরু করে, তখন হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় এবং বিভিন্ন এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে চালায় ধরপাকড় ও হত্যাযগ্য। এর লক্ষ্য ছিলো, যাতে এসব সংবাদ মুহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে না পড়ে এবং সাহায্যের জন্য কেউ আগিয়ে আসতে না পারে।
উল্লেখ্য, কুখ্যাত শাতেমে রাসূল ‘নূপুর শর্মা’ ক্ষমতাশীন উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির মুখপাত্র। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে নিয়ে তার করা অবমাননাকর মন্তব্যের জেরেই ভারতজুড়ে ও ভারতের বাইরে প্রধানত মুসলিম দেশগুলোতে প্রতিবাদের ঝড় বয়ে যাচ্ছে। আফগানিস্তান সহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশ অবমাননাকর এসব মন্তব্যের জন্য ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে বলেছে, অনেকে ভারতীয় দূতকে তলব করেছে। কোথাও কোথাও ভারতীয় পণ্য বর্জনের দাবিও উঠেছে।
তবে বিশ্লেষকদের যে বিষয়টি অবাক করেছে তা হল, এতো কিছুর পরেও নিরবতার ভূমিকা পালন করছে ৯০% এরও অধীক মুসলিম জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশ নামক দেশের দালাল আওয়ামী সরকার। দলটিকে অবশ্য সিংহভাগ মুসলিমই মনে করেন ভারতীয় ইশারায় চলা একটি সংগঠন, যারা হিন্দুত্ববাদী ভারতের গুণকীর্তন গাওয়া এবং তোষামোদি ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না।
প্রতিবেদক : আলী হাসনাত
তথ্যসূত্র :
১। মহানবী (সা:) কে কটূক্তির জেরে বিক্ষোভকারীদের বুলডোজার দিয়ে শায়েস্তা!
– https://tinyurl.com/2p93dk9k
২। মুসলমানের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিলো ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী, ৩০০ গ্রেপ্তার
– https://tinyurl.com/4v3dnd93
ইংশায়াল্লাহ এই কুলাজ্ঞার গুলোর পতন হবে।